ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১৮ ১৪৩১

কলমের সাথে মানুষের সম্পর্ক নিবিড়

আ নো য়া র  কা জ ল

প্রকাশিত : ০৩:৪০ পিএম, ৯ মে ২০২১ রবিবার

কলম আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে একটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, যার উপযোগিতা রয়েছে সবখানে স্কুল-কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে অফিস-আদালত বাড়ি, দোকান,ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাজার-ঘাটসহ লেখালেখির কাজে কলম অতীব গুরুত্বপূর্ণ অক্ষর জ্ঞান শিক্ষাভাবের অদান-প্রদান, ভাষা শিক্ষা তথা  জ্ঞান অর্জন জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রচার-প্রসারের মাধ্যম হিসাবে কলমের ভূমিকা অনন্য

মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশ, জ্ঞান ভিত্তিক আলো ঝলোমল পৃথিবী বিনির্মাণে কলম সভ্যতার পথপ্রদর্শক কলম দিয়েই তৈরি হয়েছে বা লেখা হয়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সৌধ তাবৎ দুনিয়ার সকল জ্ঞানী-গুনী শিল্পী-সাহিত্যিক তথা জ্ঞান অন্নেষী শিক্ষার্থীদের লেখালেখি শিক্ষা-দীক্ষার বাহন হলো কলম সৃষ্টির ঊষালগ্ন থেকেই কলমের সাথে মানুষের সম্পর্ক নিবিড় 

ঐশি মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে সুরা আলাকে আল্লাহ সোবহানাহ  তায়ালা  বলেন-

 ’পড়, তোমার প্রভূর নামে যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন পাঠ করো, তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন আলাক (জমাটবাঁধা রক্তপিন্ড) থেকে পড়,আপনার রব (প্রতিপালক) মহিমান্বিত যিনি কলম দিয়ে শিক্ষা দিয়েছেন

মানবতার মহান মুক্তির দিশারি মুহাম্মদ (সা:) তিনি বলেছেন- ‘আল্লাহ তা'আলা সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করেন এবং তাকে লেখার নির্দেশ দেন সে মতে কলম কেয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবে, সব লিখে ফেলে’ (মুসনাদে আহমাদ: /৩১৭)

যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে কলমেওপ্রযুক্তির উৎকর্ষে হাতে হাতে মোবাইল কিংবা ল্যাপটপ,কম্পিউটার অনেকটাই কলমের কাজ করে দিচ্ছে, তাই বলে কলমের চাহিদা বা প্রয়োজন এতটুকুও কমেনি আকার আকৃতি প্রকৃতি,রুপ,বৈশিষ্ট্য,গুন-মান পরিবর্তিতও পরিবর্ধিত হয়েছে কিন্তু মহাকালের অত্যাধুনিকতার তরঙ্গে কর্ম বৈশিষ্ট্য অটুট থেকে বদলেছে তার খোলস

আবিষ্কারের ইতিহাস

আদিম যুগে মানুষ যখন পাহাড়ের গুহায় বসবাস করত তখন মনের ভাব প্রকাশের জন্য গুহার দেয়ালে কোন সূক্ষ্ম জিনিস দিয়ে ছবি আঁকতো বা হিজিবিজি আঁকতো আবার অনেকসময় গাছের পাতার রস বা শিকারের রক্ত দিয়ে আঁকিবুকি করতো তার অনেক শতাব্দি পর মানুষ যখন কিছুটা সভ্য হতে শুরু করল তখন কাদা মাটির পাটায় বা নরম পাথরে লেখা শুরু করে দৈনন্দিন দরকারী এই কলম কিন্তু একদিনেই আবিষ্কার হয়নি এর আবিষ্কারের পিছনে আছে এক বিস্তৃত ইতিহাস

