করোনায় সংস্কৃতি অঙ্গনের যাদের হারালাম
সোহাগ আশরাফ
প্রকাশিত : ১২:৩৭ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২১ বুধবার | আপডেট: ০১:০৫ পিএম, ২১ এপ্রিল ২০২১ বুধবার
মহামারী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। ইতিমধ্যে রাজনীতি, চলচ্চিত্র, শিক্ষা, সাহিত্য, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি অঙ্গনের অনেককেই হারিয়েছে বাংলাদেশ। গত বছর এবং চলতি বছরে আমরা হারিয়েছি শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গনের বেশ কয়েকজন গুণিকে। তাদের নিয়ে আজকের এই প্রতিবেদন।
কামাল লোহানী
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলা বেতারে যার কণ্ঠে বাংলাদেশের যুদ্ধ জয়ের খবর প্রথম এসেছিল, সেই কামাল লোহানীর কণ্ঠ করোনাভাইরাসে স্তব্ধ হয়ে যায় গত বছর ২০ জুন।
কামাল লোহানী একাধারে ছিলেন সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সংগঠক, রাজনৈতিক সংগ্রামের পরামর্শক।
ছেলেবেলায় বাঙালির ভাষা আন্দোলনে জড়িয়ে পড়ার পর বাঙালির প্রতিটি সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন তিনি। কমিউনিস্ট মতাদর্শের বিশ্বাসী কামাল লোহানী ১৯৫৫ সালে দৈনিক মিল্লাত পত্রিকার সাংবাদিক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। একাত্তরে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতৃত্বে ছিলেন তিনি; যুদ্ধ শুরুর পর স্বাধীন বাংলা বেতারে যুক্ত হন।
১৯৬২ সালে কামাল লোহানী ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন। পরে ১৯৬৭ সালে গড়ে তোলেন তার রাজনৈতিক আদর্শের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ক্রান্তি’। উদীচী শিল্পী গোষ্ঠির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেছিলেন কামাল লোহানী। ২০০৯ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর দুই দফা মহাপরিচালক ছিলেন।
মুর্তজা বশীর
বাংলাদেশের শিল্পকলার অন্যতম নক্ষত্র হিসেবে বিবেচিত মুর্তজা বশীর করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ১৫ আগস্ট চিরবিদায় নেন।
বাংলার জ্ঞানতাপস ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ছোট সন্তান মুর্তজা বশীরের জন্ম ১৯৩২ সালের ১৭ অগাস্ট। বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে, প্রতিবাদে মুর্তজা বশীর ছিলেন অগ্রভাগে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে অধ্যাপনার পাশাপাশি বাংলাদেশের শিল্পকলা আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ছিলেন তিনি।
‘দেয়াল’, ‘শহীদ শিরোনাম’, ‘কালেমা তাইয়্যেবা’, ‘পাখা’ শিল্পী মুর্তজা বশীরের আঁকা উল্লেখযোগ্য সিরিজ। তিনি ‘বিমূর্ত বাস্তবতা’ নামে একটি শিল্পধারার প্রবর্তক। এছাড়াও ফিগারেটিভ কাজে পূর্ব পশ্চিমের মেলবন্ধনে তিনি স্বকীয়তার স্বাক্ষর রেখেছেন।
কে এস ফিরোজ
অভিনেতা কে এস ফিরোজ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৭৬ বছর বয়সে গত বছর ৯ সেপ্টেম্বর মারা যান।
ঢাকার লালবাগে জন্ম নেওয়া খন্দকার শাহেদ উদ্দিন ফিরোজ অভিনয় করতে এসে কে এস ফিরোজ নামে পরিচিত হন। অভিনয়ে আসার আগে সেনাবাহিনীতে ছিলেন তিনি।
অভিনয় জীবনের শুরুর দিকে থিয়েটারের ‘কিং লেয়ার’ মঞ্চ নাটকে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে পরিচিত পান তিনি। ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’, ‘রাক্ষসী’সহ আরও বেশ কয়েকটি মঞ্চ নাটকে দেখা গেছে তাকে।
তিনি মঞ্চ এবং ছোট ও বড় পর্দায় যুগপৎ অভিনয় করেছেন; নাট্যদল থিয়েটারের জ্যেষ্ঠ সদস্য ও সভাপতি ছিলেন। পাশাপাশি টিভি বিজ্ঞাপনেও কাজ করেছেন তিনি।
টিভিতে তার অভিনীত প্রথম নাটক ‘দীপ তবুও জ্বলে’। পরে ‘লাওয়ারিশ’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা করেন কে এস ফিরোজ। আবু সাইয়িদের ‘শঙ্খনাদ’, ‘বাঁশি’, মুরাদ পারভেজ’র ‘চন্দ্রগ্রহণ’, ‘বৃহন্নলা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
সাদেক বাচ্চু
অভিনেতা সাদেক বাচ্চু করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৬৬ বছর বয়সে গত বছর ১৪ সেপ্টেম্বর মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
ডাকবিভাগের সাবেক কর্মকর্তা সাদেক হোসেন বাচ্চু টেলিভিশনে অভিনয় করে নাম কুড়িয়ে ১৯৮৫ সাল চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন। ‘রামের সুমতি’র মাধ্যমে যাত্রা শুরুর পর বহু জনপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। খল চরিত্রের অভিনেতা হিসেবে দর্শকদের কাছে পেয়েছেন আলাদা পরিচিতি।
২০১৮ সালে ‘একটি সিনেমার গল্প’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য খল চরিত্রে সেরা অভিনেতার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান সাদেক বাচ্চু।
