ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

অপারেশন অর্ধেক করে প্রসূতিকে ফেলে চলে গেলেন চিকিৎসক!

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৫:০০ পিএম, ২৪ জুন ২০২১ বৃহস্পতিবার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে এক অন্তসত্বা নারীকে অর্ধেক অস্ত্রোপচার করে ফেলে চলে গেলেন এক চিকিৎসক। বুধবার দুপুরে পৌর এলাকার জেল রোডে আল খলিল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এই ঘটনা ঘটে। রাতে ওই প্রসূতিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে ঢাকায় পাঠানো হয়। 

অন্তসত্বা রিক্তা আক্তার জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের শাকিল মিয়ার স্ত্রী।

স্বজনদের অভিযোগ, রিক্তাকে বুধবার অস্ত্রোপচারের জন্য জেল রোডের আল খলিল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আনা হয়। এসময় গাইনী চিকিৎসক সায়মা রহমান ইমা ওই প্রসূতিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করে অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতি নিতে বলেন। দুপুরে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার পর অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার শুরু করেন চিকিৎসক। এসময় চিকিৎসক দেখেন আল্ট্রাসনোগ্রাফির সাথে রোগীর গর্ভের অবস্থার কোন মিল নেই। তাই রোগীকে অর্ধেক অপারেশন করে থিয়েটারে ফেলে চিকিৎসক চলে যান। 

অর্ধেক অস্ত্রোপচারের কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে প্রসূতি রিক্তার অবস্থা অবনতির দিকে যায়। এই অবস্থায় প্রসূতির স্বজনরা জানতে পেরে হাসপাতালে উত্তেজিত হয়ে উঠেন। তারা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাসপাতালে চলে হুলুস্থুল কাণ্ড। এরই মাঝে ঘটনাটি জেলা শহরে ছড়িয়ে পড়লে সদর মডেল থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

পরে অর্ধেক অপারেশন করা প্রসূতিকে ব্যান্ডেজ করে এম্বুলেন্স যোগে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।

অভিযুক্ত হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খলিল বশির মানিক জানান, রিক্তাকে সকালে শহরের অন্য একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে আল্ট্রাসনোগ্রাফী করলে রিপোর্ট ভালো আসে এবং সেই রিপোর্ট নিয়ে আল খলিল হাসপাতালে চলে আসে অস্ত্রোপচারের জন্য। কিন্তু যখন চিকিৎসক সায়মা রাহমান অস্ত্রোপচার করা শুরু করেন তখন দেখেন যে রিপোর্টের সাথে বাচ্চার অবস্থান ঠিক নেই। রোগীর পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা হাসপাতালে ঝামেলা শুরু করে। পরে আমরা নিজ দায়িত্বে তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাই। 

চিকিৎসক সায়মা রহমান ইমার মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। 

সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এমরানুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরে গর্ভবতী নারীকে এম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হয়। তবে ভুল চিকিৎসার বিষয়ে কেউ এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এএইচ/