কলমের ইতিহাস প্রায় হাজার বছরের পুরানো ধারণা করা হয়, প্রাচীন মিশরীয়রা সর্বপ্রথম কলম ব্যবহার শুরু করে সে সময় অবশ্য আজকের মত মসৃণ কোন কাগজ ছিল না সে সময় লেখালেখি করা হত বিভিন্ন গাছের পাতা, বাকল এবং পশুর চামড়ার উপর কলম হিসেবে তারা ব্যবহার করত নলখাগড়া, শর বা বেণু, বাঁশের কঞ্চি অথবা ফাঁপা খণ্ড এসব খণ্ড কলমের মতো করে কেটে সূচালো করা হত সূচালো অংশটি কালির মধ্যে চুবিয়ে লেখা হত কালিও ছিল বিভিন্ন গাছের রস এবং বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক উপাদান দ্বারা প্রস্তুত

নলখাগড়া জাতীয় কলমের ব্যবহার চলে বহুকাল দীর্ঘকাল পর প্রায় শতকের দিকে এসে কঞ্চি বা নলখাগড়ার জায়গা দখল করে পাখির পালক রাজহাঁসের পালক ছিল সে যুগের কলম তৈরির প্রধান উপকরণ পালকের মাথা সূক্ষভাবে সূচালো করা হত যাতে লিখতে সুবিধা হয় প্রাচীন মিসরীয়রা  একটি কাঠির ডগায় তামার নিবের মত বা ধাতব কিছু একটা পড়িয়ে লেখা শুরু করে

গ্রীকরা প্রায় 'হাজার বছর আগে রীতিমতো লেখালেখি শুরু করে দিয়েছিল তারা কলম তৈরি করত হাতির দাঁত বা জাতীয় কিছু দিয়ে যার নাম ছিল স্টাইলাস সেজন্য এখনো লেখার ধরনকে স্টাইল নামে অভিহিত করা হয় এদিকে মধ্যযুগের পর যখন কাগজ শিল্পের ব্যাপক উন্নতি হলে তখন পাখির পালকের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়

প্রাচীনকালের এমন অনেক কলম রয়েছে যা এখন শুধুমাত্র জাদুঘরেই শোভা পায় চলুন জেনে নেওয়া যাক এমন কিছু কলম সম্পর্কে

স্টাইলাস

স্টাইলাস ছিল এক ধরনের ব্রোঞ্জের শলাকা বিশেষ অনেক সময় ব্রোঞ্জের শলাকাটি হাতির দাঁতের সাথে সংযুক্ত করে এই জাতীয় কলম তৈরি করা হত ব্রোঞ্জের শলাকার পোশাকি নাম ছিল স্টাইলাস সেই জন্য বর্তমানে লেখার ধরনকে স্টাইল বলা হয় ইতিহাস থেকে জানা যায়, স্বয়ং জুলিয়াস সিজার এই কলম ব্যবহার করতেন এই কলম দ্বারা তিনি কাসকাকে আঘাত করেছিলেন প্রায় চার হাজার বছর আগে গ্রীকরা কলম ব্যবহার করত

খাগের কলম

খাগড়া একধরনের ঘাস জাতীয় উদ্ভিদ এটিকে অনেক সময় নলখাগড়া বলা হয়ে থাকে এই খাগড়ার একদিকে সরু করে কেটে কলম তৈরি করা হতো এই কলমের দৈর্ঘ্য ছিল থেকে ইঞ্চি এর লিখন পদ্ধতি অনেকটা কুইলের এর মত এর মাঝের ফাঁকা অংশে কালি ভরা হত একবার কালি ভরলে বেশ কয়েক পৃষ্ঠা অনায়াসেই লেখা যেত সে সময় খাগের কলমেরও বিভিন্ন রকম প্রকার ছিল

বন গাছের কলম

খাগড়া বা নলখাগড়া একধরনের উদ্ভিদ যার আকৃতি অনেকটা বাঁশের কঞ্চির মতই সাধারণত একটি বনে জন্মাতো বলে একে বন খাগড়া বলা হত আমাদের দেশে গ্রাম অঞ্চলে এখনো প্রচুর নলখাগড়া জন্মায় একসময় বন গাছের দ্বারা তৈরি এই কলম ব্যবহার করা হতো এই খাগড়ার মাঝে কোনো ফাকা অংশ নেই এক ধরনের শোষক বস্তু দ্বারা পরিপূর্ণ থাকত

