সহকর্মীকে চুমুর ঘটনায় পদত্যাগ করলেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৩৪ এএম, ২৭ জুন ২০২১ রবিবার
করোনাভাইরাস বিধিনিষেধের মধ্যে নিজ দপ্তরে এক নারী সহকর্মীকে চুমু খেয়ে ও জড়িয়ে ধরার পর চাপের মুখে পদত্যাগ করেছেন ব্রিটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানকক। শনিবার প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। এ খবর বিবিসি’র।
শনিবার (২৬ জুন) হ্যানককের পদত্যাগপত্র ডাউনিং স্ট্রিট প্রকাশ করে। এর আগে সামাজিক দূরত্ব বিধি লঙ্ঘন করার দায়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদ থেকে হ্যানকককে সরিয়ে দেওয়ার দাবি উঠেছিল।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানিয়েছে, ম্যাট হ্যানককের পরিবর্তে সাবেক অর্থমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
দেশটিতে মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কেন্দ্রীয় স্থানে ছিলেন হ্যানকক (৪২)। করোনাভাইরাসজনিত কঠোর বিধিনিষেধ মেনে চলার জন্য জনগণকে নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছেন তিনি। গত বছর দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী একই ধরনের আচরণ করে এ বিধিনিষেধ লঙ্ঘন করার পর তার পদত্যাগকে স্বাগতও জানিয়েছিলেন হ্যানকক।
এদিকে, গত মাসে তিনি তার দপ্তরে একজন জ্যেষ্ঠ সহযোগিকে চুমু খাচ্ছেন ও আলিঙ্গন করছেন, এমন একটি ভিডিও গত ৬ মে যুক্তরাজ্যের দৈনিক দ্য সান ফাঁস করে। সেখানে দেখা যায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিচালক গিনা কোলাডঅ্যাঞ্জেলোকে জড়িয়ে ধরে চুমু দিচ্ছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হ্যানকক। এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর তারা দু’জনেই দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।
তিনি যখন এ কাজ করেন তখন ব্রিটেনজুড়ে লোকের ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শে আসার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। জনগণকে বিধিনিষেধ মানতে বলে নিজেই তা লঙ্ঘন করায় হ্যানককের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে।
এ ঘটনার পর দেশটির লেবার পার্টি থেকে শুরু করে অনেকে তার পদত্যাগের দাবি তুলেন। তারা দাবি করেন, করোনা বিধিনিষেধ আইন প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ম্যাট হ্যানকক। আর তিনিই সেই আইন ভঙ্গ করেছেন, যা গুরুতর অপরাধ। দেশের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা হিসেবে তার পদত্যাগ করা উচিত।
ওই ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হ্যানকক দুঃখ প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘ওই পরিস্থিতিতে আমি সামাজিক দূরত্ব বিধি লঙ্ঘন করেছিলাম, এটি মেনে নিচ্ছি। আমি জনগণকে হতাশ করেছি। আমি খুব দুঃখিত’।
হ্যানককের দুঃখ প্রকাশ করার পর এ বিষয়টি এখানেই শেষ হয়ে গেছে- এমন মন্তব্য করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জনসন। কিন্তু ব্রিটিনের সবগুলো প্রধান সংবাদপত্র তাদের প্রথম পাতায় ‘হ্যানকক নৈতিক কর্তৃত্ব হারিয়েছেন এবং তার অবশ্যই পদত্যাগ করা উচিত’ বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এদিকে, হ্যানককের নিজ দলের এমপি ডানকান বেকারাও তার পদত্যাগ দাবি করেন। শেষ পর্যন্ত চাপের মুখে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়াতে হল হ্যানকককে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের পর শনিবার বিবিসিকে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, তিনি হ্যানককের পদত্যাগপত্র পেয়ে ‘দুঃখিত’।
এএইচ/