ফের সৈকতে ভেসে এলো বিশালাকৃতির আরেকটি মৃত তিমি
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০২:৫৭ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০২১ শনিবার | আপডেট: ০৩:০০ পিএম, ১০ এপ্রিল ২০২১ শনিবার
কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছে আরও একটি বিশালাকৃতির মৃত তিমি। এ নিয়ে গত দু’দিনে সৈকতে দুটি মৃত তিমি ভেসে এলো। তিমি দুটির শরীরে পঁচন ধরেছে।
শনিবার (১০ এপ্রিল) সকাল ৯টার দিকে হিমছড়ি বড় ঝর্ণার দক্ষিণের সমুদ্র সৈকতে এ মৃত তিমিটি পানিতে ভেসে এলে বালিয়াড়িতে আটকে পড়ে।
কক্সবাজার সমুদ্রসম্পদ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক মফিজুর রহমান মফিজ জানিয়েছেন, দুটি কারণে তিমি মাছ মারা যায়। প্রথমত, বয়সকাল পার হলে তিমি আত্মহত্যা করে থাকে। দ্বিতীয়ত, বঙ্গোপসাগরে জাহাজ চলাচলের সময় আঘাতের কারণে তিমি দুটি মারা যেতে পারে। আজকেরে মৃত তিমিটির ওজন আনুমানিক আড়াই টনের মতো হবে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ূন কবির।
তিনি জানিয়েছেন, ‘পরপর দুটি মৃত তিমি সাগর থেকে ভেসে এসেছে। তিমি দুটির নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুন পরীক্ষার পর জানা যাবে তিমির মৃত্যু রহস্য। তবে প্রাথমিকভাবে আমরা ধারণা করতে পারি তিমি দুটি বয়স্কজনিত কারণে মারা যেতে পারে এবং ১০ থেকে ১২ দিন আগে এই তিমি দুটির মৃত্যু হতে পারে।’
হুমায়ুন কবির আরও জানান, ‘দুর্গদ্ধ এড়াতে শুক্রবার সাগর পাড়ে আটকে থাকা তিমিটি উদ্ধার করে মাটিতে পুতে ফেলা হয়েছে। এটিরও একইভাবে মাটিতে পুতে ফেলা হবে। তবে দুই মাস পর তিমি দুটির কঙ্গাল সংগ্রহ করা হবে। এটি বিভিন্ন মিউজিয়ামে এবং পরবর্তীতে গবেষণার কাজে আসবে।’
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান জানিয়েছেন, জোয়ারের পানিতে এই পর্যন্ত দু’দিনে দুটি মৃত তিমি ভেসে এলো। এ কারণে কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে এখনো জানা সম্ভব নয়নি। ময়না তদন্তের পরই বিস্তারিত বলা সম্ভব বলেও জানান তিনি।
কক্সবাজার মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো: আশরাফুল হক জানিয়েছেন, ‘ সাগরে তিমি কয়েক প্রকার রয়েছে। কিন্তু ভেসে আসা এই দুটি তিমি আসলে কোন প্রকার সেটিও চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। এটির ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে।’
কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু জানিয়েছেন, ‘১৯৯৬ সালে ভেসে আসা তিমির ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল তিমিটি আত্মহত্যা করেছে। এতেই আমরা বলতে পারি গত দুই দিনে ভেসে আসা তিমিগুলো বয়স্কজনিত অথবা জাহাজের কোন বিষাক্ত পানি খেয়ে মৃত্যু হতে পারে।’
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো: আমিন আল পারভেজ জানিয়েছেন, ‘জোয়ারের পানিতে ভেসে আসা প্রথম তিমিটি রাতে মাটি চাপা দিয়ে পুতে ফেলা হয়েছে। একইভাবে শেষের তিমিটিও নমুনা সংগ্রহের পর মাটিতে পুতে ফেলা হবে।’
উল্লেখ্য, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে কক্সবাজারের হিমছড়ি সমুদ্র সৈকতে একটি বিশালাকার তিমি মাছ বালিয়াড়িতে আটকা পড়ে। একইভাবে শনিবার সকালে আরও একটি তিমি ভেসে আসে বালিরচরে।
এএইচ/