শাল্লায় ভাঙচুরের ঘটনায় প্রধান আসামি আটক
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি:
প্রকাশিত : ১২:৪১ পিএম, ২০ মার্চ ২০২১ শনিবার
সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় প্রধান আসামি আলোচিত ইউপি সদস্য ও যুবলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে (স্বাধীন মেম্বার) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এদিকে এ মামলার আরও সাত আসামিকে দিরাই ও শাল্লা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার (১৯ মার্চ) রাত ৩টার দিকে মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া থেকে স্বাধীনকে গ্রেফতার করা হয় বলে নিশ্চিত করেন পিবিআই সিলেটের পুলিশ সুপার মো. খালেদ উজ জামান। আর শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক বলেন, শুক্রবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মামলার সাত আসামিকে গ্রেফতার করেছে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত এ মামলার ৩০ আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এদের মধ্যে ২২ জনকে শুক্রবার রাতে আদালতে হাজির করলে আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে সুনামগঞ্জ জেলহাজতে পাঠান। বাকি সাত আসামি শাল্লা থানা হাজতে রয়েছে। আর প্রধান আসামি শহীদুল ইসলাম স্বাধীনকে সিলেট থেকে নিয়ে আসা হচ্ছে শাল্লায়। শাল্লা থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আগামীকাল সুনামগঞ্জ আদালতে তুলা হতে পারে।
এদিকে মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেফতার করায় নোয়াগাও গ্রামবাসীর মধ্যে আরও বেশি স্বস্তি ফিরে এসেছে।
১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দুদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার পর থেকেই হামলাকারী হিসেবে ওঠে আসে স্বাধীন মেম্বারের নাম। হামলার পরদিন স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়েরকৃত মামলায়ও স্বাধীন মেম্বারকে আসামি করা হয়।
শহীদুল ইসলাম স্বাধীনের বাড়ি শাল্লার পার্শ্ববর্তী দিরাই উপজেলার নাচনি গ্রামে। তিনি স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে এক যুবকের দেওয়া স্ট্যাটাসের জেরে ১৭ মার্চ শাল্লার নোয়াগাঁওয়ে হামলার ঘটনা ঘটে। অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হাজারও লোক মিছিল নিয়ে এসে এই হামলা চালায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলাকারীদের বেশির ভাগই আসে স্বাধীনের গ্রাম দিরাইয়ের নাচনি থেকে। স্বাধীন মেম্বারও হামলাকারীদের দলে ছিলেন। তার উপস্থিতিতেই হামলা হয়।
স্বাধীন মেম্বারের সঙ্গে জলমহাল নিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামবাসীর বিরোধ রয়েছে। এই বিরোধের জেরে মামুনুল অনুসারীদের সঙ্গে তিনি এই হামলায় অংশ নেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দের। বাড়িঘর ভাঙচুর হওয়া একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপেই স্বাধীন মেম্বারের নাম ওঠে আসে।
গত ১৫ মার্চ দিরাইয়ে সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক। পরদিন মামুনুলের সমালোচনা করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন নোয়াগাঁওয়ের এক যুবক। এই স্ট্যাটাসের জেরে হিন্দু-অধ্যুষিত ওই গ্রামটিতে হামলা চালিয়ে ৮৮ টিরও বেশি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।
আরকে//