ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

আইইবি’র ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী কাল

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:১৮ পিএম, ৬ মে ২০২১ বৃহস্পতিবার

আগামীকাল শুক্রবার (০৭ মে) দেশের প্রকৌশলীদের একমাত্র জাতীয় পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এর ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দিবসটিকে আইইবি ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’ হিসেবে প্রতিবছর উৎসবমুখর পরিবেশে পালন করে আসছে। তবে এবছর করোনা মহামারির কারণে আয়োজন সীমিত পরিসরে।

‘উন্নত জগত গঠন করুন’ এ সুমহান আদর্শকে সামনে রেখে জাতীয় উন্নয়ন তথা দেশ গড়ার দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে ১৯৪৮ সালের ৭ মে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন যাত্রা শুরু করে। আইইবি এই দেশের প্রকৌশলীদের একমাত্র জাতীয় পেশাজীবী প্রতিষ্ঠান। সেই সঙ্গে প্রকৌশলীদের প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠানও বটে। 

১৯৪৮-এ পাকিস্তান সৃষ্টির পর আইইবি-ই একমাত্র জাতীয় প্রতিষ্ঠান, যার সদর দফতর বাংলাদেশে অর্থাৎ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম কাউন্সিল সভা অনুষ্ঠিত হয় ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ (বিজয়ের মাত্র ১০ দিনের মধ্যে), সেই সভাতেই ‘ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ার্স পাকিস্তান’ নাম পরিবর্তিত হয়ে ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ নামকরণ করা হয়। আইইবি প্রকৌশলীদের গর্ব এবং অহংকার।

কোভিড-১৯ ভাইরাসের কারণে এবছর সীমিত পরিসরে কিছু অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। এছাড়া অনলাইনের মাধ্যমেও বেশ কিছু অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। যেখানে দেশের প্রকৌশলীরা অংশগ্রহণ করবেন। আইইবি’র বিভিন্ন প্রকৌশল বিভাগ, কেন্দ্র-উপকেন্দ্র এবং ওভারসীস চ্যাপ্টারসমূহেও ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ডে’-এর কর্মসূচি পর্যায়ক্রমে অনুষ্ঠিত হবে।

আইইবি’র ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মহামান্য রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বানী দিয়েছেন। বানীতে তাঁরা আইইবি’র সকল প্রকৌশলীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন এবং ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সফলতা কামনা করেছেন। 

এ উপলক্ষে আইইবি’র সভাপতি প্রকৌশলী মো. নূরুল হুদা এবং সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু) বলেন, প্রকৌশল শিক্ষার মানোন্নয়ন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধন, বিশ্বের নিত্য নতুন, আধুনিক প্রযুক্তির সাথে প্রকৌশলীদের পরিচয় করে দেয়া, বিদেশী প্রযুক্তিকে দেশোপযোগী করে প্রয়োগ, বিভিন্ন কারিগরি ইস্যু, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সরকারকে পরামর্শ ও সিদ্ধান্ত প্রণয়নে সহযোগিতা করাসহ প্রকৌশলীদের মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশ সাধনে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন ৭৩ বছর যাবৎ অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিতে আইইবি সব সময় বদ্ধ পরিকর।

ইঞ্জিনিয়ার্স ডে উপলক্ষে প্রকৌশলীদের কিছু আশু সমস্যা সমাধানকল্পে সরকারের কাছে কিছু দাবি জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। 

দাবিগুলো হলো- কৃত্য পেশাভিত্তিক প্রশাসন ও মন্ত্রণালয় গঠন করা। প্রকৌশল সংস্থাগুলোতে সংস্থা প্রধান পদে প্রকৌশল পেশায় অভিজ্ঞ প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ বা দায়িত্ব প্রদানসহ প্রকৌশল সংস্থার শীর্ষপদ এবং বিভিন্ন প্রকল্পে পরিচালক পদে প্রকৌশলীদের পদায়ন নিশ্চিত করা। একই সাথে বিভিন্ন সরকারি কোম্পানিগুলোতে চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে প্রকৌশলীদের মনোনয়ন দেয়া।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ সকল প্রকৌশল সংস্থাগুলোর জন্য আলাদা আলাদা ক্যাডার গঠন করা। পূর্বতন বিসিএস (টেলিকম) ক্যাডার’কে টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি ক্যাডারে রূপান্তর করা, টেক্সটাইল ক্যাডার গঠন করা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও প্রকৌশল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রকৌশলী উইং সৃষ্টি করা। রাজউক, সিডিএ, কেডিএ, আরডিএ ও কক্সডিএ-এর বহুতল ভবন নির্মাণে অনুমোদনকারী কমিটিতে আইইবি’র প্রতিনিধি অন্তর্ভূক্ত নিশ্চিত করা। 

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রকৌশল সংস্থাসমূহে প্রশিক্ষণ ও গবেষণায় পর্যাপ্ত বরাদ্দ প্রদান। বেসরকারি প্রকৌশলীদের চাকুরির নীতিমালাসহ সর্বনিম্ন বেতন কাঠামো নির্ধারণ এবং অধিকতর দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণের সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ। পৌরসভাসমূহে দক্ষ কারিগরি জনবল গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের জন্য এলজিইডির ন্যায় একটি আলাদা প্রকৌশল অধিদপ্তর সৃষ্টি করে তাদের চাকরি উক্ত অধিদফতরে ন্যাস্ত করা। 

রাজউকসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে বাংলাদেশ গেজেটের নিয়ম বহিভূর্ত এবং জ্যেষ্ঠতা লঙ্গন করে বিভিন্ন পদে পদোন্নতির আদেশ বাতিল ও এর পুনরাবৃত্তি রোধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পলিটেকনিক শিক্ষকদের বর্তমান চাকরির পদবী পরিবর্তন করা। 

এছাড়াও বেকার প্রকৌশলীদের চাকরির ব্যবস্থা করা এবং বেসরকারি উদ্যোগতাদের জন্য বিনা জামানতে অল্প সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা। এ বিষয়গুলো দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান আইইবি’র সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক। (বিজ্ঞপ্তি)
এএইচ/এসএ/