ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

পিস ক্যারাভান’র উদ্বোধন 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩২ এএম, ২৭ মে ২০২১ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৮:৩৫ পিএম, ২৭ মে ২০২১ বৃহস্পতিবার

সাংস্কৃতিক বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ‘পিস ক্যারাভান’ এর উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন। পিস  ক্যারাভান একটি সামাজিক উন্নয়নমূলক ক্যাম্পেইন যার উদ্যোগে রয়েছে জেন ল্যাব। পার্টনার হিসেবে সমর্থন  প্রদান করছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। ডাইভার্সিটি ফর পিস্ , পার্টনারশিপ ফর এ টলারেন্ট  এন্ড ইনক্লুসিভ বাংলাদেশ ( পিটিআইবি ) এই প্রকল্পের সমন্বয়কারী। এই কর্মসূচিটি  সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়, আইপিডিসি ফিনান্স লিমিটেড এবং পাইপলাইন ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেড এর পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হবে। একইসাথে  বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (জন প্রশাসন মন্ত্রণালয়) এই প্রচার সফলভাবে বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করছে। এছাড়াও, পরিবর্তন ফাউন্ডেশন এবং বাংলাদেশ ফটোগ্রাফার গ্রুপ এই প্রচারের সাথে যুক্ত রয়েছেন। 

জেন ল্যাব নগর কেন্দ্রিক এই উদ্যোগে নাগরিক এবং যুব সম্প্রদায়কে কেন্দ্রে রেখেই এই আয়োজন করেছে। আমাদের বহুল প্রচলিত রিকশা আর্ট ও শৈল্পিক বিভিন্ন মাধ্যম কে  মাথায় রেখে অংকনশিল্প ও ডিজিটাল উপস্থিতির মাধ্যমে বিভিন্ন গোষ্ঠী, ধর্ম আর পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর একীভূতকরনের উদ্দেশ্যই এই প্রয়াস। এই বিশেষ কর্মসূচীতে জেন ল্যাব মনোনিবেশ করেছে – ১। ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান (এসডিজি - ১৬), ২। পাহাড়ি বাঙ্গালী সম্প্রীতি (এসডিজি - ১৬), ৩। লিঙ্গ ভিত্তিক সমতা (এসডিজি ৫), ৪। তৃতীয় লিঙ্গ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কাজের সুযোগ আর সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা এবং অন্তর্ভুক্তি করন।   

সমাজে এই পরিবর্তনগুলি আনতে এবং সকল বয়সের সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের মধ্যে জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য, বিশেষ প্রচারটি ঢাকা মহানগর অঞ্চলের বেশকিছু  সরকারি ও বেসরকারি মালিকানাধীন বাস, রিকশা এবং অন্যান্য পরিবহন মাধ্যমে সৃজনশীল শিল্পকর্ম নিখুঁত করার জন্য উপস্থাপন করা হবে।  রিকশা আর্ট কে মাধ্যম হিসেবে ব্যাবহার করে শিল্পকর্মগুলি তৈরি করা হবে। আর্ট এবং শ্লোগান নির্ভর এই দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনগুলো জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের সরকারী পরিবহন কর্মচারী পরিবহনের কাজে নিয়োজিত বাসে বর্তমানে শোভা পাচ্ছে এবং খুব দ্রুতই রিকশা এবং অটোরিকশা এর মাধমেও প্রচারে যুক্ত হবে।  অফলাইন আর্ট-ভিত্তিক প্রচারণার পাশাপাশি অনলাইন বিতর্ক টুর্নামেন্ট, কুইজ প্রতিযোগিতা, পলিসি আলোচনা  আয়োজিত হবে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং ইউটিউব এও শেয়ার করা হবে। এই ক্যাম্পেইন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) ৫ এবং ১৬ নির্ভর একটি কর্মসূচী। 

বিশ্বব্যাপী মহামারীর মধ্যেও এমন একটি ধারণা নিয়ে কাজ করার জন্য জেন ল্যাব ও ইউএনডিপি বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়েছেন সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে.এম. খালিদ। আয়োজকদের হৃদয়ে এরকম একটি সময়োপযোগী কর্মসূচী গ্রহনের ইচ্ছাকে তিনি সাধুবাদ জানান। ধর্মনিরপেক্ষ জাতি গঠনের প্রত্যাশায় পিস ক্যারাভানের মতো একটি প্রকল্পের ধারণাটিরও প্রশংসা করা হয়। “এই প্রকল্পটি কেবল নারী ও যুব সমাজের ক্ষমতায়নের জন্য নয়, তৃতীয় লিঙ্গের পক্ষে কাজ করার জন্য; এমন একটি সম্প্রদায় যারা অবহেলিত এবং এমনকি তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। " - জনাব কে. এম. খালিদ। তিনি তৃতীয় লিঙ্গের সবাইকে সম্মানজনক এবং সুন্দর একটি নতুন নামকরনের এবং সামাজিক অন্তরভুক্তিকরনের প্রয়োজনীয়তা বাক্ত করেন যা তারা গর্বের সাথে ব্যবহার করতে পারবে এবং সরকারের সহযোগিতায় কাজ করতে পারবে যা জাতির পিতার দীর্ঘকালীন লালিত স্বপ্ন অর্জনে সহয়তা করবে বাংলাদেশকে “সোনার বাংলা”য় রুপান্তর করতে।  

টলারেন্ট এন্ড ইনক্লসিভ বাংলাদেশের (পিটিআইবি), জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী (ইউএনডিপি) ব্যবস্থাপক রব স্টলম্যান বিভিন্ন সম্প্রদায় এবং জাতিগোষ্ঠীর প্রতি ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতার কথা উল্লেখ করেছেন যা প্রায় বাংলাদেশের নয়, সারা বিশ্বে অনলাইন মিডিয়া ব্যবহার করে আমাদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে। তাঁর মতে, এই বিভাজনকারী শক্তির মোকাবিলার জন্য, বৈচিত্র্যকে একটি শক্তি হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া, সংগ্রামী সংখ্যালঘুদের সমর্থন করা এবং তাদেরকে সমতার সুযোগ দেওয়া খুব প্রয়োজন। তিনি বিশ্বাস করেন শিল্প ও সংস্কৃতির মাধ্যমে পিস ক্যারাভান সফল ভাবে ঢাকা মহানগরীর কাছে সাফল্যের সাথে বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য প্রদর্শন করতে পারবে। 

সকল লিঙ্গ বর্ণ কৃষ্টি ধর্ম সমন্বিত ,সমতাভিত্তিক , শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনের উদ্দেশেই এই পিস্ ক্যারাভান এর যাত্রা। জেন ল্যাব আশাবাদী যে এই প্রকল্প তার সৃজনশীল ও ডিজিটাল প্রতিচ্ছবি দিয়ে মানুষকে ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ শ্রেণী ব্যাতিরেকে সবার কাছে শান্তি ও সম্প্রীতির বাণী পৌঁছে দেবে।  

আরকে//