অবশেষে সেই রাতের সব ফাঁস করলেন পরীমনি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৩৫ পিএম, ১৪ জুন ২০২১ সোমবার
‘আমি আত্মহত্যা করার মতো মেয়ে না, আমি যদি মরে যাই তাহলে বুঝবেন আমাকে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি আত্মহত্যা করবো না, আমি আমার বিচার নিয়েই মারা যাবো।’ বাংলা চলচ্চিত্রের নায়িকা পরীমনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের কাছে এসব কথাই বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘নাসির উদ্দিন মাহমুদ আমাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করেছেন। আমার গায়ে যখন হাত তোলা হয় তখন বারবার বলেছিল- আমাকে তিন টুকরো করে ভাসিয়ে দেবে।’
রোববার (১৩ জুন) রাত সাড়ে ১১টার দিকে পরীমনি নিজের বাসায় সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এ সময় পরীমনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে অন্যায় করা হয়েছে, আমি অন্যায়ের বিচার চাই। আমাকে যদি কেউ মেরে ফেলে তাহলে মিডিয়া যেন তার বিচার করে। আমার সঙ্গে যে অন্যায় করা হয়েছে এর বিচার চাই।’
পরী বলেন, ‘আমি এখন খুব বিশ্বাস করি, একজন সাধারণ মেয়ে যদি ভিকটিম হয়, আত্মহত্যা ছাড়া তার কাছে আর কোনো পথ খোলা থাকে না। সাধারণ মেয়ে হিসেবে গত চার দিন ধরে অনেকের দাঁড়ে দাঁড়ে ঘুরেছি কেউ সহযোগিতা করেনি। একজন পরীমনি হিসেবে ফেসবুকে যখন স্ট্যাটাসটি দিলাম তখনই মিডিয়া এসেছে।’
এর আগে পরীমনি তাকে ধর্ষণ এবং হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার চেয়ে নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন। যেখানে পরীমনি লেখেন- ‘আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্য আপনাকে দরকার মা। মা আমি বাঁচতে চাই। আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’
এদিকে পরীমণিকে ‘ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার’ ঘটনার লিখিত অভিযোগ হাতে নেওয়ার পর এবার সেটি মামলায় রূপান্তরিত হলো। মামলায় ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদসহ ২ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও আরও ৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইনুল ইসলাম।
সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পরীমণির দেয়া লিখিত অভিযোগ সাভার থানায় আমলে নেওয়া হয়েছে। যেহেতু ঘটনাস্থল ‘ঢাকা বোট ক্লাব’ সাভার থানার বিরুলিয়ায় অবস্থিত।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরীমণির করা অভিযোগ আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। শিগগিরেই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হবে। এই মুহূর্তে এর বেশি কিছু বলা যাচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পরীমনি সাংবাদিকদের জানান, গত বুধবার (৯ জুন) রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও পরীর পোশাক ডিজাইনার জিমির সঙ্গে বাইরে বের হয়েছিলেন। রাত ১২টার দিকে অমি তাদের নিয়ে ঢাকা বোট ক্লাবে যান। সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে পরীর পরিচয় করিয়ে দেন অমি। পরে অমি সেখানে থাকা নাছির ইউ মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির কাছে নিয়ে যায়। সে সময় নাছির ইউ মাহমুদ নিজেকে ঢাকা বোট ক্লাবের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন। সেখানে নাছির ইউ মাহমুদ পরীকে মদ খেতে অফার করেন। পরী রাজি না হলে তাকে জোর করে মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে তাকে চড় থাপ্পড় মারেন। তারপর নির্যাতন ও হত্যাচেষ্টা করেন।
এসএ/