ঢাকা, বৃহস্পতিবার   ২৮ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৩ ১৪৩১

সিসিসিকে ভোক্তাবান্ধব নগরী করতে ক্যাবের স্মারকলিপি 

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ১১:১১ পিএম, ৯ মার্চ ২০২১ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:১৩ পিএম, ৯ মার্চ ২০২১ মঙ্গলবার

চট্টগ্রাম নগরীকে বসবাসযোগ্য ও ভোক্তাবান্ধব নগরীতে পরিণত করতে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র আলহাজ্ব রেজাউল করিমের কাছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ ১২ দফা সুপারিশমালা সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করেছেন।  ৯ মার্চ চট্টগ্রাম সিটিকরপোরেশন নগর ভবনে মেয়র কার্যালয়ে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইনের নেতৃত্বে স্মারকলিপি প্রদানকালে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন,ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সভাপতি এম নাসিরুল হক, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদৌস, চান্দগাঁও থানার সভাপতি মো. জানে আলম, কর্নেলহাট থানা সভাপতি ডাঃ মাসবাহ উদ্দীন তুহিন, সদরঘাট থানার সভাপতি শাহীন চৌধুরী, ক্যাব জামালখানের সভাপতি সালাহ উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক নবুয়াত আরা সিদ্দিকী, সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল চৌধুরী, ক্যাব পাঁচলাইশের সাধারন সম্পাদক সেলিম জাহাঙ্গীর, ক্যাব কোতোয়ালীর আবদুল হালিম দোভাষ, ক্যাব যুব গ্রুপের সমন্বয়ক চৌধুরী জসিমুল হক, ক্যাব এফসি তাজমুন্নাহার হামিদ, প্রকল্প কর্মকর্তা শম্পা কে নাহার প্রমুখ। মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ক্যাব চট্টগ্রাম কর্তৃক উপস্থাপিত ১২ দফা প্রস্তাবনার মধ্যে আছে, নগরীতে ভেজালমুক্ত খাদ্য, পণ্য, শাক-শবজি, ফলমুল, মাছ, মাংশ নিশ্চিত করতে সিটি কর্পোরেশনের নজরদারি জোরদার করা, স্বাস্থ্য বিভাগের আওতায় স্যানিটারী ইনেসপেক্টদের নগরীর খাদ্য-পণ্যের দোকানগুলি নিয়মিত পরিদর্শন করা, পশু জবাই করার পূর্বে ভেটেনারী সার্জন কর্তৃক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা নিশ্চিত করা। নগরীর বাজারগুলির নোংরা, অস্বাস্থ্যকর ও পরিবেশ উন্নত করা, স্লাটার হাউজ গুলির পরিস্কার, পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্য সম্মত নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করা, যত্রতত্র ফুটপাত ও রাস্তায় খাবারের দোকান, হোটেলগুলির খাবার বিক্রি বন্ধ করা। চট্টগ্রাম সিটিকর্পোরেশন এর আওতাধীন ১৭টি বাজারগুলিকে নিয়মিতভাবে নিত্যপণ্যের বাজার দর মনিটরিং, সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর, পুলিশ, চেম্বার, ক্যাব প্রতিনিধি, সাংবাদিক প্রতিনিধি সমন্বয়ে বাজার ভিত্তিক মনিটরিং কমিটি গঠন করা। 

মশক নিধন কর্মসূচিকে নাগরিক পরীবিক্ষনের আওতায় আনা, ভোর হবার পুর্বেই রাস্তার পার্শ্বের ডাস্টবিনগুলির ময়লা পরিস্কার নিশ্চিত করা, নগরীর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নাগরিক তদারকি ও নজরদারির আওতায় আনা। নালার উপর দোকান, অবৈধ স্থাপনা, নালা-নর্দমগুলি ঠিকমতো পরিস্কার করা, বাড়ী ঘর তৈরিতে পর্যাপ্ত ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাখার নিশ্চিত করা। উন্নত রাষ্ট্রগুলির আদলে বৃষ্টি বাদল হলেই পানি নিস্কাষনের প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম কেনার উদ্যোগ নেয়া। চট্টগ্রাম নগরীতে যানজট নিরসনে যত্রতত্র পাকিং, গণপরিবহনের সংখ্যা বৃদ্ধি, গণপরিবহনগুলির অব্যবস্থাপনা দূর, নগরে যাত্রী পরিবহনে মেট্রো রেল চালু, আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবনগুলিতে পার্কিং সুবিধা নিশ্চিত করা, লক্কর যক্কর বাস ও গণপরিবহন গুলির আধুনিকায়ন, ট্রাফিক বিভাগ ও বিআরটিএর সাথে সৃষ্ট সমম্বয়, পর্যাপ্ত বাসস্ট্যান্ড তৈরির উদ্যোগ নেয়া। 

