ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

জেল থেকে মুক্তি পেয়ে ভয়াবহ নির্যাতনের বর্ণনা সাংবাদিকের

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৪৬ এএম, ৩ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার

বেলারুশের জেল থেকে মুক্তি পেলেন ডয়েচ ভেলের সাংবাদিক আলেকজান্ডার বুরাকভ। মুক্তি পেয়েই শোনালেন তার কারাগারের জীবনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা।

ডয়েচ ভেলের রাশিয়া ভাষা বিভাগের জন্য বেলারুশের একটি আদালতের সামনে খবর করতে গিয়েছিলেন আলেকজান্ডার বুরাকভ। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। মঙ্গলবার ২০ দিন পর তাকে ছাড়া হয়। জেলে শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন চলে তার ওপর। নিজের সেই দুর্ভোগের কথা পাঠকদের জানালেন বুরাকভ।

বুরাকভের কথায়, সাধারণ জেলকে তার মনে হয়েছে সেনাবাহিনীর ডিটেনশন সেন্টার। এর আগেও খবর প্রকাশ করার কারণে তাকে একবার গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সে সময়ের জেল জীবন আর এবারের জীবনের মধ্যে অনেক তফাৎ মনে হয়েছে বুরাকভের। প্রতি রাতেই ঘুম ভাঙিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাতো। সেলের বাইরে নিয়ে তার জামা কাপড় খোলানো হতো। কোনো কোনো দিন সকালেও একই কাজ করা হতো। ২০ দিনে ৬৩ বার জামা কাপড় খুলে তল্লাশি করা হয়েছে তার। এমনকি তার অন্তর্বাস পর্যন্ত খুলতে বাধ্য করা হয়েছে।

জেলে বালিশ, ঘুমানোর জন্য চাদর, কম্বল কিছুই দেওয়া হয়নি। একটি প্লাস্টিকের বোতল মাথায় রেখে ঘুমোতেন তিনি। গরম কাপড়, গরম খাবার পর্যন্ত দেওয়া হতো না। বাড়ি থেকে খাবার বা জিনিস পাঠালে তাও তার হাতে দেওয়া হতো না। সে সব চাইলে শাস্তি দেওয়া হতো।

প্রায় এক সপ্তাহ এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন সাংবাদিক। অনশন করেছেন। কিন্তু শেষপর্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে খাবার খেতে হয়েছে।

সাংবাদিক জানান, ভয়াবহ জেল জীবন কেটেছে তার। বেলারুশের জেলে বন্দি সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী সকলের সঙ্গেই এমন ব্যবহার করা হচ্ছে। তার ভাষায়- মুক্ত কণ্ঠ স্তব্ধ করতে চাইছে সরকার এবং প্রশাসন। তবে এতে করে তিনি দমে যাননি। আবারও সাংবাদিকতা করবেন এবং মানুষের অবস্থা তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন বুরাকভ।

আলেকজান্ডারকে গ্রেপ্তার করার পর থেকেই প্রতিবাদ করছিল ডিডাব্লিউ। তার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করা হয়েছিল। ২০ দিন পর তিনি মুক্তি পাওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ডিডাব্লিউয়ের প্রধান পিটার লিমবুর্গ।

উল্লেখ্য, বেলারুশের পরিস্থিতি প্রতিদিনই ভয়াবহ হচ্ছে। সাধারণ মানুষ দেশের বাইরে যেতে পারবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকার। সাংবাদিকদের কাজের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে। একের পর এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সমস্ত সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সেখানে।
এসএ/