ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ভারত ফেরত যাত্রীদের বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ভোগান্তি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:১৪ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার | আপডেট: ০৭:৩৫ পিএম, ৩০ এপ্রিল ২০২১ শুক্রবার

ভারত ফেরত যাত্রীরা বেনাপোল চেকপোষ্ট ইমিগ্রেশনে এসে দীর্ঘ সময় পার করছে। এতে করে গরমে তারা অতিষ্ট হয়ে উঠেছে। তাদের সাথে অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে কোয়ারেন্টাইনে রাখার বেলায়। ভারত থেকে দুই-তিন দিন ঘুরে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে দেশে ফেরার অনুমতি পত্র এবং করোনা সনদ নিয়ে বেনাপোল চেকপোষ্টে এসে পড়ছেন বিড়ম্বনায়। সে দেশে চিকিৎসার জন্য যাওয়া ভুক্তভোগী বাংলাদেশি পাসপোর্টযাত্রীরা টাকা পয়সা শেষ করে এখন দেশে ফিরে নিজ খরচে হোটেল ভাড়া এবং খাওয়া দাওয়া করতে হবে এতে তারা চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে বলে যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন।

বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ওসি আহসান হাবিব বলেন, বাংলাদেশের উপ-হাইকমিশনারের ছাড়পত্র থাকায় আটকে পড়া যাত্রীরা ফেরার সুযোগ পেয়েছেন। তবে নিষেধাজ্ঞার পর থেকে বাংলাদেশি কোনো পাসপোর্টযাত্রী নতুন করে ভারতে যায়নি কিম্বা ভারত থেকেও কেউ বাংলাদেশে আসেনি।

শুক্রবার সকালে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে গেলে দেখা যায় যাত্রীরা রৌদ্রের মধ্যে ৪/৫ ঘন্টা বসে আছে। আবার স্বাস্থ্য বিভাগের সামনে এবং ভিতরে এতটা ভীড় ছিল যে সেখানে স্বাস্থ্য বিধি মানার কোন বালাই নেই।

ভারত ফেরত যাত্রী ঢাকা উত্তরার ফিরোজ আলম বলেন,'আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে চিকিৎসা শেষে দুই লাখ টাকা খরচ করে দেশে ফিরেছি। কোলকাতায় নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনে তিন দিন ঘুরে অনুমতি সনদ নিয়ে ফিরেছি। এসে শুনছি এখন ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। আমাদের আসার সময় যদি করোনার তেমন কোন জীবানু দেহে প্রবেশ করে তবে র‌্যাপিড টেষ্ট করা হোক। যাদের জীবানু থাকবে তাদের কোয়ারেন্টাইনে দেওয়া হোক। 

নারায়নগঞ্জে বাড়ি ক্যান্সার রোগী মোকসেদ আলী(৬১) এর সাথে যাওয়া শেফালি আক্তার বলেন, 'আমার পিতা একজন ক্যান্সার রোগি।  সকাল ৮টার সময় তাকে নিয়ে দেশে ফিরি। এখন বেলা সাড়ে ১২টা, আমাদের এখানে বসিয়ে রেখেছে। এটা অমানবিক। এই গরমে এভাবে বসে থাকা কি সম্ভব আপনারা বলেন? স্বাস্থ্য বিভাগ এর কর্মীদের তাদের সমস্যার কথা বললেও তারা কর্নপাত করেনি। এটা কোন আচরন?  রোগী নিয়ে যদি ৪/৫ ঘন্টা রৌদ্রে বসে থাকতে হয় তাহলে তো রোগী মারাও যেতে পারে। আর আমাদের দেশে ফিরে যদি কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে তবে কেন ভারত থেকে দুতাবাসের অনুমতিপত্র, কোয়ারেন্টাইন সনদ আনতে হবে? 

চাপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা শিশির বলেন, আমার সব টাকা চিকিৎসায় খরচ হয়েছে। এখন শুধু যাতায়াত খরচ আছে। কিভাবে হোটেল ভাড়া দিব? আর কিভাবে খাওয়া দাওয়া করব? 

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় ট্রাক ড্রাইভাররা এদেশে প্রতিদিন প্রবেশ করছে আমরা বিভিন্ন গনমাধ্যেমে জানতে পারছি। তারা করোনা সনদ নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করছে কি? আমরা সরকারের দেওয়া সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। তবে সিদ্ধান্তটা কতদুর যৌক্তিক তা বিবেচনা করতে হবে? 

খুলনার কালিবাড়ী এলাকার লাবনী সরকার বলেন, যাদের রিপোর্ট পজিটিভ তাদের ১৪ দিন আর যাদের নেগেটিভ তাদেরও ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইন এটা ঠিক হচ্ছে না।

এদিকে গত মঙ্গল, বুধ ও বৃহস্পতিবার ভারত থেকে সর্বোমোট ফিরেছেন ৬৯১ জন আর ভারতে ফেরত গেছেন ১০৪ জন। শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বেনাপোল ইমিগ্রেশন দিয়ে পায় ২ শতাধিক যাত্রী ফিরে এসেছে। ভারতে ফিরেছে প্রায় ৩০ জন।  

উভয় দেশের মধ্যে আটকে পড়া পাসপোর্ট যাত্রীদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন সম্পর্কে নাভারণ সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্য বিধি মেনে যাত্রীদের স্থানান্তরের দায়িত্ব পালন করছি। 
কেআই//