ভারতের লুক ইস্ট নীতির প্রথম লক্ষ্য বাংলাদেশ : পীযূষ গোয়াল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:০৩ এএম, ২ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার
ভারতের রেল, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী পীযূষ গোয়াল বলেছেন, বিশ্বস্ত বন্ধু, প্রতিবেশী ও সহযোগী হিসেবে ভারতের লুক ইস্ট নীতির প্রথম লক্ষ্য হবে বাংলাদেশ।
গত কয়েক বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশের সঙ্গে একটি সার্বিক অংশীদারিত্ব আশা করে।
তিনি বলেন, বর্তমানে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ‘অত্যন্ত গতিশীল, প্রাণবন্ত ও শক্তিশালী’। কারণ এই সম্পর্ক ইতিহাস ও সাংস্কৃতিক বন্ধন এবং উভয় দেশের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভারতের মন্ত্রী এ সব কথা বলেন।
ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইমরান বিশিষ্ট অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে স্বাগত বক্তৃতা দেন। এসময় কূটনীতিক, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের অংশগ্রহণকারী, স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
অর্থনৈতিক খাতে বাংলাদেশের কর্মক্ষমতা এবং মধ্য আয়ের দেশে রূপান্তরের প্রশংসা করে পীযূষ গোয়াল বলেন, গণতন্ত্রের প্রতি অদম্য সমর্থন, জনগণের কঠোর পরিশ্রম এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্বের কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বাংলাদেশের অগ্রগতি অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক, যদিও ৫০ বছর একটি জাতির অগ্রগতি অর্জনের জন্য দীর্ঘ সময় নয়। কারণ ১৯৪৭ সালে এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশটি দুই দফা অস্থিরতার সম্মুখীন হয়েছে।
দুই দেশের আরও অগ্রগতির জন্য বিশ্বস্ত বন্ধু বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে পীযূষ আশা করেন বাংলাদেশ ও ভারত উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে তাদের ১০০ বছরের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন উদযাপন করতে সক্ষম হবে।
ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের লক্ষ্যে আজীবন সংগ্রাম এবং দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও সহানুভূতির জন্য তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি তুলে ধরে হাইকমিশনার ইমরান বলেন, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই, নারীর ক্ষমতায়ন এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দেশটি বিশ্বের রোল মডেল হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ সত্ত্বেও খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ৩৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। করোনাকালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ২ শতাংশে।
ইমরান বলেন, বর্তমানে দেশ ৯৯ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায় এসেছে এবং ১৫ কোটি মানুষ মোবাইল ফোনের ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছে এবং ১০ কোটি মানুষ ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত।
এছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে দ্বিতীয়, চাল উৎপাদনে চতুর্থ এবং খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
বাংলাদেশের হাই কমিশনার ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় নিহত ভারতীয় সৈন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ঢাকার কাছে আশুগঞ্জে ভারতীয় সৈন্যদের জন্য একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে কথা বলতে গিয়ে তিনি মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের দ্রুত তাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন কামনা করেন।
বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সম্পর্কে তিনি বলেন, গত এক দশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সহযোগিতার সকল ক্ষেত্রে ব্যাপক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
এই সংবর্ধনার পর একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি দল উভয় দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে।
সূত্র : বাসস
এসএ/