ঢাকা, মঙ্গলবার   ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

‘সমৃদ্ধ বাংলাদেশ` প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগ প্রশংসিত’

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৫:২৪ পিএম, ১২ মে ২০২১ বুধবার

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা: মোঃ এনামুর রহমান বলেছেন ভৌগলিক অবস্থান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব, ঘনবসতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশকে প্রতিনিয়ত কোনো না কোনো প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগের মোকাবেলা করতে হয়। তাছাড়া ২০১৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ফণী ও বুলবুল এবং ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আম্পান মোকাবেলা করতে হয়েছে বাংলাদেশকে। এসব ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় সরকারের পূর্বপ্রস্তুতি থাকায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি অনেক কম হয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনসহ সামাজিক নিরাপত্তা অর্জনে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে করেছে সমৃদ্ধ । দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে সারাবিশ্বে। 

প্রতিমন্ত্রী গতকাল (রাতে) ঢাকায় 'Risk Informed Early Action Partnership -Commitment to action(REAP)' শীর্ষক ভার্চুয়াল ডায়ালগে এসব কথা বলেন ।

যুক্তরাজ্যের মিনিস্টার ফর বিজনেস এনার্জি এন্ড ক্লিন গ্রোথ এন্ড ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন অন এডাপ্টেশন এন্ড রেজিল্যান্স ফর দ্যা কপ-২৬ প্রেসিডেন্সি Anne Marie Trevelyan এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন জ্যামাইকা'র হাউজিং, আরবান রিনিউওয়াল, এনভায়রনমেন্ট এন্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ বিষয়ক মন্ত্রী Pearnel p Charles Jr, জাপানের গ্লোবাল এনভারমেন্টাল অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভাইস মিনিস্টার Kondo Tomohiro, ফ্রান্সের ইউরোপ ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ক্লাইমেট অ্যাম্বেসেডর Stephanie Crouzat, জার্মানির পার্লামেন্টারি স্টেট সেক্রেটারি টু দ্যা ফেডারেল মিনিস্টার ফর  ইকনোমিক কো-অপারেশন অন্ড ডেভেলপমেন্ট Maria Flachsbarth, মিশরের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ডাইরেক্টর অফ এনভায়রনমেন্ট এন্ড সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট ডিপার্টমেন্টের অ্যাম্বেসেডর Mohammad Gad এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীন ।

প্রতিমন্ত্রী বলেন,দুর্যোগ ঝুকি-হ্রাস ও দুর্যোগ মোকাবেলা বিষয়ক কার্যক্রমকে সমন্বিত, লক্ষ্যভিত্তিক ও শক্তিশালী করা এবং সব ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় কার্যকর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১৫, জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা ২০১৬-২০২০, ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা-২০১১, মৃতদেহ ব্যবস্থাপনা নির্দেশিকা-২০১৬, দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশাবলী (এসওডি) ২০১৯ ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ দলিল প্রণীত হয়েছে । এর মাধ্যমে বিভিন্ন পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে প্রতিবন্ধী, নারী, বয়স্ক ব্যক্তি ও শিশুসহ দুর্গত জনগোষ্ঠীর চাহিদা নিরুপন ও বাস্তবায়ন। ২০১৫-২০৩০ সাল মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য প্রণীত হয়েছে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)। উল্লেখিত আইন,বিধি, পরিকল্পনা ও নীতিমালার আলোকে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা ও সেন্দাই ফ্রেমওয়ার্ক এর লক্ষ্যমাত্রা বিবেচনায় নিয়ে সরকার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদী টেকসই উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

এনামুর রহমান বলেন,জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দুর্যোগ পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, আসন্ন দুর্যোগের কবল থেকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণের জন্য বেতার, টেলিভিশন এবং স্থানীয়ভাবে দুর্যোগ প্রবণ এলাকায় মাইকিং এর মাধ্যমে প্রচারণার পাশাপাশি দ্রুত ও অধিকতর কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে ইন্টারেক্টিভ ভয়েস রেসপন্স (IVR) চালু করা হয়েছে । মোবাইল ফোন নম্বর থেকে ১০৯০(টোল ফ্রি) নম্বরে ডায়াল করে দুর্যোগের আগাম বার্তা পেয়ে জনগণ পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে । এ বার্তাকে আরো অধিকতর জনবান্ধব করার লক্ষ্যে কমিউনিটি রেডিওর মাধ্যমে স্থানীয় ভাষায় বার্তা প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে ।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোহসীন বলেন, দুর্যোগে জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে দুর্যোগ সহনীয় টেকসই নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় পরিকল্পিতভাবে কাঠামোগত ও অকাঠামোগত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে । স্বাধীনতার পর উপকূলীয় অধিবাসীদের জান-মাল ও সার্বিক ক্ষয়ক্ষতি লাঘব করার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এটিকে সরকারি কর্মসূচি হিসেবে গ্রহণ করেন। এভাবেই ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) পরিপূর্ণভাবে যাত্রা শুরু করে এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এক নতুন মাত্রা লাভ করে। বর্তমানে প্রায় ৭৪ হাজার সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক  উপকূলীয় এলাকায় কাজ করছেন। সিপিপি বিশ্বব্যাপী সেরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের একটি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে । দুর্যোগ প্রস্তুতি, প্রশমন ও ব্যবস্থাপনার সাথে সাথে বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে বিকশিত হয়েছে। 

মোঃ মোহসীন আন্তর্জাতিক এ ভার্চুয়াল ডায়লগে বিশ্বের অন্যান্য দেশ ও প্রতিষ্ঠানের উত্তম চর্চাসমূহ সকলের মাঝে বিনিময় করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান যেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় আরো উন্নতি সাধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দুর্যোগ মোকাবেলায় সুসংহত সাফল্যের জন্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বিধায় তিনি এ ফোরামটির মাধ্যমে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য সকলকে একযোগে কাজ করার অনুরোধ জানান।

আরকে//