নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে লাচ্ছা সেমাই
নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০১:০৯ পিএম, ২ মে ২০২১ রবিবার
আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে নোয়াখালীর সেমাই কারখানাগুলোতে স্যাঁতস্যাঁতে মেঝে, নোংরা পরিবেশে লাচ্ছা সেমাই তৈরি করছে এক শ্রেণীর মুনাফালোভী চক্র। জেলার বিভিন্ন এলাকায় গেড়ে বসা এসব চক্র প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্যের তোয়াক্কা না করেই বছরের পর বছর চালিয়ে যাচ্ছে তাদের কর্মকাণ্ড। সচেতন মহলের মতে ভোক্তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে বাঁচাতে আরও কঠোর ভাবে মনিটরিং প্রয়োজন।
লাচ্ছা সেমাই, ভোক্তাদের চোখে যতটা রুচিশীল আর মুখরোচক, ঠিক ততটাই স্যাঁতস্যাঁতে মেঝে ও নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে এসব সেমাই। আসন্ন ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে নোয়াখালী সদর ও বাণিজ্যিক শহর চৌমুহনীতে বিভিন্ন বেকারী ও অস্থায়ী কারখানাগুলোতে এই সেমাই তৈরি হচ্ছে চরম অযত্নে।
নোংরা পরিবেশ, সব কিছু মিলে মিশে একাকার, স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে পা দিয়ে বানানো হয় খামির, তারপর শ্রমিকের ঘামযুক্ত শরীরে ডান ও বাম হাতের কসরতে সেমাইর বল তৈরি করা হয়। গরুর চর্বি ও পামওয়েলের মিশ্রণে তথাকথিত ডালঢায় চুবিয়ে ভাজার জন্য প্রস্তুত করা হয়। শুরু হয় পোড়া তেলে সেমাই ভাজা, ভাজা শেষে শুকানো হয় সেমাই।
আবার শুকাতে দেয়া সেমাই থেকে চুষে পড়া কথিত ডালঢায় দেখা মেলে ইট, ময়লা আর্বজনা। সেই ডালঢা পুনরায় সেমাই বানানোর কাজে লাগানো হচ্ছে, এভাবে ভাজার কাজ চলে মাসের পর মাস।
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চকচকে ‘ঘিয়ে ভাজা’ নাম দিয়ে লাচ্ছা সেমাই ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে নোয়াখালীসহ আসপাশের জেলাগুলোতে। আর এসব সেমাই নানা রঙের মোড়কে বিভিন্ন কোম্পানীর নামে সোভা পাচ্ছে দোকানগুলোতে। এদিকে ক্রেতারা বলছেন, তারা জানে না কিভাবে সেমাই তৈরি করা হচ্ছে।
তবে ঘামযুক্ত ও নোংরা পরিবেশে তৈরি এই লাচ্ছা সেমাই মুখোরচক হলেও স্বাস্থ্যঝুকি মারাত্মক বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সেমাই কারখানা মালিকদের দাবি তাদের রয়েছে বিএসটিআই লাইসেন্স। এসব কারখানা মালিকদের সিন্ডিকেটে জিম্মি নোয়াখালী ও আসেপাশের জেলার জনগণ। আর প্রশাসনের নাকের ডগায় কিভাবে চলছে এসব কারখানা, প্রশ্ন সচেতন মহলের। এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হয়নি মালিকপক্ষ।
তবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দ্রুত এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে জানান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক।
বছর জুড়ে অভিযান হয়, আসে নতুন বছর, খাদ্য জালিয়াতি চক্র থেকে নিস্তার মেলেনা ভোক্তাদের। এজন্য সচেতনতার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষ আরও কঠোর হবে এমনটাই প্রত্যাশা এই অঞ্চলের সচেতন মানুষের।
এএইচ/