যার পরামর্শ মেনে সফল মিরাজ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:২৭ এএম, ২৪ মে ২০২১ সোমবার
৪ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার মেহেদী মিরাজ।
প্রথম ম্যাচেই ৩৩ রানে জিতে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে উড়ন্ত সূচনা করেছে বাংলাদেশ। যে ম্যাচে নায়ক আছেন কয়েকজন, সবচেয়ে বড় নায়ক ছিলেন অবশ্যই মেহেদী হাসান মিরাজ। এই ম্যাচে নতুন বলে দারুণ করেছেন এই স্পিনার, বল করেছেন ইনিংসের মাঝেও। তাঁর বোলিংয়েই মূলত ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। দলের সেরা বোলারও ছিলেন তিনি। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই স্পিনার জানিয়েছেন, দেশীয় কোচদের পরামর্শে বল করেই সফল হয়েছেন তিনি।
রোববার মিরপুরে তিন স্পেলে বল করে ১০ ওভারে দুই মেডেনসহ ৩০ রান দিয়ে মিরাজ শিকার করেছেন শ্রীলঙ্কার টপ অর্ডারের চার ব্যাটসম্যানকে। চারটি উইকেটই তুলে নিয়েছেন একক কৃতিত্বে, কারও সাহায্য ছাড়াই। অর্থাৎ তিন জনকে সরাসরি বোল্ড করে এবং একজন হয়েছেন কট এন্ড বোল্ড (রিটার্ন ক্যাচ)। এছাড়া মুস্তাফিজও নিয়েছেন ৩টি উইকেট। যার ফলে বাংলাদেশ জিতেছে ৩৩ রানে।
মিরাজ জানিয়েছেন, কোচ সোহেল ইসলাম ও নাজমুল আবেদিন ফাহিমই তাকে এমন পারফরম্যান্স করতে সাহায্য করেছে। তাদের পরামর্শ মেনেই বল করেছেন তিনি। যাতে এমন সফল হয়েছেন মিরাজ। একইসঙ্গে এই ম্যাচে ৪ উইকেট নেয়ার মাধ্যমে ওয়ানডেতে পঞ্চাশ উইকেট নেয়ার মাইলফলক স্পর্শও করেন মিরাজ। ৪৮ ম্যাচে এখন তার উইকেট সংখ্যা ৫১টি।
মেহেদী মিরাজ বলেন, ‘খেলার আগে সোহেল স্যারের সাথেই কথা বলেছি, কিভাবে কি করলে ভালো হয়। এছাড়া ফাহিম স্যার আমাকে ফোন দিয়েছিলেন, তিন চার দিন আগে। স্যার কথা বলছেন, এমনকি শ্রীলঙ্কাতে যখন টেস্ট ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলাম তখনও কথা বলেছেন। তিনি আমাকে বুঝিয়েছেন, কিভাবে কি করলে ভালো হয়। আমি চেষ্টা করেছি যেভাবে বলেছিলেন সেভাবেই করার জন্য। আর সোহেল স্যার অনেক দিন থেকেই আমার সাথে কাজ করেছেন। আমি মনে করি, স্যাররা আমাকে খুব ভালো গাইড করেছেন।’
মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও তামিম ইকবালের ব্যাটিং দৃঢ়তা ও আফিফ হোসেনের শেষের ঝড়ে প্রথম ইনিংসে লড়াই করার পুঁজি পেয়েছিল বাংলাদেশ। সেই পুঁজি নিয়ে লড়াই করে ম্যাচ জিতিয়েছেন বোলাররা। মিরাজ মনে করেন, সবাই ভালো করাতেই জেতা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সবাই ভাল খেলেছে। সব বিষয় গুরুত্বের, যেমন- তামিম ভাই ভালো শুরু এনে দিয়েছেন। মুশফিক ভাই, রিয়াদ ভাইয়ের বড় জুটি খেলেছেন। শেষ দিকে অফিফের ব্যাটিং। বোলিংয়ে একসাইড থেকে রান আটকাতে পেরেছি আমি। মাঝখানে আমি এবং মুস্তাফিজ ভাল করেছি। ওভারঅল সবাই ভাল করাতেই কিন্তু জেতা সম্ভব হয়েছে।’
এদিকে, সব ফরম্যাট মিলিয়ে টানা দশ ম্যাচ হারের পর অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ দেশের মাটিতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। মিরাজ জানিয়েছেন, জয়ে ফিরতে এই ম্যাচটি তাঁদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। আর জয় পাওয়া সহজ হয়েছে দলের সবাই সাপোর্টিভ ছিল বলে।
তিনি বলেন, ‘আমরা কিন্তু অনেক দিন ধরেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ জিততে পারছিলাম না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে সিরিজ জিতেছিলাম। টেস্টে ভালো খেলেছি, কিন্তু জিততে পারিনি। আমি মনে করি যে, এই ম্যাচটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ওয়ানডেতে আমরা সব সময় ভালো ক্রিকেট খেলি। এই দলটাতে সবাই ছিল, এজন্য আরও বেশি ভালো হয়েছে আমাদের।’
শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ম্যাচে ৩৩ রানে হারানোর ম্যাচে কয়েকজন পার্শ্ব নায়ক থাকলেও ম্যাচ শেষে সেরা নায়কের পুরস্কারটা অবশ্য মুশফিকের হাতেই ওঠে। চারটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ৮৭ বল থেকে ৮৪ রানের ইনিংস খেলেন মুশি, একইসঙ্গে ৯৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে দল যখন ধুঁকছিল, সেই মুহূর্তে বড় ভায়রা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গী করে গড়েন ১০৯ রানের মূল্যবান জুটিও। যা জয়ের জন্য প্রয়োজনীয় ভিত গড়ে দেয়।
দুই দলের মধ্যকার দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) দুপুর ১টায়, মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামেই।
এনএস/