মিয়ানমারে অভ্যুত্থানের পর নিহত ৪৫৯ জন ছাড়িয়েছে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩৬ এএম, ৩০ মার্চ ২০২১ মঙ্গলবার
মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এ পর্যন্ত ৪৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে ২ হাজার ৫৫৯ জন। নিহতদের মধ্যে শিশু-নারী থেকে শুরু করে শিক্ষক-যুবকরাও আছেন।
সোমবার (২৯ মার্চ) বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার প্রতিবেদন থেকে এমনটাই জানা গেছে।
রাজনৈতিক বন্দিদের সহযোগিতা সংক্রান্ত সংস্থার ‘এএপিপি’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গেল ২৭ মার্চের তাণ্ডবে পাইগিই দাগুন শহরতলীতে ৬০টি ঘর পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যখন সামরিক জান্তার সশস্ত্র বাহিনী এসব ঘরে আগুন দেয় তখন তারা আগুন নেভাতে বাধাও দেয় স্থানীয়দের।
২৮ মার্চ পর্যন্ত সামরিক জান্তা সরকার ২ হাজার ৫৫৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। তার মধ্যে ৩৭ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। গেল কয়েকদিনের আন্দোলন, বিক্ষোভ, ধরপাকড় ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে জঙ্গলে আশ্রয় নিয়েছে। ৩ হাজারের অধিক মানুষ মিয়ানমারের সীমান্ত পাড়ি দিয়ে থাইল্যান্ডে শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে।
গত শনিবার ২৭ মার্চ ছিলো মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী দিবস। সেদিন রাজধানী নেপিদোতে সেনা কুচকাওয়াজের পরপরই সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে চলমান বিক্ষোভে চরম দমনপীড়ন চালানো হয়। রয়টার্স জানিয়েছে, একদিনেই নিহত হয় ১১৪ জন। শুধু মান্দালয় শহরেই শিশুসহ অন্তত ৪০ জন ও ইয়াঙ্গুনে ২৭ জন নিহত হন। বিক্ষোভ চলাকালীন এদিনই সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন পার করেছে মিয়ানমার।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দুই মাস আগে ফেব্রুয়ারির ১ তারিখে অভ্যুত্থানের পর শনিবারেই এক দিনে সবচেয়ে বেশি বিক্ষোভকারীর মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে গত ১৪ মার্চ নিহত হয়েছিল ৯০ জন। ৩ মার্চ সামরিক বাহিনীর হামলা ও গুলিতে নিহত হয়েছিল ২৫ জন। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৮ জন ও ২০ ফেব্রুয়ারি ২ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
গেল ১৯ ফেব্রুয়ারি সামরিক সরকার বিরোধী বিক্ষোভে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় ১ জনের মৃত্যু হয়। সেটা ছিল অভ্যুত্থানের পর প্রথম মৃত্যু।
এরপর ক্রমেই দানা বাধে জান্তা সরকার বিরোধী আন্দোলন। তার সঙ্গে কঠোর হয় জান্তা সরকারও। তাদের সশস্ত্র বাহিনীর হামলা ও দমন-পিড়নের ঘটনায় বাড়তে থাকে মৃত্যুর মিছিলও।
গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় এনএলডির নেতা অং সান সু চিসহ তাঁর দলের শীর্ষ নেতাদের। সেই থেকে শহর-নগরগুলোয় সেনাশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।
এএইচ/এসএ/