ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বাগেরহাটে মাইকিং করে ২‘শ টাকা কেজি দরে ইলিশ বিক্রি

বাগেরহাট প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৭:৪৫ পিএম, ৪ জুন ২০২১ শুক্রবার

বাগেরহাট শহরে অটোতে ঘুরে মাইকিং করে কোটা ইলিশ (খন্ড খন্ড করা) বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিকেজি কোটা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২‘শ টাকা দরে।দামে কম এবং কোটার ঝামেলা না থাকায় কিনছেনও অনেকে। তবে এই মাছ আসলে স্বাস্থ্যসম্মত কিনা তা পরীক্ষা নিরিক্ষা করে দেখার দাবি জানিয়েছেন অনেকে।

বৃহস্পতিবার (০৩ জুন) সকালে বাগেরহাট শহরের রেলরোডস্থ মমতাজ হোটেলের সামনে একটি অটোতে মাইকিং করে ইলিশ মাছ বিক্রি করতে দেখা যায়। আশপাশের ব্যবসায়ী ও নিম্ন আয়ের লোকেরা ক্রয়ের জন্য ভীড় জমান অটোর পাশে। কেউ কেউ কিনছেনও। আবার বিদেশী মাছ বলে, না কিনে চলে যেতে দেখা যায় অনেককে। এত কম দাম হওয়ায় নিশ্চয় কোন সমস্যা রয়েছে এমনটি দাবি করেছেন দুই একজন ক্রেতা। অটোতে থাকা মাছের সাইজগুলো ছোট। কোটা হলেও আশ ফেলা হয়নি। দীর্ঘদিন কোল্ডস্টোরে থাকায় মাছগুলো প্রচুর ঠান্ডা ও অনেক শক্ত।

অটোর ভেতরে থাকা ইলিশ বিক্রেতা কিশোরের সাথে কথা বলে কোটা ইলিশের আদ্যপান্ত জানার চেষ্টা করি। ওই কিশোর বলেন, ভাই খুলনা কোম্পানি থেকে এই মাছ এনেছি। কোম্পানি-ই আমাদেরকে দিয়ে বিক্রি করায়, আমরা দিন হিসেবে টাকা পাই। কোম্পানি ও ওই কিশোরের নাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, নাম জেনে কি করবেন।

অটো চালক বলেন, ভাই এতসব জেনে লাভকি। আপনারাতো যা ইচ্ছে লিখে দেন সোস্যাল মিডিয়ায়। এই বলে তিনি তাড়াতাড়ি প্রস্থানের চেষ্টা করেন।

অটো থেকে মাছ ক্রয় করা রিকশা চালক আলমগীর হোসেন বলেন, বাজারে এক কেজি ছোট ইলিশ কিনতে গেলেও কমপক্ষে ৪‘শ থেকে ৫‘শ টাকা লাগে। সেখানে দুইশ টাকায় এককেজি ইলিশ পাচ্ছি। এটাইতো ভাল। ভেজালতো সব জায়গায় আছে। তো একদিন-দুইদিন ইলিশ খাইলে কিছু হবে না।

অটোর পাশে দাড়ানো নিরাপদ সড়ক চাই, বাগেরহাট জেলা শাখার সভাপতি আলী আকবর টুটুল বলেন, বাগেরহাট সামুদ্রিক মাছের আড়ত কেবি বাজারে অনেকসময় বিদেশী মাছ বিক্রি হতে দেখেছি। দেশি ট্রলারের মাছের তুলনায় ওইসব মাছ অনেক কম দামে বিক্রয় হয়। হয়ত ওই ধরণের নিম্নমানের মাছ বিক্রির জন্য এই পন্থা বেছে নিয়েছে কোন অসাদু ব্যবসায়ী। এব্যাপারে ভোক্তাদের আরও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

কনজ্যুমার এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), বাগেরহাটের সভাপতি বাবুল সরদার বলেন, বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী ২‘শ টাকা কেজি দরে ইলিশ মাছ বিক্রির প্রশ্নই ওঠে না। কেন এত কমদামে এই ইলিশ বিক্রি করছে এ বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখতে হবে। কোন বিশেষ ব্যক্তি বা গ্রুপ কোন অসৎ উদ্দেশ্যেও কম দামে খাবার অযোগ্য ইলিশ বাজারে পাঠাতে পারে। এ বিষয়ে প্রশাসন ও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহবান জানান তিনি।

বাগেরহাট সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফেরদাউস আনছারি বলেন, বাগেরহাট ও খুলনা শহরে মাইকিং করে কোটা ইলিশ বিক্রি করছে কেউ কেউ। এর পরিমান খুব কম। আমাদের ধারণা কোল্ড স্টোরে থাকা দীর্ঘদিনের ইলিশ মাছ এভাবে কম দামে বিক্রি করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা এই কোটা ইলিশের স্যাম্পল সংগ্রহের চেষ্টা করছি। স্যাম্পল সংগ্রহ করে এই ইলিশ পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হবে। যদি মানুষের স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তারকারী কোন উপাদানের উপস্থিতি পাওয়া যায় তাহলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন তিনি।

আরকে//