ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় দুধ ফেলে খামারীদের প্রতিবাদ
নাটোর প্রতনিধি
প্রকাশিত : ০৩:৫৮ পিএম, ২৬ জুন ২০২১ শনিবার
নাটোরের সিংড়ায় দুধের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় দুধ মাটিতে ঢেলে অভিনব প্রতিবাদ করেছে খামারীরা। গত দুদিন (শুক্র ও শনিবার) উপজেলার বাহাদুরপুর বটতলা এলাকায় প্রায় ৩০ জন খামারী দুধের ন্যয্য দাম না পেয়ে মাটিতে ঢেলে বাড়িতে ফিরে যান।
ক্ষুব্ধ খামারীরা জানান, ক্রেতার অভাবে বর্তমানে তাদের ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে করোনা প্রতিরোধে স্থানীয়ভাবে কঠোর বিধিনিষেধ চলছে। ফলে মিষ্টির দোকান বন্ধ থাকায় তারা দুধ কেনা বন্ধ রেখেছেন। ফলে পানির দামে তাদের বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে করে তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে খড় ও ভূষির দাম বেশি হওয়ায় কম দামে দুধ বিক্রি করে তাদের লোকসান গুণতে হচ্ছে। গরুর খাবারের দামও উঠছেনা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিংড়া উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে প্রায় ৬০০ গরুর খামার রয়েছে। এই খামারকে ঘিরে গড়ে উঠেছে একাধিক বাজার ও হাট। খামারীরা তাদের খামারের গুরুর দুধ এসব স্থানীয় হাট ও বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন। বাড়িতে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি একজন খামারী মহাজনদের কাছে প্রতি দিন ৪০ থেকে ৬০ লিটার দুধ বিক্রি করে থাকেন।
কিন্তু চলমান লকডাউনের কারণে বাজার মন্দা থাকায় নিয়মিত মহাজন (ক্রেতা) না আসায় দুধ বিক্রি হচ্ছেনা। এতে দুধসহ বুক ভরা কষ্ট নিয়ে তাদের বাড়ি ফিরতে হয়। তাই সেখানে মিল্ক ভিটার কারখানা গড়ে তোলার দাবি খামারীদের।
উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ খুরশিদ আলম জানান, কলম, চামারী, হাতিয়ান্দহ এলাকায় বহু খামারী আছে। চামারী ও হাতিয়ান্দহতে বেসরকারিভাবে প্রাণ ও আড়ং দুগ্ধ ক্রয় করে। এছাড়া জেলার মিষ্টি ব্যবসায়ীরাও এসব খামারীদের থেকে দুধ সংগ্রহ করেন। কিন্তু অব্যাহত লকডাউন চলার কারণে ক্রেতার সংকট দেখা দিয়েছে। এছাড়া শুক্রবার কিংবা অন্যান্য ছুটির দিন দুধ ক্রয় বন্ধ থাকে। ফলে খামারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। অনেকেই খামার বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে খামারীদের কথা চিন্তা করে ইতোমধ্যেই উপজেলার ইটালী ও ডাহিয়া ইউনিয়নে সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুধ শীতলীকরণ অর্থাৎ ক্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য সুপারিশ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এনএস/