যে অভ্যাস আপনাকে ফেসবুকে অপ্রিয় করে তুলে
প্রকাশিত : ০৪:৫৩ পিএম, ৭ জুন ২০১৭ বুধবার | আপডেট: ১২:১৭ পিএম, ৮ জুন ২০১৭ বৃহস্পতিবার
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফেসবুক। অন্যান্য অনেক নতুন নতুন সোশ্যাল মিডিয়ার খোঁজ পেলেও এখনো ফেসবুকেই ভরসা রাখছেন প্রায় সবা ব্যবহারকারী। প্রতিদিন ফেসবুকের খোঁজখবর নিতে গিয়ে আমাদের মেজাজ ভালো হবার পাশপাশি খারাপও হয় বই কি। ফেসবুকে আপনি নিজের অজান্তেই এমন কিছু কর্মকাণ্ড করে থাকেন যা যেগুলো আপনাকে আপনার বন্ধুদের কাছে অপ্রিয় করে তুলে। গবেষণায় এমনই কিছু তথ্য উঠে এসেছে। চলুন তাহলে ফেসবুক সংক্রান্ত এমন কিছু আচরণের কথা জেনে নেই যেগুলো বন্ধুদের কাছে আপনাকে অপ্রিয় করে তুলে।
খুব বেশি ছবি শেয়ার করা:
নিজের সদ্যজাত ভাতিজির প্রথম হামাঘুড়ি দেওয়া পঞ্চাশেক ছবি ফেসবুকে আপলোড করতে যাচ্ছেন? আরেকবার ভেবে দেখুন। কারণ এতে আপনার ব্যাপারে মানুষের ধারণা খারাপ হয়ে যেতে পারে। গড় ২৪ বছর বয়সী মোট পাঁচশ ফেসবুক ব্যবহারকারীর ফেসবুক ব্যবহারের উপর চালানো এক গবেষণা চালানো হয়। এতে দেখা ফেসবুকে যারা বন্ধুদের সাথে অনেক ছবি আপলোড করে তাদের তখন পরিবারের সাথে সম্পর্ক খুব একটা ভালো যায় না। আবার পরিবারের অনেক বেশি ছবি আপলোড করলে দেখা যায় বন্ধুদের সাথে তাদের সম্পর্ক খুব একটা ভালো হয় না।
গবেষণার সাথে জড়িত বেন মার্ডার বলেন, “শেয়ার করার সময়ে সতর্ক থাকুন আর ভাবুন অন্যরা একে কি চোখে দেখবে। শেয়ার করলে সম্পর্ক ভালো হতে পারে বটে, কিন্তু খারাপও হতে পারে।”
অর্থহীন স্ট্যাটাস:
যুক্তরাজ্যে প্রায় ১০ জনের মধ্যে চার জন খুবই অর্থহীন ষ্ট্যাটাস দেখতে খুবই অপছন্দ করেন। “ডিনার করছি” অথবা “চা পান করছি” এ ধরণের বোরিং স্ট্যাটাস সবচাইতে অপছন্দ করেন তারা। ফেসবুক ব্যবহারকারীরা এমন অভ্যাস বন্ধ করুক –এমনটাই তাদের কামনা।
খুব বেশি বা খুব কম বন্ধু থাকা:
নিজের ফ্রেন্ড লিস্টের দিকে লক্ষ্য করুন। অপরিচিত কেউ থাকলে তাদেরকে তালিকা থেকে সরিয়ে রাখুন। অথবা দরকার মনে করলে নতুন কিছু মানুষ খুঁজুন যারা আপনার বন্ধু হতে পারে। কারণ গবেষণায় দেখা যায় খুব বেশি বা খুব কম বন্ধু থাকলে তা অন্যদের চোখে আপনার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে।
একটি গবেষণায় ১৫০ জন কলেজ শিক্ষার্থীকে বানোয়াট কিছু ফেসবুক প্রোফাইল চেক করতে বলা হয় এবং এই প্রোফাইলের মানুষগুলোকে তাদের পছন্দ হয় কিনা তা জানতে চাওয়া হয়। আর এই গবেষণায় অংশ নেওয়া মানুষদের নিজেদের ফেলসবুক ফ্রেন্ড ছিলো গড়ে ৩৯৫ জন করে।
ফলাফলে দেখা যায়, মোটামুটি ৩০০ জনের মতো বন্ধু থাকলে সেসব মানুষকে পছন্দের তালিকায় রাখেন এসব ছাত্র। একটি প্রোফাইলে একশ জনের মতো বন্ধু থাকলে সেটাকে সবচাইতে বেশি অপছন্দ করা হয়। আবার ৩০০ জনের বেশি থাকলেও অপছন্দ করা হয়।
কী কারণে বেশি বন্ধু থাকলে তারা অপছন্দের পাত্র হন? গবেষণায় বলা হয়, যাদের এতো বেশি বন্ধু আছে, দেখে মনে হয় তারা ফেসবুকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন এবং যাকে তাকে বন্ধু বানিয়ে ফেলছেন।
এক্ষেত্রে অবশ্য এই গবেষণায় যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদেরও ভূমিকা আছে। তাদের বন্ধু সংখ্যা ৩০০ এর কাছাকাছি বলেই তারা তিনশোর বেশি বা কম বন্ধু থাকা পছন্দ করেন না। যদি তাদের বন্ধু সংখ্যা গড়ে এক হাজার হতো তাহলে তারা হয়তো এক হাজার বন্ধু থাকলেও কাউকে অপছন্দ করতো না।
তবে অন্য একটি জরিপ থেকে দেখা যায় ২০১৪ সালে মানুষের বন্ধু সংখ্যা ছিলো গড়ে ৩৩৮। এই সংখ্যার খুব বেশি বা কম সংখ্যাক বন্ধু থাকলে আপনিও অপ্রিয় হয়ে যেতে পারেন।
খুব কাছে থেকে তোলা ছবি:
আপনি যতই সুন্দর/সুন্দরী হয়ে থাকেন না কেন, মুখের একদম কাছে থেকে তোলা ছবি প্রোফাইল পিকচার হিসেবে দিলে আপনারই ক্ষতি। ৪৫ জন মানুষের উপরে চালানো এক গবেষণা চালানো হয়। এতে তাদেরকে ১৮ জন পুরুষের সাদাকালো ছবি দেখানো হয় কম্পিউটারে। শুধু ছবি দেখে প্রতিটি মানুষের বিশ্বস্ততা, দক্ষতা এবং আকর্ষণের ব্যাপারে রেটিং করতে বলা হয়।
এতে দেখা যায়, “পার্সোনাল স্পেস” অর্থাৎ দেড় ফুটের কম দুরত্ব থেকে মুখের ছবি তোলা হলে তা অপছন্দ করে থাকেন প্রায় সব মানুষ। মোটামুটি সাড়ে চার ফুট দুরত্ব থেকে ছবি তুললে আবার তাদের রেটিং ভালো হয়ে থাকে।