ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

ভারতে ‘তকতের’ আঘাতে ২১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৯৬ জন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৩৬ পিএম, ১৮ মে ২০২১ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:১৬ পিএম, ১৮ মে ২০২১ মঙ্গলবার

করোনায় পর্যুদস্ত ভারতের পশ্চিমাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় তকতের আঘাতে মঙ্গলবার অন্তত ২১ জন মারা গেছে। নিখোঁজ রয়েছে ৯৬ জন।

আরব সাগরে সৃষ্ট মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় তকতের আঘাতে গাছপালা উপড়ে গেছে, মোবাইল টাওয়ার ধসে পড়েছে। এছাড়া খুঁটি উপড়ে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিহীন অবস্থায় রয়েছে হাজার হাজার লোক। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। এগুলোকে মনে হচ্ছে একেকটা নদী।

এদিকে ঝড় আঘাত হানার সময় ঘন্টায় বাতাসের গতিবেগ ১৮৫ কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল।

স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বিগত ৩০ বছরের মধ্যে এটি সবচেয়ে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়।

ভারতীয় নৌ বাহিনী বলছে, মুম্বাই উপকূলে তেল কূপ খননের কাজে নিয়োজিত একটি জাহাজ প্রচন্ড ঢেউয়ের তোড়ে ডুবে গেছে। এতে ২৭৩ জন আরোহী ছিল। এদের মধ্যে ৯৬ জন নিখোঁজ রয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, জাহাজ থেকে ১৭৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। সমুদ্র পরিস্থিতি ভয়াবহ হওয়া সত্ত্বেও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে।

এদিকে মঙ্গলবারও নতুন করে একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২১ জনে।

গুজরাটে ঘূর্ণিঝড় থেকে রক্ষার জন্য দুই লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয় এবং কয়েকটি বন্দর ও বিমানবন্দর বন্ধ করে দেওয়া হয়।

গুজরাটের উপকূলীয় শহর দিউয়ের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সমদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১০ ফুট পর্যন্ত বেড়েছিল। সেখানে বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৩৩ কিলোমিটার।

গুজরাটের উপকূলীয় ১২টি জেলায় করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রায় ৪০০ হাসপাতাল রয়েছে। আর অক্সিজেন প্যøান্ট রয়েছে ৪১টি। এসব হাসপাতাল ও অক্সিজেন প্ল্যান্টে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে রাজ্য সরকার।

তবে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানি সাংবাদিকদের বলেন, রাজ্যের এক হাজার কোভিড-১৯ হাসপাতালে জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ৭৪৪টি স্বাস্থ্যসেবা দল মোতায়েন করা হয়েছে। পরিবহনযোগ্য ১৭৪টি আইসিইউর ব্যবস্থা করা হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৬০০টি।

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে মহারাষ্ট্রে। এ রাজ্যে কমপক্ষে ছয়জন মারা গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছে কমপক্ষে নয়জন। গতকাল সেখানে বৃষ্টি শুরুর পর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে যেসব কোভিড-১৯ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল, তাঁদের ‘নিরাপদ স্থানে’ সরিয়ে নেওয়া হয়।

মুম্বাইয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৫৮০ করোনা রোগীকে ফিল্ড হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

তবে মুহুভা শহরে ঝড়ের আগে একজন করোনা রোগীকে সরিয়ে নেয়া সম্ভব না হওয়ায় সে মারা গেছে।

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে কেরালা রাজ্যেও। সেখানে মারা গেছে সাতজন। এ রাজ্যে কমপক্ষে দেড় হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব রেডক্রস এন্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির উদয় রেগমি বলেন, ভারতের লাখ লাখ লোকের জন্য এই ঘূর্র্ণিঝড় ভয়ংকর দ্বিগুণ আঘাতের মতো যারা এমনিতেই করোনার রেকর্ড সংক্রমণে পর্যুদস্ত।

সংস্থাটি ফাস্ট এইড ও মাস্ক সরবরাহ করে কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছে বলেও তিনি জানান।
এসএ/