সেজন্য বন কলম কিছুক্ষণ কালির দোয়াতে চুবিয়ে রাখলে এটি কালি শোষণ করে রাখতে পারত এটির কান্ড ফাঁপা, অনেকটা এখনকার বিভিন্ন রংয়ের খাতায় দাগ টানার জন্য যে কলম আমরা ব্যবহার করি তার ভিতরের স্পঞ্জের শিষের মত বলে সহজে কালি শুষে নিত এরপর সেটা দিয়ে লেখালেখি করা হত কালি শেষ হয়ে গেলে পুনরায় দোয়াতে চুবিয়ে নেয়া হত

বাঁশের কঞ্চির কলম

কলমের বিবর্তন ইতিহাসে এমন একটি সময় ছিল যখন বাঁশের কঞ্চি দিয়েও কলম তৈরি করা হত বাঁশের কঞ্চির কলমের ব্যবহার ছিল বন কলমের সমসাময়িককালে এর ব্যবহার বেশ কিছুকাল আগেও চোখে পড়ত বাঁশের কঞ্চিকে থেকে ইঞ্চি লম্বা করে কেটে এর এক প্রান্ত তীক্ষণভাবে সূচালো করা হত কঞ্চির মাঝখানের ফাঁকা অংশ খালি ভরে লেখালেখি করা হত কালি শেষ হয়ে গেলে পুনরায় কালি ভরে নেয়া হত

কুইল বা পালকের কলম

পাখির পালক এর দ্বারা তৈরি কলমকে কুইল  বলা হয় সাধারণত রাজহাঁস কিংবা বড়সড় পাখি ডানার পালক দ্বারা ধরনের কলম তৈরি করা হয় নিব কলম এবং ঝর্না কলম আসার আগে কুইল ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় এই কলম তৈরির উদ্দেশ্যে বসন্তের সময় পাখির ডানার শেষ দিকের / টি পালক তুলে নেয়া হত সাধারণত, পাখির বাম ডানার পালক বেশি ব্যবহার হত কারণ, এগুলো বাম দিক থেকে বাইরের দিকে একটু বাঁকানো থাকে, যার কারণে ডানহাতি লেখকদের জন্য ব্যবহার করা সহজ হত পালকের মাঝখানে যে ফাঁকা অংশ থাকে সেটা কালিদানি হিসেবে কাজ করে কৈশিক পরিচালন প্রক্রিয়ায় কালির পরিচলন হত কুইল বা পাখির পালকের কলম মধ্যযুগের বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল মধ্যযুগে পার্চমেন্ট বা চামড়ার কাগজের উপর কলম দ্বারা লেখা হতো পালকের কলম বা কুইল আসার পরে খাগড়া কলমের ব্যবহার বেশ কমে আসে এরপর একপর্যায়ে নলখাগড়ার কলম বিলুপ্ত হয়ে যায়

নিব কলম

সাধারণত একটি ধাতব নিব কাঠের হাতলের সাথে লাগিয়ে এই কলম তৈরি করা হত এর নিবটি দেখতে ঝর্ণা কলমের মতই, তবে এতে কালি জমা রাখার কোন ব্যবস্থা ছিল না কালদানি না থাকার কারণে প্রতিবার লেখার পূর্বে এটি কালির পাত্রে চুবিয়ে নিতে হত ঝর্না কলমের তুলনায় এই কলমের সুবিধা হলো, এই কলম দিয়ে ঘন কালি এবং ধাতব কালি ব্যবহার করা যায় ঝর্ণা কলমে ঘন কালি ব্যবহার করলে জমে গিয়ে আটকে যায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনও নিব কলমের ব্যবহার দেখা যায় প্রধানত ক্যালিওগ্রাফি, অলংকরণ কমিকস আঁকার ক্ষেত্রে এই কলম ব্যবহার করা হয়