মিনু মমতাজ
অনেক দিন থেকে কিডনি এবং চোখের সমস্যায় ভুগছিলেন অভিনেত্রী মিনু মমতাজ। অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন তিনি। গত বছর ২২ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টায় রাজধানীর গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। বর্ষীয়ান এই অভিনেত্রী করোনায় আক্রান্ত ছিলেন।
দীর্ঘদিন ধরে কিডনি ও চোখের সমস্যা থাকলেও মৃত্যুর আগে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। দেখা দেয় জ্বর ঠান্ডা। করোনা সন্দেহে তাকে আত্মীয়রা ৪ সেপ্টেম্বর গ্রীন লাইফ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এখানে টেস্ট করার পর তার করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। এরপর তাকে করোনার বিশেষ বিভাগে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল।
হাসান ইমাম
নৃত্যশিল্পী, নৃত্যপরিচালক হাসান ইমাম ৬৭ বছর বয়সে গত বছর ১৬ মে মারা যান। যদিও পরিবার জানায়, হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু করোনাভাইরাসে বোনের মৃত্যুর তিন দিন পর তার মৃত্যু ঘটে।
দেশের নৃত্যশিল্পীদের মধ্যে অগ্রগন্য হাসান ইমাম টেলিভিশন নৃত্যশিল্পী সংস্থার সাবেক সভাপতি; সুরঙ্গমা একাডেমি নামে একটা নাচের স্কুল পরিচালনা করতেন।
বিক্রমপুরে জন্ম নেওয়া হাসান ইমামের শৈশব-কৈশোর কেটেছে মগবাজারে; স্বাধীনতার পরপর বুলবুল ললিতকলা একাডেমি থেকে নৃত্যের উপর পড়াশোনা সম্পন্ন করে পেশাদার নৃত্যশিল্পী হিসেবে ক্যারিয়ার গড়েন। আশি ও নব্বইয়ের দশকের জনপ্রিয় এ নৃত্যশিল্পী পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ নৃত্য-নাটকে কাজ করে প্রশংসিত হয়েছেন; তার বিপরীতে ছিলেন নৃত্যশিল্পী জিনাত বরকতউল্লাহ।
আরেক নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নিপার সঙ্গে জুটি বেঁধে বেশকিছু নাটক করেছেন তিনি; পরবর্তীতে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। নব্বইয়ের দশকের শেষভাগে নিপার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর নাচ থেকে ক্রমান্বয়ে নিজেকে গুটিয়ে নেন হাসান ইমাম।
আলী যাকের
ক্যান্সারের সঙ্গে চার বছরেরও বেশি সময় লড়াই করে গত বছর ২৭ নভেম্বর চির বিদায় নেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অভিনেতা, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক আলী যাকের। তিনি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন।
১৯৭২ সালের আরণ্যক নাট্যদলের ‘কবর’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে পথচলা শুরু করেন এই নাট্যব্যক্তিত্ব। মঞ্চে নূরলদীন, গ্যালিলিও ও দেওয়ান গাজীর চরিত্রে আলী যাকেরের অভিনয় এখনও দর্শক মনে রেখেছে। ‘বহুব্রীহি’, ‘তথাপি পাথর’, ‘আজ রবিবার’এর টিভি নাটকে অভিনয় করেও তিনি জনপ্রিয়তা পান।
অভিনয়, নির্দেশনার বাইরে তিনি ছিলেন একজন নাট্যসংগঠক; পাশাপাশি যুক্ত ছিলেন লেখালেখির সঙ্গে। নাটকে অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে সরকার তাকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে তিনি এশিয়াটিকের দায়িত্ব নেন, মৃত্যুর সময় তিনি কোম্পানির গ্রুপ চেয়ারম্যান ছিলেন।
সেলিম খান
টানা ছয় দিন হাসপাতালে চিকিত্সাধীন থাকার পর গত বছর ১০ ডিসেম্বর সকাল ছয়টায় পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন দেশের ঐতিহ্যবাহী ও বৃহৎ অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সংগীতার স্বত্বাধিকারী সেলিম খান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৫ বছর।
কোভিড-১৯ পজিটিভ হলে সেলিম খানকে ৪ ডিসেম্বর ঢাকার তেজগাঁওয়ের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরিস্থিতির অবনতি হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে লাইফ সাপোর্টে নেন।
আশির দশকে সেলিম খানের হাত ধরে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সংগীতার জন্ম। রাজধানীর পাটুয়াটুলী তথা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সংগীত প্রযোজনা-পরিবেশনা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সংগীতা নিজের অবস্থান ধরে রেখেছিল টানা চার দশক। এখনো প্রযোজনা অব্যাহত রেখেছে তারা।
বাংলাদেশের সংগীতের পৃষ্ঠপোষকতা এবং বাংলা সংগীতকে দেশে ও বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে সংগীতা।
আবদুল কাদের
ক্যান্সারের সঙ্গে লড়ছিলেন, তার মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ২৬ ডিসেম্বর চিরবিদায় নেন অভিনেতা আবদুল কাদের। তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
