চার মাস ধরে পানি নেই পল্লীকবির বাসায়! (ভিডিও)
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:২৫ পিএম, ২ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার
পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের বাসায় পানি নেই। এমনকি রাজধানীর কমলাপুরে জসীম উদ্দিন সড়কেও পানি মিলছে না বেশ গত ক’মাস ধরে। টাকা দিয়েও ওয়াসার গাড়ির দেখা না মেলায় উৎকণ্ঠায় এলাকাবাসী।
কমলাপুর রেল স্টেশনের ঠিক সামনেই কবি জসীম উদ্দিন সড়ক। সারিবদ্ধ শত শত বাড়িঘর। বেশ পুরনো এই আবাসিক এলাকায় পানি না থাকায় বসবাস কঠিন হয়ে পড়েছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের।
এলাকাবাসী জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক অভিযোগ ও আবেদন করা হয়েছে, কিন্তু সবাই কেবল বলে দেখতেছি দেখতেছি। কেউই এর সুরাহা করে না। তারা বলেন, রাত দুটা-তিনটা থেকে লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকে সবাই- কখন ওয়াসার গাড়ি আসবে, কখন পানি পাবো। একটু দুই-তিন দিন গোসল না করে থাকতে হচ্ছে। একটু পানি দিয়ে কোনও রকম গোসল-রান্না-খাওয়া এইভাবে চলতেছে। কাপড়-চোপড়ও ধোয়া হয়না।
পল্লীকবি জসীম উদ্দিন বসবাস করতেন এখানে। মহল্লাজুড়েই কবির জ্ঞাতি-গোষ্ঠীর বসবাস। দীর্ঘদিন এখানেই বাস করেছেন সাহিত্যিক আকবর হোসেনসহ অনেকে। মতিঝিল কাছে হওয়ায় ব্যবসায়ী ব্যাংকারদের কেউ কেউ ফ্ল্যাট কিনেছেন এই এলাকায়। দিনের পর দিন পানি না থাকায় সুন্দর সে জীবনযাপনে এসেছে ছন্দপতন।
অভিযোগের সুরে এলাকার অধিবাসী এএফসি ক্যাপিটালের সিইও মাহবুব মজুমদার বলেন, এদেশের নাগরিক হয়ে ট্যাক্স দিয়ে, বিল দিয়ে- সবকিছু দিয়েও আমরা পানি পাচ্ছি না। অথচ পানি কিনে আনতে হচ্ছে বাইরে থেকে, আমাদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এই এলাকায় বসবাসকারী অধিকাংশই মধ্যবিত্ত, এসব মধ্যবিত্ত পরিবারের ব্যয়ভার বেড়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সামনে রোজা আসতেছে। আর এই রোজার সময় এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়, যাচ্ছেও। আর এটা আমাদের দেশে একটা স্বাভাবিক কালচার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরমধ্যেই এলাকায় পানি নিয়ে ওয়াসার এই যে খামখেয়ালী, এতে আমাদের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সাহিত্যিক আকবর হোসেনের বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এখানে পানির সমস্যা অনেকদিন ধরেই, যা অনেক প্রকট আকার ধারণ করেছে। অপর্যাপ্ত পানির লাইন এর মূল কারণ। পল্লীকবি জসীম উদ্দিনের ছেলে খুরশিদ আনোয়ার জসীম উদ্দিন বলেন, এটা রীতিমত পরিবেশ বিপর্যয়।
ওয়াসার এমডি প্রকৌশলী তাকসিম এ খান টেলিফোনে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে পাইপ পাল্টানোর কথা বলে বারংবার সুযোগ নিয়েছেন ওয়াসার স্থানীয় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তবে রোজা শুরুর আগেই এই পানি সমস্যার সমাধান চান কমলাপুরের মানুষ। তাদের দাবি, ওয়াসার এমডি বরাবর বিভিন্ন সময় বহুবার দরখাস্ত দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরও তাদের কেউই এখানে এসে একবারও পর্যবেক্ষণ করে দেখছেন না। সামনে রমজান, এই মুহূর্তে আমাদের একটাই দাবি, পানি যেন ঠিকমত পাই।
ভিডিওতে দেখুন-
এনএস/