রামপালে দুই শতাধিক ঘের-বাড়ি প্লাবিত
এইচ এম মইনুল ইসলাম, বাগেরহাট
প্রকাশিত : ০৯:৪৪ পিএম, ২৭ মে ২০২১ বৃহস্পতিবার
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবমুক্ত হওয়ার আগেই বাগেরহাটের রামপালে জোয়ারের পানিতে গ্রামরক্ষা বাধ ভেঙ্গে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তাৎক্ষনিক উদ্যোগ ও স্থানীয়দের স্বেচ্ছাশ্রমসহ শত প্রচেষ্টায়ও রক্ষা হয়নি বাঁধটি। বৃহস্পতিবার (২৭ মে) দুপুরে জোয়ারের পানির তোড়ে ভেঙ্গে যায় বগুরা নদীর তীরের রামপাল উপজেলার হুড়কা গ্রাম রক্ষা বাধটি। মুহুর্তে-ই তলিয়ে যায় হুড়কা গ্রামের দুই শতাধিক মৎস্য ঘের। সাথে প্লাবিত হয় শ‘খানেক বাড়ি ঘর। স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেও বাঁধ না টেকায় হতাশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
হুড়কা গ্রামের সুবাশ চন্দ্র ঢালী, পরিতোষ দে বলেন, সোমবার (২৪ মে) আমাদের গ্রাম রক্ষাবাঁধটি একবার ভেঙ্গে যায়। তখন জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় মাটি ও বাশের পাইলিং দিয়ে বাঁধটিকে রক্ষা করি। যার ফলে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ইয়াসের খবর শুনে আমরা সবাই সতর্ক অবস্থানে ছিলাম বাঁধ রক্ষায়।সকালে বাঁধের উপর মাটি দিয়েছি সবাই মিলে। দুপুরের আগ মুহুর্তে জোয়ারের পানির চাপে বাঁধটি ভেঙ্গে আমাদের গ্রামের পানি প্রবেশ করে। জোয়ারের পানিতে আমাদের অন্তত দুইশ মৎস্য ঘের তলিয়ে গেছে। শতাধিক বাড়ি-ঘরে পানি উঠেছে। এত চেষ্টা করলাম কিন্তু বাঁধটিকে রাখতে পারলাম। হুড়কা গ্রামকে বাঁচাতে হলে বগুরা নদীর পাশে গাইড ওয়াল দেওয়ার দাবি জানান তারা।
এদিকে বাঁধ ভেঙ্গে ঘের তলিয়ে যাওয়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছেন বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এ.এস.এম রাসেল। তিনি বলেন, রামপাল উপজেলার বেশির ভাগ মানুষ মৎস্য চাষের উপর নির্ভরশীল। প্রতিটি দূর্যোগে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঘের ব্যবসায়ীদের রক্ষায় এখানে টেকসই বেড়িবাঁধ দেওয়া প্রয়োজন। এসময় রামপাল উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আছাদুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
হুড়কা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তপন গোলদার বলেন, স্থানীয়দের সাথে নিয়ে সোমবার ভেঙ্গে যাওয়া বাঁধটি আমরা মোটামুটি রক্ষা করেছিলাম। কিন্তু দুপুরে আবারও ভাঙ্গল। সকাল থেকে এলাকাবাসী ও পরিষদের পক্ষ থেকে বাঁধটিতে বাশের পাইলিং ও মাটি দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ঠেকাতে পারলাম না।
তপন গোলদার আরও বলেন, আসলে বগুড়া নদীর পাড়ে থাকা গ্রামগুলোকে রক্ষার জন্য আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ। কিন্তু বারবার গ্রাম রক্ষা বাঁধ ভাঙ্গে, আর স্থানীয় জনগন স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে বাঁধ রক্ষা করে। কোন কোন সময় ইউনিয়ন পরিষদ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বরাদ্দ দিয়ে বাঁধ সংস্কার করা হয়। আসলে টেকসই বেড়িবাঁধ বা নদীতে গাইড ওয়াল দিলে-ই হুড়কা গ্রামবাসীকে পানির হাত থেকে রক্ষা করা যাবে।
আরকে//