নগরীতে বাড়ী ভাড়া বিঢম্বনার রোধে সিটিকর্পোরেশন এর কাউন্সিলরদের মাধ্যমে স্থানীয় ভাবে বাড়িভাড়া নিয়ে জটিলতা নিরসনে সালিশী বোর্ড গঠন করা, এলাকা অনুযায়ী বাড়ি ভাড়ার তালিকা তৈরি করা এবং সীমিত আয়ের ভাড়াটিয়াদের দীর্ঘ মেয়াদী কিস্তির ভিত্তিতে বহুতল ভবন ও ফ্লাট তৈরি করে আবাসনের ব্যবস্থা গ্রহন করা। সিটিকর্পোরেশন নিজস্ব উদ্যোগে আরো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও নগরীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির গুনগত মান নিশ্চিত করতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়, জেলা প্রশাসনকে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে মানসস্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা। নগরীর সকল বাড়ী, স্থাপনার তালিকা হালনাগাদ ও ডাটাবেস করা, হোল্ডিং ট্যাক্স নিয়ে ভোগান্তি নিরসনে ত্রিপাক্ষিক গণশুনাণীর আয়োজন করা। নগরীতে যথেষ্ঠ পায়ে হাটার পথ যা ওর্য়াকওয়ে নিশ্চিত করার জন্য ফুটপাতগুলি হর্কারসদের দখলমুক্ত, রাস্তা বা মার্কেটগুলির সামনের অংশে হকার্সদের বসানো বন্ধ করে নগরীর সৌন্দয্য বৃদ্ধি করা, হকার্সদের বিকল্প পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে। প্রয়োজনে নগরীর উন্মুক্ত স্থানে হলিডে মার্কেট স্থাপন ও ভাসমান হকার্সদের স্থায়ী পুনর্বাসন করা। 

সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভোক্তা অধিকার বিষয়ে ছাত্র/ছাত্রী, অভিভাবক ও শিক্ষক/শিক্ষিকা এবং সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন বাজারগুলিতেও সর্বসাধারনকে ভোক্তা অধিকার, নিরাপদ খাদ্য ও ব্যক্তিগত পয়ঃ প্রনালী বিষয়ে গণসচেতনতা ও শিক্ষা মুলক কর্মসুচির আয়োজন করা। সরকারী প্রশাসন ও সেবাদানকারী সংস্থায় ভোক্তাদের প্রতিনিধিত্ব  বিশেষ করে গ্যাস, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, টিএন্ডটি, হাসপাতাল, সিডিএ, রেল, বিআরটিএ, কারা পরিদর্শক, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সকল সংস্থা গুলিতে মনোনিত প্রতিনিধিরা প্রাহক স্বার্থ বা জনস্বার্থ রক্ষায় জাতীয় ও আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত ভোক্তা সংগঠনের প্রতিনিধিকে অর্ন্তভুক্ত করা। নগরে সেবাদানকারী সরকারী সেবাদানকারী সংস্থাগুলির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত ও তাদের প্রশাসনিক এবং আর্থিক জবাবদিহিতাকে নাগরিক পরীবিক্ষনের আওতায় আনা। গ্যাস, পানি, বিদ্যুত, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাড়ীভাড়া, হোর্ল্ডিং ট্যাক্স, গণপরিবহন, বজ্য ও নগর ব্যবস্থাপনা, শিল্প এবং বানিজ্য ইত্যাদি বিষয়ে নাগরিক ভোগান্তি নিরসনে গ্রাহক, সেবাদানকারী সংস্থা ও ভোক্তা প্রতিনিধি, জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে ত্রিপাক্ষিক গণশুনাণীর ব্যবস্থা করা।
কেআই//