ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

দৃষ্টিভঙ্গি বদলালে বদলে যাবে জীবন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:২১ পিএম, ২২ জুন ২০২১ মঙ্গলবার

একজন বিখ্যাত লেখক তার লাইব্রেরীতে বসে ছিলেন। তিনি তার কলম তুলে নিয়ে লিখতে শুরু করলেন।

‘এই বছর আমার একটি অপারেশন করা হয় এবং আমার পিত্তথলি কেটে ফেলে দিতে হয়। আর এই অপারেশনের কারণে আমাকে দীর্ঘদিন বিছানায় পড়ে থাকতে হয়।

এই একই বছর, আমার বয়স ষাট স্পর্শ করে এবং আমার সবচেয়ে প্রিয় কাজটি আমায় ছেড়ে দিতে হয়। এই প্রকাশনা সংস্থায় গত ত্রিশ বছর যাবত আমি কাজ করেছি।

এই একই বছর, আমাকে আমার বাবা হারানোর মত দুঃখের সম্মুখীন হতে হয় এবং একই বছরই আমার ছেলে মেডিকেল পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়, কারণ সে সড়ক দূর্ঘটনায় আহত হয়, যার ফলে তাকে বেশ কিছুদিন হাসপাতালে কাটাতে হয়। এছাড়া আমাদের গাড়ির ক্ষতি তো আছেই।’

সবশেষে তিনি লিখলেন, ‘হায়! এই বছরটা কতই না খারাপ কাটলো।’

এ সময় তার স্ত্রী রুমে প্রবেশ করে স্বামীকে ভগ্ন হৃদয় দেখতে পান। তিনি তার পিছনে দাঁড়িয়ে লেখাটি পড়েন এবং নীরবে রুম থেকে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পর, তিনি হাতে লেখা অন্য একটি কাগজ তার স্বামীর লেখা কাগজের পাশে রাখেন।

লেখক কাগজটির দিকে মনোযোগ দিয়ে দেখতে পান তাতে লেখা আছে-
‘এই বছর, অবশেষে আমি আমার পিত্তথলির ব্যথা থেকে মুক্তি লাভ করি, যা কয়েক বছর যাবত আমাকে ভোগাচ্ছিল।

এই বছরই, আমি এখনও পর্যন্ত সুস্থ শরীরে ষাট বছরে পদার্পণ করি এবং আমার চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণ করি। ফলে এখন আমি আরো মনোযোগ সহকারে এবং শান্তিতে ভালো কিছু লিখতে পারবো।

এই একই বছর, আমার বাবা ৯৫ বছর বয়সে, অন্য কারো মুখাপেক্ষী না হয়ে এবং কোন ধরনের রোগব্যাধি ছাড়াই স্রষ্টার সান্নিধ্যে চলে গেছেন।

আর এই একই বছর, স্রষ্টা যেন আমার ছেলেকে নতুন জীবন দান করেন। যদিও আমাদের গাড়ির ক্ষতি হয়েছে কিন্তু আমার ছেলে কোন ধরনের পঙ্গুত্ব বরণ করা ছাড়াই বেঁচে ফিরে এসেছে।’

সবশেষে তার স্ত্রী লিখেছেন, ‘এই বছরটা স্রষ্টার অশেষ রহমতে কত ভালোই না কাটলো!’

দুজনের লেখায় দুটি দৃষ্টিভঙ্গি। একই ঘটনা কিন্তু কেমন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি!

এভাবে আমরা যদি প্রত্যেকটি ঘটনাই ‘আরো অনেক কিছুই ঘটতে পারতো’ এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখি, তবেই আমরা মন থেকে স্রষ্টার কৃতজ্ঞতা আদায় করতে সক্ষম হবো।
[ফেসবুক থেকে সংগৃহিত]
এসএ/