ককের দুর্দান্ত শতকে ইনিংস হারের কবলে উইন্ডিজ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:০২ এএম, ১২ জুন ২০২১ শনিবার | আপডেট: ০৯:০৪ এএম, ১২ জুন ২০২১ শনিবার
কুইন্টন ডি কক
নেতৃত্বের ভারমুক্ত হয়ে নির্ভার কুইন্টন ডি কক খেললেন দুর্দান্ত এক ইনিংস। টেলএন্ডারদের নিয়ে বোলিং সহায়ক উইকেটে দলকে এনে দিলেন ৩শ ছাড়ানো সংগ্রহ। পরে প্রোটিয়া পেসে দ্বিতীয় ইনিংসেও ধুঁকতে থাকা ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে এখন তাই ইনিংস হার এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।
সেন্ট লুসিয়ায় শুক্রবার প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ৮২। ইনিংস পরাজয় এড়াতে এখনও ১৪৩ রান চাই স্বাগতিকদের। ৬ রানে জীবন পাওয়া রোস্টন চেজ অপরাজিত আছেন ২১ রান নিয়ে। তার সঙ্গী জার্মেইন ব্ল্যাকউডের সংগ্রহ ১০ রান। আজ তৃতীয় দিনে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে কঠিন পরীক্ষা।
এর আগে ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ১৪১ রানের ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকাকে একাই টানেন ডি কক। ১৭০ বল খেলে ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরি পাওয়া এই কিপার-ব্যাটসম্যান এদিন হাঁকান ১২টি চারের সঙ্গে ৭টি ছক্কা। আর এরই মাধ্যমে টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ড স্পর্শ করেন ডি কক। ২০০৯ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭ ছক্কায় এতদিন এই পাতার চূড়ায় ছিলেন তারই সিনিয়র সতীর্থ এবি ডি ভিলিয়ার্স।
ডি ককের এমন দৃঢ়তাপূর্ণ শতকে ভর করে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩২২ রান তুলতে সক্ষম হয় সফরকারীরা। যাতে ২২৫ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করলেও এখন ইনিংস হার এড়াতে লড়ছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে ৯৭ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলটি দ্বিতীয় ইনিংসেও পড়েছে বিপর্যয়ে, ৫১ রানেই হারিয়েছে ৪টি উইকেট।
কাগিসো রাবাদার একটু নিচু হওয়া বলে এলবিডব্লিউ হন ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (৭)। একই বোলারকে লেগে ফ্লিক করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন আরেক ওপেনার কাইরন পাওয়েল (১৪)। এনরিক নর্টজের বলে তৃতীয় স্লিপে ভিয়ান মুল্ডারের হাতে ধরা পড়েন সাবধানে খেলা শাই হোপ (১২)। ক্রিজে গিয়েই পরের তিন বলে তিনটি বাউন্ডারি মারা কাইল মেয়ার্স টিকেননি বেশিক্ষণ। সেই নর্টজের বলেই ধরা পড়েন তৃতীয় স্লিপে ১২ রান করেই।
দিনের বাকিটা সময় কোনোমতে কাটিয়ে দেন চেজ ও ব্ল্যাকউড। লুঙ্গি এনগিডির বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান চেজ। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে রাবাদা ও নর্টজে নেন দুটি করে উইকেট।
তাঁর আগে ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে শুক্রবার ৪ উইকেটে ১২৮ রান নিয়ে খেলা শুরু করে দক্ষিণ আফ্রিকা। আগের দিনের চেয়ে এদিন ব্যাটিংয়ের কন্ডিশনে কিছুটা উন্নতি হয়। এর মধ্যেও ভালো করছিলেন জেসন হোল্ডার। তার হাত ধরে প্রথম সাফল্য পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। গালিতে ক্যাচ দিয়ে থামেন রাসি ফন ডার ডুসেন (৪৬)।
লাঞ্চ পর্যন্ত টিকে যাওয়া মুল্ডার বিরতির পর টিকেননি বেশিক্ষণ। হোল্ডারকে ব্যাকফুট পাঞ্চ করার চেষ্টায় ফেরেন কট বিহাইন্ড হয়ে ২৫ রান করে। রাহকীম কর্নওয়ালের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কেশভ মহারাজ (০)। পরে ৮০ ওভার পূরণ হতেই দ্বিতীয় নতুন বল নেয়া ক্যারিবিয়ান পেসার রোচের বলে দ্বিতীয় স্লিপে হোল্ডারের হাতে ধরা পড়েন রাবাদা (৪)।
তখনও সেঞ্চুরি থেকে যোজন দূরে ডি কক। ৬৩ রানে থাকা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান নিজেই খেলতে থাকেন স্ট্রাইক নিয়ে, রান বাড়াতে থাকেন বাউন্ডারি মেরেই। রাবাদা আউট হওয়ার পর জায়ডেন সিলসের ওভারে মারেন দুই ছক্কা ও এক চার। পরে মেয়ার্সকে ছক্কায় উড়িয়ে ১৪৮ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। এরপরও খেলে যান একই রকম আক্রমণাত্মক মেজাজে।
রাকিম কর্নওয়ালকে দুই ছক্কার পর হোল্ডারকেও চার ও ছক্কা মারেন ডি কক। সেই ওভারে নর্টজে (২৯ বলে ৭ রান) বিদায় নিলে ভাঙে নবম উইকেটে ৭৯ রানের জুটি। এরপর আর মাত্র ১০ রান যোগ করতে পারেন ডি কক, কেননা শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে এনগিডি আউট হন শূন্য রানেই। যাতে ৩২২ রানেই থামে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস।
ক্যারিবীয়দের পক্ষে জেসন হোল্ডার ৪টি, জায়ডেন সিলস ৩টি এবং কেমার রোচ ২টি করে উইকেট তুলে নেন। আর বাকী উইকেটটি যায় রাহকীম কর্নওয়ালের ঝুলিতে।
এনএস/