ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

১৬ বছরে পরিবেশবাদী যুবসংগঠন ‘গ্রীন ভয়েস’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:৫১ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২১ রবিবার

দেশের প্রথম পরিবেশবাদী যুবসংগঠন গ্রীন ভয়েসের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। প্রকৃতি,পরিবেশ ও জীবন বাঁচানোর অঙ্গীকার নিয়ে ‘যুবরাই লড়বে সবুজ পৃথিবী গড়বে’স্লোগানে ২০০৫ সালের আজকের এইদিনে কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মোঃ আলমগীর কবিরের হাত ধরে যাত্রা শুরু করে গ্রীন ভয়েস। প্রথম দিকে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কয়েকজন তরুণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে পথচলা শুরু করে সংগঠনটি। পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি সংগঠনটি সমাজসেবামূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডে প্রশংসনীয় ভূমিকার জন্য দিন দিন তরুণ ছাত্র ও যুবসমাজের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেছে।বর্তমানে দেশের প্রায় অধিকাংশ জেলা,বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে সংগঠণটির কার্যক্রম চলমান।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রতিবছর নদী দখল,দূষণকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে সারাদেশব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে সংগঠণটি।কিন্তু এ বছর করোনা মহামারীর কারনে ১৬ বছরে পা রাখার গৌরবময় সময়টাকে স্মরণীয় করে রাখতে অনলাইন ভিত্তিক বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। তন্মধ্যে জেলা, উপজেলা, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখাসমূহ তাঁদের পূর্ববর্তী কাজের ডকুমেন্টারি প্রদর্শন, বৃক্ষরোপণ, পরিবেশ সচেতনতামূলক পোস্টার,ফেস্টুন, পরিবেশের গুরত্বের ওপর ভিত্তি করে ভার্চুয়াল আলোচনা সভাসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উল্লেখযোগ্য।

১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে গ্রীন ভয়েসের প্রধান সমন্বয়ক মো. আলমগীর কবির জানান,নানা প্রতিবন্ধকতাকে মোকাবেলা করে একটি সংগঠনের ১৬ বছর অতিক্রম করা অত্যন্ত আনন্দও গৌরবের। গ্রীন ভয়েসের সবুজ বন্ধুদের নিস্বার্থ ভালোবাসা আর সমাজের প্রতি তাঁদের দায়িত্বশীলতা এ সংগঠনকে আজকের এই অবস্থানে নিয়ে আসতে সহযোগিতা করেছে।আমাদের দীর্ঘ এই পথ চলায় যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে সঙ্গে ছিলেন তাঁদের সকলকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

গ্রীন ভয়েস একটি পরিবেশবাদী যুব সংগঠন হলেও পরিবেশ সচেতনতার পাশাপাশি সামাজিক স্বেচ্ছাসেবামূলক সকল কর্মকান্ডে সক্রিয়ভাবে অংশ গ্রহণ করে আসছে।যেকোন দূর্যোগ বা মহামারী পরিস্থিতে অসহায়-গরীব মানুষদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে সবুজ বন্ধুরা। করোনার মধ্যে সবাই যখন ঘরেবন্দী, গ্রীন ভয়েসের বন্ধুরা তখন সবরকম বিপদ মাথায় নিয়েই বহুবিধ কর্মসূচিসহ নিজেদের সামর্থ্যমত বিপদাপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এগুলো যেমন একদিকে আমাদের উৎসাহিত করে তেমনি আমাদের ভবিষ্যত কাজ সম্পর্কেও আরও বেশি কর্তব্যতাড়িত করে। অন্যদিকে এটা একটা সুখের বিষয়ও যে, গ্রীন ভয়েস এই ১৬ বছরে ডালপালা মেলে অনেকটাই বিস্তৃত হয়েছে। বহু স্বেচ্ছাসেবী তরুণ-তরুণি সারাদেশ জুড়ে গ্রীন ভয়েসের এই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে কাজ করে চলেছে।প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কালে আমাদের প্রতীতি হবে আগামী দিনে গ্রীন ভয়েসকে তার কাজের মধ্যদিয়ে মানুষের আরও কাছাকাছি নিয়ে যাওয়া। তাই আমার সকল সবুজ বন্ধুর কাছে আহবান, আসুন আমরা শপথ নেই -আমাদের চিন্তা, আমাদের কর্ম, আমাদের স্বেচ্ছাশ্রম, আমাদের উদ্ভাবন, আমাদের সততা, মানুষের প্রতি আমাদের ভালোবাসা দিয়ে, গ্রীন ভয়েসকে পরার্থপরতার একটা মডেল সংগঠন হিসাবে দাঁড় করাই।গ্রীন ভয়েসের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সকল শুভানুধ্যায়ীকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

উল্লেখ্য যে, এই করোনাকালীন সময়ে গ্রীন ভয়েসের নারী ও শিশু অধিকার বিষয়ক অঙ্গসংগঠণ বহ্নিশিখা আয়োজিত ‘আত্মরক্ষা কৌশল ও আত্মবিশ্বাস উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ সারাদেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এছাড়া গ্রীন ভয়েস ছাত্র-যুবদের মন মানসিকতা বৃদ্ধির জন্য অভিযাত্রিক গ্রুপের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড, অনুধাবন নামে  প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও কর্মশালা, নীলকন্ঠে অধিকার বঞ্চিত শিশু-কিশোর, নারীর  শিক্ষা, স্বাস্থ্য রক্ষার সচেতনেতা ও কর্মমুখী করার উদ্যোগ, নিবেদনে চিকিৎসা ক্ষেত্রে স্বেচ্ছায় সহযোগিতা, প্রয়াসের বন্ধুরা করছে সাপ্তাহিক পাঠচক্রের আসর, পরশের ছোয়া নিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে জরুরী সহায়তায় মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে পরশ’র বন্ধুরা, সিধু নামে আদিবাসী অধিকার সংরক্ষণের উদ্যোগ, মেঠোপথ’র নামে গ্রাম্য পরিবেশ অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ ,দীপলোক নিজস্ব পাঠাগার ও তথ্যকেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ। অনুসন্ধিৎসু নামে সবুজ বন্ধুদের নিয়ে গবেষণা কাজ পরিচালনা করছে সংগঠনটি।
কেআই//