বাংলাদেশে ২২ হাজার কর্মসংস্থান তৈরি করেছে কোকা-কোলা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:১১ পিএম, ২৩ জুন ২০২১ বুধবার
দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কোমল পানীয় কোম্পানি কোকা-কোলা বাংলাদেশ কেবলমাত্র ২০১৯ সালেই এদেশের অর্থনীতিতে প্রায় ১২.২ বিলিয়ন টাকার অবদান রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটির আর্থ-সামাজিক প্রভাব বা সোসিও-ইকোনমিক ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট (এসইআইএ) রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
২০১৯ সালে কোকা-কোলা বাংলাদেশ সিস্টেমের মাধ্যমে গৃহস্থালী, ব্যবসায়িক ও সরকারি আয়ে যুক্ত হওয়া এই আর্থিক অবদানের পরিমাণটি বাংলাদেশের মোট জিডিপির প্রায় ০.১১ শতাংশের সমান, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। কোকা-কোলা বাংলাদেশের এসইআইএ রিপোর্টে আরো দেখা গেছে যে, ভোক্তারা কোকা-কোলা ক্রয় বাবদ ১ টাকা খরচ করলে প্রায় ৮৫ পয়সাই স্থানীয় অর্থনীতিতে যোগ হয়।
২০১৯ সালে বাংলাদেশের আয় ও কর্মসংস্থানের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কোকা-কোলার প্রভাব নিরূপণের জন্য অর্থনৈতিক পর্যালোচনার দায়িত্ব দেয়া হয় বিশ্বখ্যাত বিশেষায়িত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান স্টুয়ার্ড রেডকুইনকে। নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ওয়েসলি লিওনটিফের “ইনপুট-আউটপুট” পদ্ধতির মাধ্যমে এই অর্থনৈতিক পর্যালোচনা তৈরি করা হয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতিবিদরাও এ ধরনের গবেষণা পরিচালনার ক্ষেত্রে উক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন।
দ্য কোকা-কোলা কোম্পানি পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। কৌশলগত দিক থেকেও দেশটি কোকা-কোলার জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত। তিনটি ভিন্ন ভিন্ন ইউনিটের সমন্বয়ে বাংলাদেশে দ্য কোকা-কোলা সিস্টেম গঠিত। ইউনিটগুলো যথাক্রমে- কোকা-কোলা বাংলাদেশ লিমিটেড (সিসিবিএল), ইন্টারন্যাশনাল বেভারেজ প্রাইভেট লিমিটেড (আইবিপিএল) এবং আব্দুল মোনেম লিমিটেড (এএমএল)। নিজস্ব প্ল্যান্ট দু’টির পাশাপাশি বোতলজাতকরণ ও সরবরাহ কার্যক্রমে বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অবদান রাখছে কোকা-কোলা সিস্টেম।
কোকা-কোলা সিস্টেম ২০১৯ সালে বাংলাদেশে প্রায় ৬.১ বিলিয়ন টাকা সমমূল্যের পণ্য ও সেবা সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে ৭৫ শতাংশই নেয়া হয়েছে স্থানীয় উৎস থেকে। ফলে বাংলাদেশের হাজার হাজার বিক্রেতা বাড়তি লাভবান হয়েছে। কোকা-কোলার সকল ব্র্যান্ডই স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করা হয় এবং বাংলাদেশি কর্মীরাই এদেশের ভোক্তাদের জন্য তা বাজারজাত করে থাকেন।
আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে কোকা-কোলা সিস্টেমের প্রভাবকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন- স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল সংগ্রহ থেকে শুরু করে আপস্ট্রিমে পরোক্ষ প্রভাব রাখা, কোম্পানির মাধ্যমে তৈরি হওয়া প্রত্যক্ষ প্রভাব এবং বিক্রি ও সরবরাহের মাধ্যমে ডাউনস্ট্রিমে পরোক্ষভাবে রাখা সার্বিক প্রভাব। এছাড়া, স্থানীয়দের কর্মসংস্থান তৈরি, সরকারকে ট্যাক্স প্রদান, পণ্য ও সেবা ক্রয় এবং সাপ্লাইয়ারদের কাছ থেকে প্রাথমিক যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে সহায়তার মাধ্যমে পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে দ্য কোকা-কোলা কোম্পানি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।
প্রতি বোতল কোকা-কোলা উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রোডাকশন লাইন থেকে শুরু করে ভোক্তাদের হাতে পৌঁছানো পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়ায় বাণিজ্য, কৃষি, পরিবহন, উৎপাদন, খুচরা বিক্রয়, বিজ্ঞাপন সহ অন্যান্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ নানান অবদান রয়েছে।
কোকা-কোলা সিস্টেম বাংলাদেশে প্রায় ২২ হাজার ১০০ কর্মসংস্থান তৈরি করেছে। এর মধ্যে প্রত্যক্ষভাবে প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে জড়িত রয়েছে ৮৩৩ জন। আর পরোক্ষভাবে কোকা-কোলার সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ২১ হাজার ৩০০। এই সংখ্যা বাংলাদেশের মোট কর্মসংস্থানের প্রায় ০.০৩ শতাংশ। কোম্পানির প্রতিটি প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের সঙ্গে দেশের বাণিজ্য, পরিবহন, কৃষি, উৎপাদন ও অনান্য খাতের প্রায় ২৬টি কর্মসংস্থান সম্পৃক্ত রয়েছে। বাংলাদেশে কোকা-কোলা সিস্টেমের মাধ্যমে তৈরি হওয়া কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী রয়েছে বাণিজ্য খাতে। আর এর পরেই রয়েছে পরিবহন ও কৃষি খাত।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনের এই ঐতিহাসিক সময়ে এদেশে টেকসই ব্যবসা সম্প্রসারণের বিষয়ে কোকা-কোলা তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে একটি স্থিতিশীল ভবিষ্যৎ নির্মাণের ক্ষেত্রে কোকা-কোলা অনুগত সঙ্গীর ভূমিকা পালন করে যাবে।