বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ নাসিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী কাল
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৪০ পিএম, ১২ জুন ২০২১ শনিবার
বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোহাম্মদ নাসিমের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল রোববার। ২০২০ সালের ১৩ জুন রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে মোহাম্মদ নাসিমের বয়স হয়েছিল ৭২ বছর।
মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- প্রয়াতের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, আলোচনা সভা, গরীবদের মাঝে খাবার ও হুইল চেয়ার বিতরণ।
১৯৪৮ সালের ২ এপ্রিল সিরাজগঞ্জ জেলার কাজীপুর উপজেলায় এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ নাসিম। তার পিতা পিতা শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। যিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আ¤্রকাননে গঠিত বাংলাদেশ সরকারে অর্থ, শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এবং স্বাধীনতা পরবর্তী বঙ্গবন্ধু সরকারের মন্ত্রীসভায় প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। জাতীয় চার নেতার অন্যতম এম মনসুর আলী ৩ নভেম্বর জেলখানায় ঘাতকদের হাতে নিহত হন।
পারিবারিক জীবনে মোহাম্মদ নাসিম বিবাহিত এবং তিন সন্তানের জনক ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম লায়লা আরজুমান্দ। মোহাম্মদ নাসিম জগন্নাথ কলেজ (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালেও সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন মোহাম্মদ নাসিম। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন এবং ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এছাড়াও ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সিরাজগঞ্জ-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এরআগে ১৯৯৬ সালের সরকারে তিনি স্বরাষ্ট্র, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে সাফল্যের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৪ দলীয় মহাজোটের মুখপাত্র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
মোহাম্মদ নাসিম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ছিলেন। তিনি রাজনীতির পাশাপাশি সমাজ কল্যাণমূলক বিভিন্ন কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ঢাকাসহ নিজ এলাকা সিরাজগঞ্জে বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন তিনি।
করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত বছরের ১ জুন রাজধানীর শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। পরে ওইদিন রাতে তার করোনা পজেটিভ আসে।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত অবস্থায় মোহাম্মদ নাসিম গত বছরের ৫ জুন ভোরে স্ট্রোক করেন। পরে জরুরিভাবে তার অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা তাকে প্রথমে ৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখেন। পরে পর্যবেক্ষণের সময় আরও ৭২ ঘন্টা বৃদ্ধি করা হয়। এরপর অবশ্য তার করোনা টেস্ট দুইবারই নেগেটিভ আসে।
৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তার চিকিৎসায় একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়। পরে ১৩ জুন বেলা ১১ টার দিকে তিনি ইন্তেকাল করেন।
মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আগামীকাল সকাল ৯টায় পরিবার এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে তার কবরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। এছাড়াও তার জন্মস্থান কাজিপুরে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা করা হবে।
আরকে//