ঢাকা, বুধবার   ০৬ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২১ ১৪৩১

সুন্দরবনে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ রক্তাক্ত ৫

মোংলা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:১৫ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২১ শনিবার

মোংলায় পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় নারীসহ ৫ জন রক্তাক্ত জখম হয়েছে। শুক্রবার (২৬ মার্চ) রাতে এ ঘটনার পর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাৎক্ষণিক দুইজনকে এবং শনিবার (২৭ মার্চ) সকালে আরও একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতদের স্বজনেরা জানান, উপজেলার সুন্দরবন ইউনিয়নের গোড়া বাঁশতলা এলাকার সোবাহান হাওলাদারের সঙ্গে একই এলাকার রোকা মিয়ার মধ্যে পূর্ব শত্রুতার জেরে বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জেরে সোবাহান হাওলাদার (৬৫) ও তার ছেলে ইয়াছিন হাওলাদার (৪০), ফারুক হাওলাদার (৩৮) এবং জামাই খোকন শেখ (৩২) শুক্রবার রাতে রোকা মিয়ার (৫৫) ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। 

এসময় রোকা মিয়ার ডাক চিৎকারে তার স্ত্রী সেলিনা বেগম (৪০), ভাই হালিম (৪০), ভাইপো কামরুল (৩৫) ও কামরুলের স্ত্রী কুলসুম বেগম (২৫) ছুটে এলে তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে সোবাহান গংরা। 

পরে আহতদেরকে তাদের আত্মীয়স্বজন উদ্ধার করে রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। আহতদের মধ্যে রোকা মিয়া ও হালিমের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে সঙ্গে সঙ্গে খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে প্রেরণ করে কর্তৃপক্ষ। 

এদিকে হাসপাতালে ভর্তি থাকা কামরুলকে শনিবার সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুমেক হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ শাহানা মোরশেদ বলেন, শুক্রবার রোকাসহ যে ৫ জনকে হাসপাতালে আনা হয় তাদের মধ্যে দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাৎক্ষণিক খুলনায় পাঠানো হয়েছে। কারণ তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ধারালো অস্ত্রের মারাত্মক আঘাত রয়েছে এবং প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। বাকীদের হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। এরমধ্যে আরও একজনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার সকালে তাকেও খুলনায় পাঠানো হয়েছে।

প্রতিপক্ষের হামলা গুরুতর আহত রোকা মিয়ার বড় ভাই আব্দুল জলিল বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে একই এলাকার সোবাহানের বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জেরে আমার দুই ভাই, এক ভাবী, ছেলে ও ছেলের বউকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে মারাত্মক জখম করেছে সোবাহান গংরা। আহত ৫ জনের মধ্যে তিনজনকে খুলনায় পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে জানান তিনি। 

আব্দুল জলিল অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় সোবাহানের বিরুদ্ধে নানা অসামাজিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া সোবাহানের ছেলে ফারুক ও জামাই খোকনের বিরুদ্ধে সুন্দরবনে দস্যুতার অভিযোগও রয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, তারা এখন সুন্দরবন ছেড়ে লোকালয়ের বাড়ি ঘরে ডাকাতি করছে। ভয়ে তাদেরকে কেউ কিছু বলতে পারেনা।

এ বিষয়ে সোবাহান হাওলাদার বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমাদের মধ্যে জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জেরে শুক্রবার উভয়পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তবে এতে দুই পক্ষের লোকজনই আহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তিনি।
 
মোংলা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: ইকবাল বাহার চৌধুরী বলেন, এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। অভিযোগের তদন্ত শেষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এনএস/