মিলেছে ড্রামভর্তি লাশের পরিচয়, পুলিশসহ গ্রেফতার ৪
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৮:২৮ এএম, ১৯ এপ্রিল ২০২১ সোমবার | আপডেট: ০৮:৩০ এএম, ১৯ এপ্রিল ২০২১ সোমবার
গ্রেফতারকৃত পুলিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকার
রাজশাহীতে ডোবায় পড়ে থাকা ড্রামের ভিতর থেকে উদ্ধার তরুণীর লাশের পরিচয় মেলেছে। রোববার (১৮ এপ্রিল) ভোরে পিবিআই সদস্যরা ওই তরুণীর খুনি পুলিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকারকে (৪৩) গ্রেফতার করে। পরে তার দেয়া তথ্যে দিনভার অভিযান চালিয়ে মাইক্রো চালকসহ তার তিন সহযোগিকে গ্রেফতার করে পিবিআই। এ সময় লাশ বহনকারী মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত পুলিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকারের বাড়ি পাবনার আতইকুল্লা উপজেলার চরাডাঙ্গা গ্রামে। সে রেল পুলিশের (জিআরপি) রাজশাহী থানায় কর্মরত। রাজশাহী পিবিআইয়ের একটি টিম রোববার ভোর রাতে নাটোরের লালপুরে বোনের বাড়ি থেকে নিমাইকে গ্রেফতার করে। পরে সে নিহত তরুণীর পরিচয় জানায়।
নিহত তরুণীর নাম ননিকা রাণী রায় (২৪)। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁ সদরের মিলনপুর। তিনি রাজশাহীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নগরের পাঠানপাড়া এলাকার একটি মেসে থাকতেন ননিকা। রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তার লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ।
নিমাইয়ের সহযোগী হিসেবে গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নগরের কাশিয়াডাঙ্গা থানার আদারীপাড়ার কবির আহম্মেদ (৩০), রাজপাড়া থানার শ্রীরামপুর এলাকার সুমন আলী (৩৪) এবং মাইক্রোবাস চালক নগরীর বিলশিমলা এলাকার আব্দুর রহমান (২৫)। লাশ ফেলে দেয়ার কাজে তারা সহযোগিতা করেছিল।
রাজশাহী পিবিআইয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, সিসিটিভির ফুটেজসহ তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিমাইকে শনাক্ত করা হয়। নগরীর তেরখাদিয়া এলাকার একটি ভাড়া বাড়িতে ওই তরুণীকে হত্যা করে নিমাই। গত ৬ এপ্রিল সে বাড়িটি ভাড়া নেয়। তার স্ত্রীও পুলিশ কনস্টেবল। সে বগুড়ায় কর্মরত। সে কারণে নিমাই একাই ওই বাড়িতে থাকতো।
আবুল কালাম বলেন, কনস্টেবল নিমাই হত্যার কথা স্বীকার করেছে। সে জানিয়েছে ৬/৭ বছর ধরে ননিকা রাণীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কও হয়। সম্প্রতি সে বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এ কারণে তাকে ভাড়া বাসায় নিয়ে গিয়ে হত্যার পর লাশ ড্রামে ভরা হয়। এরপর একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গিয়ে ড্রামটি ডোবায় ফেলে দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, নিমাই চন্দ্র গত সাত বছর ধরে রাজশাহী জিআরপি থানায় কর্মরত। এর আগে তিনি মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় চাকরি করার সময় কাজিরহাটা অফিসের পাশের বাড়ির এক কলেজছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নগ্ন ভিডিও তৈরি করে। ভিডিওটি কম্পিউটারের দোকান থেকে মানুষের হাতে হাতে চলে যায়। তখন তাকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে নানা কৌশলে চাকুরী ফিরে পেয়ে রেল পুলিশে যোগ দেয়।
গত শুক্রবার নগরীর অদূরে বাইপাস সড়কের সিটি হাটের কাছে একটি ডোবায় ড্রামের মধ্যে লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে শাহমখদুম থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। লাশ উদ্ধারের সময় ডিবি, সিআইডি ও পিবিআই সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। এ ঘটনায় শাহমখদুম থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। পিবিআই মামলাটি তদন্ত করে।
এনএস/