কালির কলম

সাধারণত এশীয় লিপিবিদদের মধ্যে ঐতিহ্যগতভাবে এই কলম ব্যবহার করার প্রচলন দেখা গিয়েছে ধরনের কলমকে ব্রাশ বা বুরুশ বলা হয় কলমের মূল অংশটি সাধারণত বাঁশ দিয়ে তৈরি করা হত এছাড়া বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে দুর্লভ উপকরণ যেমন লাল চন্দন গাছ, হাতির দাঁত, সোনা, রূপা ইত্যাদিও ব্যবহার করা হতো কলমের শীর্ষ ভাগের ব্রাশটি তৈরি করা হত বিভিন্ন পাখির পালক বা বিভিন্ন পশুর লোম দ্বারা এককালে চীন এবং জাপানের নতুন জন্ম নেওয়া শিশুদের মাথার চুল দ্বারা এই বুরুশ তৈরি করা হতো

আধুনিক কলমের ইতিহাস

আধুনিক কলম তৈরির এক দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে আধুনিককালে সর্বপ্রথম ১৭৮০ সালে ইংল্যান্ডে কলম আবিষ্কৃত হয় এরপর ১৮৮৪ সালে ওয়াটারম্যান আবিষ্কার করেন ফাউন্টেনপেন তখন এর নিব তৈরি করা হতো ১৪ ক্যারেট সোনা এবং ডগা তৈরিতে লাগত ইরিডিয়াম এরপর ইংল্যান্ড ছাড়াও বিভিন্ন দেশে ফাউন্টেনপেন তৈরি হতে শুরু করে বিংশ শতাব্দীতে এসে তৈরি হয় বলপয়েন্ট পেন বা বলপেন সর্বপ্রথম বলপেন আবিষ্কার হয় ১৯৮৮ সালের ৩০ অক্টোবর জন লাউড নামক একজন পত্রিকার সম্পাদক সর্বপ্রথম এই কলম আবিষ্কার করেন তবে তার আবিষ্কার স্বীকৃতি পায়নি ১৯৪৩ সালে লেডিসলাস বিরো এবং তার ভাই জর্জের হাত ধরে বলপয়েন্ট পেন বাজারকৃত হয় এবং আবিষ্কারের স্বীকৃতি পায়

ঝর্ণা কলম বা ফাউন্টেন পেন

বিশ্বে প্রথম ঝর্না কলম আবিষ্কৃত হয় ৯৫৩ সালে হাত এবং কাপড় যাতে কালি লেগে নষ্ট না হয়ে যায়, সেই জন্য মিশরের সম্রাট মা' আল-মুয়িজ একটি কলম আবিষ্কারের কথা চিন্তা করলেন সেই সময়ই এই কলম তৈরি হয় অনেকে মনে করেন ফাউন্টেন পেন থেকে ঝর্না কলমের বাংলা অনুবাদ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ফাউন্টেন পেন বা ঝর্ণা কলম এই কলমের পানি ভিত্তিক তরল পদার্থ দ্বারা নিবের সাহায্যে লেখা হয় কলমের ভেতরে কালিদানিতে থাকা কালি কৈশিক পরিচালন প্রক্রিয়ায় এবং অভিজাত পরিণত হয়েছে 

বলপয়েন্ট কলম

 বলপয়েন্ট কলম - এই কলমের ডগায় বা নিবে .-. মি.মি. আকারের পিতল, স্টীল বা টাংস্টেন কার্বাইডের তৈরি একটি ছোট্ট শক্ত বল বা গোলক থাকে যা কলমের ভেতরে থাকা কালিকে কাগজ বা যার উপরে লেখা হচ্ছে তাতে মাখাতে সাহায্য করে বলপয়েন্ট কলমে যে কালি ব্যবহার করা হয় তা একটু ঘন প্রকৃতির এবং তা কাগজের সংস্পর্শে আসতে না আসতেই শুকিয়ে যায় এই নির্ভরযোগ্য কলমগুলির দামও খুব কম ফলে সহজেই নিত্যদিনের লেখালেখির কাজে বলপয়েন্ট কলম সবচেয়ে জনপ্রিয় উপকরণ হয়ে উঠেছে

