ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লিচু বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ১৫ কোটি টাকা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৫৬ পিএম, ২২ মে ২০২১ শনিবার | আপডেট: ০৫:৫৯ পিএম, ২২ মে ২০২১ শনিবার
গ্রীষ্মকালের সুস্বাদু ফলের মধ্যে অন্যতম রসালো ফল হচ্ছে লিচু। ইতিমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এই ফল চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিরূপ আবহাওয়াতেও চলতি মওসুমে জেলায় লিচুর আশানুরূপ ফলন হয়েছে। লিচুর ফলন ভালো হওয়ায় চাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে। লিচুর মধ্যে রয়েছে বোম্বাই, পাটনাই ও চায়না-৩ জাতের লিচুর। ফলে মহামারির এই দুঃসময়ে কৃষকদের মনে আশা জাগাচ্ছে লিচু। চলতি মৌসুমে জেলায় ৫১০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। এবার প্রায় সাড়ে ১৫ কোটি টাকা মূল্যের লিচু বাজারজাত করার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেলা কৃষি সম্প্রাসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, প্রতিবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর, আখাউড়া ও কসবা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লিচুর আবাদ হয়। এবারও এই তিন উপজেলায় ৪৯৫ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বিজয়নগরে ৩৭৫ হেক্টর, আখাউড়ায় ৯০ হেক্টর ও কসবায় ৩০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ করেছেন কৃষকরা। অন্য উপজেলাগুলোতে ১৫ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হয়েছে। জেলায় লিচুর বাগান রয়েছে ৪৩০টি। যদিও গাছে মুকুল আসার আগেই অধিকাংশ কৃষক তাদের বাগান মৌসুমি ফল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর ফল ব্যবসায়ীরা লিচু ধরা এবং বাজারজাত করার আগ পর্যন্ত বাগান পরিচর্যা করেন। এবছর প্রতি হেক্টর জমিতে ৩ টন করে ফলনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। সে হিসেবে এবার জেলায় ১ হাজার ৫৩০ মেট্রিক টন লিচুর ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রতি টন লিচুর গড় মূল্য ধরা হয়েছে ১ লাখ টাকা। যার ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এবার ১৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের লিচু
বাজারজাত করা হবে। যদিও প্রতি হেক্টর জমিতে কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরও বেশি ফলন হবে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের কালাছড়া গ্রামের লিচু চাষি আক্তার হোসেন বলেন, আমার লিচু বাগানটি ৬০ শতাংশ জায়গাজুড়ে। এবার বোম্বাই জাতের লিচু চাষ করেছি। আগে মৌসুমের শুরুতে বাগান বিক্রি করে দিতাম। কিন্তু এবার বিক্রি করিনি। আশা করছি, খরচ মিটিয়ে আড়াই লাখ টাকার লিচু বিক্রি করতে পারব।
আরেক চাষি মহসিন আহমেদ জানান, ১২০ শতাংশ জমিতে তিনটি লিচুর বাগান রয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় এবার খরার কারণে ফলন কিছুটা কম হয়েছে। তিনটি বাগানের লিচু ৩ লাখ টাকার মতো বিক্রি হবে। তবে গত বছর একটি বাগানের লিচুই ২ লাখ টাকা বিক্রি করেছিলেন বলে জানান।
বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতরপুর গ্রামের বাসিন্দা শেখ সায়মন জানান, তিনি তার প্রতিবেশি কৃষকের কাছ থেকে তিন বছরের জন্য দুটি বাগান সাড়ে ৩ লাখ টাকায় কিনেছেন। দুটি বাগানে ৩২টি লিচু গাছ আছে। বাগানগুলো পরিচর্যায় খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। আর দুটি বাগানে যে পরিমাণ লিচু এসেছে, তাতে বিক্রি হবে প্রায় দেড় লাখ টাকা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. রবিউল হক মজুমদার বলেন, এবার অন্তত ১৫ কেটি ৩০ লাখ টাকা মূল্যের লিচু বাজারজাত হবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে। লিচুর ফলন কীভাবে ভালো করা যায়, সে বিষয়ে আমরা কৃষকদের সব ধরণের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি।
কেআই//