ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বিদায়ী সঙ্গীত গেয়েছিলেন ডুবে যাওয়া সাবমেরিনের নাবিকরা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১৫ এএম, ২৭ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার

ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনীর প্রকাশ করেছে এক মর্মস্পর্শী ভিডিও। তাতে দেখা যাচ্ছে, ডুবে যাওয়া সাবমেরিনের নাবিকেরা গাইছেন দেশটির একটি হিট গান। যাতে প্রেমিকাকে বিদায় জানানো হচ্ছে।

ভিডিওটি কয়েক সপ্তাহ আগে ধারণ করা হয়েছিল। তাতে দেখা যাচ্ছে নাবিকেরা সাম্পাই জুমপা নামে ইন্দোনেশিয়ার একটি হিট গান গাইছেন। যার মানে হচ্ছে ‘আবার দেখা হবে।’

কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে, বুধবার ডুবে যাওয়া সাবমেরিন কেআরআই নাঙ্গালার ধ্বংসাবশেষ সাগরের তলদেশে পাওয়া গেছে। আর সাবমেরিনে থাকা ৫৩ জন নাবিকের সবাই মারা গেছেন। নিখোঁজ হবার আগে এক টর্পেডো মহড়ায় অংশ নিয়েছিল সাবমেরিনটি। তবে সাবমেরিনটি ডুবে যাওয়ার কারণ এখনো জানা যায়নি।

কী গান গাইছিলেন নাবিকেরা
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নাবিকেরা অ্যাকুস্টিক গিটার বাজিয়ে গান গাইছেন। আর তাদের সঙ্গে সাবমেরিনের কমান্ডার হ্যারি অকটাভিয়ানও রয়েছেন।

তাদের গানের কথাগুলো এরকম- ‘যদিও এখুনি তোমাকে বিদায় জানাতে প্রস্তুত নই আমি, কিন্তু তোমাকে ছাড়া বেঁচেও থাকতে পারবো না। তোমার ভালো/ মঙ্গল হোক।’

ইন্দোনেশিয়ার সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র ডিজাওয়ারা হুইমবো বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তার বিদায়ী সংবর্ধনার জন্য গাওয়া হচ্ছিল গানটি, তখন সেটি রেকর্ড করা হয়েছিল।

এদিকে, নৌবাহিনী বলছে তারা সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষ এবং নাবিকদের মরদেহ উদ্ধারের পরিকল্পনা করেছে। এসব ধ্বংসাবশেষ সাগরের ৮০০ মিটারেরও বেশি গভীরে রয়েছে এবং বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগরের অত নিচ থেকে উদ্ধার কাজ চালাতে বিশেষায়িত যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হবে।

স্বজনদের শোকসভা
সোমবার (২৬ এপ্রিল) নিহত নাবিকদের স্বজনেরা বালির সমুদ্রতীরে এক শোকসভায় মিলিত হন। সেখানে ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো সাবমেরিনের নাবিকদের দেশের ‘সেরা দেশপ্রেমিক’ বলে বর্ণনা করেন। তিনি ঘোষণা দেন, নিহত নাবিকদের সন্তানদের পড়াশুনার খরচ সরকার বহন করবে।

জার্মানিতে তৈরি কেআরআই নাঙ্গালা সাবমেরিনটির বয়স হয়েছিল ৪০ বছর। কিন্তু নৌবাহিনী বলছে ২০১২ সালে এটিকে সংস্কার করা হয়েছিল।

নিখোঁজ সাবমেরিনটি অনুসন্ধানে যুক্ত হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এবং ভারত। আশা করা হচ্ছিল সাবমেরিনটি হয়ত উদ্ধার করা সম্ভব হবে এবং নাবিকদের হয়ত বাঁচানো যাবে। কিন্তু রোববার কর্মকর্তারা জানান যে, সাবমেরিনটি থেকে সিগনাল পেয়েছেন তারা।

এরপরই সিঙ্গাপুর থেকে আনা একটি উদ্ধারকারী ডুবোজাহাজ পাঠানো হয় সাবমেরিনের অবস্থান এবং ধ্বংসাবশেষের চাক্ষুষ প্রমাণ দেখে আসতে।

তাতে দেখা যায়, সাবমেরিনটি তিন খণ্ডের টুকরা অবস্থায় সমুদ্রের নীচে পড়ে আছে। জাহাজের কিছু ভগ্নাবশেষ ও জায়নামাজের মতো কিছু জিনিস পানিতে ভাসতে দেখা গেছে। 
সূত্র : বিবিসি বাংলা।
এএইচ/এসএ/