তামাকের ওপর কর বৃদ্ধির অনুরোধ বিশিষ্ট চিকিৎসকদের
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:২৩ পিএম, ৭ মে ২০২১ শুক্রবার
জনস্বাস্থ্য রক্ষার্থে তামাক-কর বৃদ্ধির জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছেন দেশের প্রখ্যাত ১২১ জন চিকিৎসক। ঢাকা আহছানিয়া মিশনের উদ্যোগে এক যৌথ বিবৃতিতে চিকিৎসকরা এ অনুরোধ করেন।
তারা বলেছেন, বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর প্রধান আটটি কারণের ছয়টির সাথেই তামাক জড়িত। গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস)-এর রিপোর্ট মোতাবেক, তামাক ব্যবহারকারীর প্রায় অর্ধেক মারা যান তামাকের কারণে। তামাক ব্যবহারকারীদের তামাকজনিত রোগ যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক, সিওপিডি বা ফুসফুসের ক্যান্সার হবার ঝুঁকি ৫৭ভাগ বেশি এবং তামাকজনিত অন্যান্য ক্যান্সার হবার ঝুঁকি ১০৯ভাগ বেশি। একারণে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১ লাখ ৬১ হাজারেরও বেশি মানুষ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার জনিত রোগে মৃত্যুবরণ করেন।
বিবৃতি বলা হয়, প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে ৩৫ভাগ তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করেন। সংখ্যার হিসেবে যা সাড়ে তিন কোটিরও বেশি। আবার ১৩ থেকে ১৫ বছরের অপ্রাপ্তবয়স্করাও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার থেকে পিছিয়ে নেই। শতকরার হিসেবে সেটিও প্রায় ৬ দশমিক ৯ ভাগ।
যারা ধূমপান করেন না, কিন্তু পরোক্ষভাবে ধূমপানের ক্ষতির শিকার হন, এমন মানুষের সংখ্যা সামগ্রিকভাবে মোট ধূমপায়ীর সংখ্যার চেয়েও বেশি। সংখ্যার হিসেবে তা প্রায় ৪ কোটি, যা প্রত্যক্ষ ধূমপায়ীর চেয়ে বেশি।
তারা বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি তামাক ব্যবহারকারী দেশগুলোর অন্যতম। এ দেশে সিগারেটের মূল্য অত্যন্ত কম, বিড়ি আরও সস্তা।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য মতে, ২০১৫-১৬ সালের তুলনায় ২০১৭-১৮ সালে মাথাপিছু জাতীয় আয় (নমিন্যাল) বেড়েছে ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ। অথচ এসময়ে বেশীরভাগ সিগারেটের দাম হয় প্রায় অপরিবর্তিত থেকেছে না হয় সামান্য বেড়েছে। ফলে বর্তমানে সিগারেট অধিক সহজলভ্য হয়ে পড়ছে। এজন্য ট্যাক্স বৃদ্ধির মাধ্যমে সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি করা জরুরী।
বলা হয়, তামাক কোম্পানিগুলো থেকে সরকার বছরে ২২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব পায়। অথচ বছরে তামাকের স্বাস্থ্য ক্ষতিই হয় ৩০ হাজার কোটি টাকার উপরে। চলতি বছরের স্বাস্থ্য খাতের বাজেটই ২৯ হাজার কোটি টাকা। তাহলে দেখা যাচ্ছে, তামাকের কারণে ক্ষতির পরিমাণ স্বাস্থ্য খাতের বাজেটের চেয়েও বেশি।
২০১৩ সালের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটির সংশোধন খুবই জরুরি উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে জোরালো আইন প্রণয়ন ও বিদ্যমান তামাক-কর কাঠামোর সংস্কারই পারে দেশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত করতে।
বিবৃতি দাতা চিকিৎসকরা হলেন- অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক এমপি, অধ্যাপক ডা. আবদুল আজিজ এমপি, অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত এমপি, অধ্যাপক ডা. ওবায়দুল বাকী, অধ্যাপক ডা. অরূপ রতন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. আবদুস সালাম খান, অধ্যাপক ডা. বিশ্বাস আখতার হোসেন, অধ্যাপক ডা. শেখ মো. আবু জাফর, অধ্যাপক ডা. আ এম এম শরিফুল আলম, অধ্যাপক ডা. কামরুজ্জামান চৌধুরী, অধ্যাপক কর্ণেল ডা. মো. ইউসুফ আলী, অধ্যাপক ডা. আবুল আহসান (দিদার), অধ্যাপক লে. কর্ণেল (অব.) ডা. মো. ফারুক মিয়া, অধ্যাপক ডা. আ ফ ম আনোয়ার হোসেন, অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল মোবিন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. ফৌজিয়া সোবহান, অধ্যাপক ডা. সুরাইয়া সুলতানা প্রমুখ।
সূত্র : বাসস
এসএ/