মঞ্চ ও টেলিভিশন নাটকে সমান সক্রিয় আবদুল কাদেরকে বিপুল জনপ্রিয়তা দিয়েছিল হুমায়ূন আহমেদের টিভি সিরিজ ‘কোথাও কেউ নেই‘র বদি চরিত্রটি।
ডিসেম্বরের শুরুতে শারীরিক নানা জটিলতা দেখা দিলে কাদের ভারতে যান চিকিৎসার জন্য। সেখানে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। আর তা এখন নিরাময়ের বাইরে বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসকরা। দেশে ফিরে আসার পর হাসপাতালে ভর্তি হলে ধরা পড়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ।
কাদের অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে শুরুতে অধ্যাপনায় যোগ দলেও পরে বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করার পাশাপাশি নাটক নিয়েই মেতে ছিলেন। তার অভিনীত মঞ্চনাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘এখনও ক্রীতদাস’, ‘তোমরাই, স্পর্ধা’, ‘দুই বোন’, ‘মেরাজ ফকিরের মা’। তিন হাজারের মতো টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। ২০০৪ সালে তিনি ‘রং নাম্বার’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। অভিনয়ের পাশাপাশি বেশ কিছু বিজ্ঞাপনের কাজও করেছেন তিনি।
মিতা হক
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বরেণ্য রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হক। তিনি মারা যান চলতি বছরের ১১ এপ্রিল ভোরে।
গত ২৫ মার্চ মিতা হকের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ আসে। কয়েকদিন তিনি বাসায় আইসোলেশনে ছিলেন। বুধবার (৩১ মার্চ) তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তিনি কিডনি রোগী ছিলেন। গত ৫ বছর ধরে নিয়মিত ডায়লাইসিস নিয়ে ভালোই ছিলেন তিনি। কিন্তু সম্প্রতি করোনা আক্রান্ত হয়ে কিছুটা মানসিক এবং শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন এই সংগীতশিল্পী। তাই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় নিবিড় পরিচর্যার জন্য।
সংগীতশিল্পী মিতা হক অভিনেতা খালেদ খানের স্ত্রী। তার চাচা দেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের অগ্রপথিক ও রবীন্দ্র গবেষক ওয়াহিদুল হক। মেয়ে জয়ীতাও রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী। এছাড়া মিতা হক বিভিন্ন সময়ে জাতীয় রবীন্দ্র সম্মিলন, ছায়ানটসহ বেশ কিছু সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ২০২০ সালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক পান বিশিষ্ট এই রবীন্দ্র সংগীতশিল্পী।
সারাহ বেগম কবরী
ঢাকাই সিনেমার ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত নায়িকা সারাহ বেগম কবরী মারা গেছেন করোনায় আক্রান্ত হয়ে। আক্রান্তের ১৩ দিনের মাথায় বিদায় নেন তিনি।
তিনি মারা যান চলতি বছরের ১৬ এপ্রিল দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে।
৭১ বছর বয়সী এ অভিনেত্রী দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর তার ফুসফুসেরও মারাত্মক ক্ষতি হয়। গত ৫ এপ্রিল দুপুরে করোনা আক্রান্ত হন অভিনেত্রী। সেদিন রাতেই কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে।
পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সাবেক সাংসদ কবরী।
এস এম মহসীন
করোনায় মারা গেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রবীণ অভিনেতা এস এম মহসীন। তিনি মারা যান চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন এস এম মহসীন। করোনা তার ফুসফুসে সংক্রমিত হয়ে পড়েছিল মারাত্মকভাবে। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিইউতে নেওয়া হয়েছিল।
৭৩ বছর বয়সী এ অভিনয়শিল্পী সম্প্রতি পাবনায় ওয়াজেদ আলী সুমন পরিচালিত ‘অন্তরাত্মা’ সিনেমার শুটিংয়ে অংশ নিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরেন গত ২ এপ্রিল। ফেরার পরবর্তীতে তার করোনার উপসর্গ দেখা দিলে প্রথমে তাকে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে ইসপালস হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখান থেকে সপ্তাহখানেক আগে বারডেম হাসপাতালে নেওয়া হয় মহসীনকে।
চার দশকের বেশি সময় ধরে মঞ্চ ও টেলিভিশনে অভিনয় করছেন এস এম মহসীন। অভিনয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০২০ সালে একুশে পদকে ভূষিত হন তিনি। দীর্ঘদিন তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পরিচালকের দায়িত্বও পালন করেছেন। পাশাপাশি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্য বিভাগ অনুষদের সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন। জাতীয় থিয়েটারের প্রথম প্রকল্প পরিচালক হিসাবে যুক্ত ছিলেন তিনি।
এসএ/