রোলারবল বা জেল কলম

রোলারবল বা জেল কলম - এই কলমের ডগায়ও বলপয়েন্ট কলমের মত বল থাকে কিন্তু এই কলমের কালি বলপয়েন্ট কলমের কালির চেয়ে পাতলা বা কম ঘন এই কম ঘন কালি সহজেই কাগজ শুষে নিতে পারে এবং কলমও অনেক মসৃণভাবে চলতে পারে বলপয়েন্ট কলমের সুবিধা এবং ঝর্ণা কলমের কালির ভাবটাকে একত্রিত করার উদ্দেশ্যে জেল কলমের সূত্রপাত হয়েছিল জেল কালি বিভিন্ন রঙের হয়, এমনকি ধাতব পেইন্ট ঝিকিমিকি রঙেরও জেল কালি পাওয়া যায়

 ফেল্ট-টিপ কলম বা মার্কার কলম

 এই কলমে আঁশ জাতীয় পদার্থের তৈরি স্পঞ্জের মত ডগা থাকে সবচেয়ে ছোট এবং চিকন ডগার মার্কার কলম দিয়ে কাগজের উপরে লেখা হয় মাঝারি আকারের ডগা সমৃদ্ধ মার্কারগুলো বাচ্চাদের আঁকাআঁকির জন্য ব্যবহৃত হয় বড় আকারের ডগার মার্কারগুলো অন্য মাধ্যমে (যেমন কার্ডবোর্ডের বাক্স বা হোয়াইটবোর্ডে) লেখার কাজে ব্যবহার হয় উজ্জ্বল এবং স্বচ্ছ কালিসহ চওড়া ডগার মার্কার লেখা দাগানোর কাজে ব্যবহার করা হয় এদেরকে হাইলাইটারও বলা হয় বাচ্চাদের জন্য বা হোয়াইটবোর্ডে লেখার জন্য যে মার্কারগুলো তৈরি করা হয়, সেগুলোর কালি সাধারণত অস্থায়ী ধরনের হয়

প্রায় সুদীর্ঘ আড়াই হাজার বছরের কাল পরিক্রমায় বাঙালির জাতির রয়েছে সোনালি ইতিহাস, উজ্জ্বল সংস্কৃতি গৌরবময় স্বাতন্ত্রিক ঐতিহ্য দিনে দিনে সে গৌরবগাঁথা ফুলে ফলে সুশোভিত  হয়ে সৌরভ ছড়িয়েছে প্রাচীনকাল থেকে আমাদের কিছু নিজস্ব সংস্কৃতি ঐতিহ্যবাহীবাহী ব্যবহার্য জিনিস বহতা নদীর মতো অত্যাধুনিক যুগসন্ধি ক্ষণের মোহনায় এসে পৌঁছেছে আমরা বিভিন্ন ঐতিহ্যিক জিনিসপত্র সংস্কৃতি ব্যবহারিক  জীবনে যুগ যুগ ধরে ব্যবহার, ধারণ লালন ব্যবহার করছি

সুদীর্ঘদিন  ধরে ব্যবহৃত এই সকল জিনিস বাঙালি সংস্কৃতির এক অনিবার্য  উপাদান   ঐতিহ্যের ধারকে পরিণত হয়েছে  সময়ের পালাবদলে  সমাজ বদলায়, সংস্কৃতি হারায় ঐতিহ্য সে স্রোতের ধাক্কায় ব্যবহার্য সকল ঐতিহ্যবাহী জিনিসপত্রের অধিকাংশই আজ বিলুপ্তির পথে

কলম সে স্বর্নালি স্মারকের অন্যতম উদাহারণধীরে ধীরে প্রয়োজনীয় জিনিসটির ক্রমবিকাশ হচ্ছে, অন্যদিকে ব্যবহার কমে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকছে। ফলে আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যিক লিখনী মাধ্যম কলম

এএইচ/