বাঁশখালীতে বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে (ভিডিও)
রফিকুল বাহার
প্রকাশিত : ১১:৫৫ এএম, ২১ এপ্রিল ২০২১ বুধবার | আপডেট: ০৮:৫৬ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২১ বুধবার
অপ্রীতিকর ঘটনার একদিন পর থেকে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মাণাধীন ১৩শ’ ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। কারা, কেন, কী উদ্দেশ্যে চীন ও বাংলাদেশের যৌথ অর্থায়নের এই মেগা প্রকল্পে উদ্দেশ্যমূলকভাবে সহিংস ঘটনা ঘটিয়েছে; তার তদন্ত করছে দুটি কমিটি। বাঁশখালীর গণ্ডামারা প্রকল্প এলাকা ঘুরে এসে রিপোর্ট করেন রফিকুল বাহার।
বন্দরনগরী চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের তীরে ৭০০ একর পতিত জমিতে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে কয়লাভিত্তিক পরিবেশবান্ধব বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ। প্রকল্পে দুই দশমিক ছয় বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ চীনের ব্যাংকের। এখানে নির্মাণ কাজ চলে সুর্যোদয় থেকে সুর্যাস্ত পর্যন্ত।
এস এস পাওয়ার লিমিটেডের প্রকৌশলী প্রীতম পাল বলেন, প্রায় সাড়ে ৪ হাজারের মতো বাঙালি শ্রমিক এবং প্রায় সাড়ে ৯শ’র মতো চীনের ওয়ার্কাররা এখানে কাজ করছেন।
২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের প্রায় সব যন্ত্রপাতি ও নির্মাণসামগ্রী আমদানী করে আনা হয়েছে। কাজের গতি সচল ও মান ঠিক রাখার জন্য ৯শ’ চীনা নাগরিক এবং বাংলাদেশের ৫ হাজার বিশেষজ্ঞ ও শ্রমিক কাজ করছে। সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল। গত ১৭ এপ্রিল পরিকল্পিতভাবে স্থানীয় শ্রমিকদের উসকে দিয়ে কোটি কোটি টাকার সম্পদ পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
প্রকল্প কো-অর্ডিনেটর ফারুক আহমেদ বলেন, কিছু সুযোগসন্ধানী ব্যক্তি শ্রমিকদেরকে উসকে দিয়েছে, এই ঘটনায় প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট হয়েছে।
বিদেশী নাগরিক হত্যা ও বিপুল চীনা বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতেই কি এই সহিংসতা? ওই দিন প্রকল্প এলাকায় কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে প্রশাসন। পৃথকভাবে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ও জেলা প্রশাসন। মঙ্গলবারও সেখানে ছিল প্রায় ২শ’ পুলিশ।
চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকির হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম রেঞ্জ ও জেলা পুলিশ থেকে এখানে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্যদেরকে রাখা হয়েছে, যাতে পরবর্তী কালে কোন ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। আর যে ঘটনা ঘটেছে এই ঘটনার আমরা তদন্ত করছি। ঘটনার কারণ ও এর সঙ্গে কিছু সুপারিশ করা যেতে পারে পরবর্তীকালের জন্য।
১৭ এপ্রিল উচ্ছৃঙ্খল জনতা ও পুলিশের সংঘর্ষে ৫ জন নিহত হয়। আহত হয় পুলিশসহ অন্তত ২৫ জন। তাদের প্রত্যেককে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়েছে, তাৎক্ষণিকভাবে মিটিয়ে দেয়া হয়েছে চিকিৎসা খরচ।
আগামী বছরের জুনে এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ কাজ শেষে উৎপাদনে যাবে। ১৩শ’ ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে। এই উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে চট্টগ্রাম জেলার আয়তনের সমান একটি জেলাকে আলোকিত করা যাবে, করা যাবে শিল্পায়নও। এই মুহূর্তে এই বিদ্যুৎকেন্দ্রে কেন সহিংসতার ঘটনা ঘটলো, কারা ঘটিয়েছে, কি উদ্দেশ্যে ঘটিয়েছে- এই বিষয়টি খুঁজে বের করার জন্য সরকারের নীতি নির্ধারকদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দেখুন ভিডিও :
এএইচ/ এসএ/