কেজিতে ৫ টাকা কমলো পেঁয়াজের দাম
হিলি (দিনাজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:৪১ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২১ রবিবার
দেশীয় পেঁয়াজের সরবাহ কম ও দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানির পরিমাণ বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা। এতে একদিনের ব্যবধানে সবধরনের পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৪/৫ টাকা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে আসন্ন রমজান মাসে দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বাড়ার কোনও সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন বন্দরের আমদানিকারকরা।
পেঁয়াজের সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির অজুহাতে গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে ভারত। সম্প্রতি পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়ায় এবং ভারত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করলে সাড়ে ৩ মাস বন্ধের পর গত ২ জানুয়ারী থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়। পেঁয়াজ আমদানিতে শুল্ক আরোপ ও দেশীয় পেঁয়াজের দাম কমের কারণে লাভ কম থাকায় ২৭ জানুয়ারী থেকে আবারও পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি আবারও দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কম ও দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় ৪ মার্চ থেকে আমদানি শুরু হয়।
এ বিষয়ে হিলি স্থলবন্দরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ৩৬ দিন বন্ধের পর বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হলেও প্রথম দিকে আমদানির পরিমাণ কম ছিল। বর্তমানে শবেবরাত ও রমজান উপলক্ষ্যে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। আমদানি বাড়ায় পেঁয়াজের দামও কমতে শুরু করেছে। দুদিনের ব্যবধানে সবধরনের পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ৪/৫ টাকা। বর্তমানে বন্দরে ইন্দোর জাতের পেঁয়াজ পাইকারিতে (ট্রাকসেল) ৩০/৩১ টাকা করে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ২৫ থেকে ২৬ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নাসিক জাতের পেঁয়াজ ৩৬/৩৭ টাকা থেকে কমে ৩২/৩৩ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে সাউথের নতুন জাতের পেঁয়াজ।
নওগা থেকে পেঁয়াজ কিনতে আসা আব্দুর রউফ বলেন, বেশ কিছুদিন পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের কারণে আমরা পাইকাররা হিলিতে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। সম্প্রতি আবারও পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে, যে কারণে হিলি স্থলবন্দরে এসেছি পেঁয়াজ কিনতে। আগের চেয়ে পেঁয়াজ আমদানি বাড়ার কারণে দামও আগের তুলনায় কমেছে।
হিলি স্থলবন্দরের শ্রমিক সাইদল ইসলাম ও লুৎফর রহমান জানান, বেশ কিছুদিন ধরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি কমে যাওয়ার কারণে আমাদের আয় রোজগারও কমে গিয়েছিল। গত দুদিন ধরে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি পূর্বের তুলনায় বাড়ার কারণে আমাদের কাজ বেড়েছে, যার ফলে আয় বাড়ায় পরিবার পরিজন নিয়ে ভালোভাবে চলতে পারছি।
হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক শাহিনুর রেজা বলেন, দেশীয় কৃষকের উৎপাদিত পেঁয়াজের মূল্য নিশ্চিতে পেঁয়াজের উপর আমদানি শুল্ক আরোপ ও আমদানির আইপি প্রদান স্থগিত রাখা এবং পেঁয়াজ আমদানি করে লোকশানের কারণে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছিলেন আমদানিকারকরা। সম্প্রতি মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে দেশের বাজারে দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ কম হওয়ার কারণে মূল্য ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় পূর্বের আইপির বিপরীতে আমদানিকারকগণ ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু করেছেন। দেশের বাজারে চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমদানির পরিমাণ বাড়িয়েছেন আমদানিকারকরা। এতে করে পেঁয়াজের দামও কেজি প্রতি ৪/৫ টাকা করে কমে গেছে। তবে পেঁয়াজ আমদানির জন্য আইপি প্রদানের বিষয়টি শিথিল ও সহজ করা হলে বন্দর দিয়ে পেঁয়াজের আমদানি আরও বাড়বে। এতে করে আসন্ন রমজানে দেশে পেঁয়াজের মূল্য স্থিতিশীল থাকবে বলেও জানান তিনি।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি আগের তুলনায় বেড়েছে। আগে যেখানে ২/৩ ট্রাক করে পেঁয়াজ আমদানি হতো, সেখানে গত বৃহস্পতিবার বন্দর দিয়ে ৭টি ট্রাকে ১৭৯ টন এবং শনিবার ২৫টি ট্রাকে ৬৮৬ টন পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। আজ রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত বন্দর দিয়ে ১২ ট্রাক পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে। পেঁয়াজ আমদানির সাথে সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে সুষ্ঠুভাবে সরবরাহের নিমিত্তে দ্রুততার সাথে খালাসের ব্যবস্থা নিয়েছে বন্দর কতৃপক্ষ।
এনএস/