ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:২১ পিএম, ২৯ জুন ২০২১ মঙ্গলবার

১ জুলাই শতবর্ষ পূর্ণ করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯২১ সালের ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর ব্রিটিশ আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বপ্রথম নিয়মিত সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি।

এরপর ১৯২৪ থেকে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত প্রতি বছরই (সর্বমোট ২৪ বার) সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। ব্রিটিশ আমলে শেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৬ সালের ২১ নভেম্বর। পাকিস্তান আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৮ সালের ২৪ মার্চ। এরপর ১৯৭০ সাল পর্যন্ত আরও ১৫ বার সমাবর্তন হয়। পাকিস্তান আমলে সর্বশেষ সমাবর্তন হয় ১৯৭০ সালের ৮ মার্চ; সেটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম সমাবর্তন। স্বাধীনতার পর প্রথমবারের মতো (৪০তম) সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাষ্ট্রপতি হিসেবে সমাবর্তন উদ্বোধন করার কথা ছিল; কিন্তু তার আগেই ভোররাতে ঘটে যায় নৃশংস হত্যাকাণ্ড, ১৫ আগস্ট ট্র্যাজেডি। এরপর ৪০তম সমাবর্তন হয় ১৯৯৯ সালের ১৮ ডিসেম্বর। এরপর ২০০১ সালে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। তারপর থেকে নিয়মিত ভাবেই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সর্বশেষ ৫২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয় ৯ ডিসেম্বর ২০১৯ সালে।

এর মধ্য থেকে ২০১০’র দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন নিয়ে তৈরি করা হলো এই প্রতিবেদন-

৪৬তম সমাবর্তন
২০১২ সালের ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৬তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবর্তনের চ্যান্সেলর ছিলেন জিল্লুর রহমান, প্রধান বক্তা ছিলেন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার তৎকালীন মহাসচিব প্যাসকেল ল্যামি এবং উপাচার্য ছিলেন আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সমাবর্তনে প্যাসকেল ল্যামি-কে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি ডিগ্রি দেওয়া হয়। এই সমাবর্তনে ১৬ হাজার আট শত ২৬ জন গ্র্যাজুয়েটকে সনদ প্রদান করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৫৩ জন এমফিল এবং ১০০ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারীও রয়েছে। এছাড়াও কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৫৮ জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

৪৭তম সমাবর্তন
২০১৩ সালের ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৭তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবর্তনের চ্যান্সেলর ছিলেন জিল্লুর রহমান, প্রধান বক্তা ছিলেন ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী এবং উপাচার্য ছিলেন আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সমাবর্তনে প্রণব মুখার্জী-কে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল’ ডিগ্রি দেওয়া হয়। এই সমাবর্তনে ৮ হাজার জন গ্র্যাজুয়েটকে সনদ প্রদান করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ৪০ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারীও রয়েছে। এছাড়াও কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৩৭ জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

৪৮তম সমাবর্তন
২০১৪ সালের ৭ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৮তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবর্তনের চ্যান্সেলর ছিলেন আব্দুল হামিদ, প্রধান বক্তা ছিলেন ইউরোপিয়ান অরগানাইজেশন ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চের (সার্ন) তখনকার মহাপরিচালক অধ্যাপক রোল্ফ হুয়ের এবং উপাচার্য ছিলেন আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এই সমাবর্তনে অধ্যাপক রোল্ফ হুয়ের-কে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব সায়েন্স’ ডিগ্রি দেওয়া হয়। এই সমাবর্তনে ৮ হাজার ৩১২ জন গ্র্যাজুয়েটকে সনদ প্রদান করা হয়েছে। যাদের মধ্যে ২৫ জন এমফিল এবং ৩৮ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারীও রয়েছে। এছাড়াও কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৩৩ জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

৪৯তম সমাবর্তন
২০১৫ সালের ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবর্তনের চ্যান্সেলর ছিলেন আব্দুল হামিদ, প্রধান বক্তা ছিলেন ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশন (ডব্লিওআইপিও)-এর মহাপরিচালক ফ্রান্সিস গ্যারি এবং উপাচার্য ছিলেন আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এই সমাবর্তনে ফ্রান্সিস গ্যারিকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেওয়া হয়। এই সমাবর্তনে ১ হাজার ১৫৭ জন গ্র্যাজুয়েটকে সনদ প্রদান করা হয়। যাদের মধ্যে ২০ জন এমফিল এবং ৪২ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারীও রয়েছে। এছাড়াও কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৩৫ জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

৫০তম সমাবর্তন
২০১৭ সালের ৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবর্তনের চ্যান্সেলর ছিলেন আব্দুল হামিদ, প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর উপাচার্য ও প্রেসিডেন্ট অমিত চাকমা এবং উপাচার্য ছিলেন আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। এই সমাবর্তনে অমিত চাকমা-কে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব সায়েন্স’ ডিগ্রি দেওয়া হয়। এই সমাবর্তনে ১৭ হাজার ৮৭৫ জন গ্র্যাজুয়েটকে সনদ প্রদান করা হয়। যাদের মধ্যে ৪৩ জন এমফিল এবং ৬১ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারীও রয়েছে। এছাড়াও কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৮০ জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

৫১তম সমাবর্তন
২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫১তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। এই সমাবর্তনের শিক্ষাবিদ, লেখক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। এই সমাবর্তনে ২১ হাজার ১১১ জন গ্র্যাজুয়েটকে সনদ প্রদান করা হয়। যাদের মধ্যে ২৭ জন এমফিল এবং ৮১ জন পিএইচডি ডিগ্রিধারীও রয়েছে। এছাড়াও কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের জন্য ৯৬ জনকে স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

৫২তম সমাবর্তন
২০১৯ সালের ৯ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কসমিক রে রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. তাকাকি কাজিতা। সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সমাবর্তনে অংশগ্রহণের জন্য ২০ হাজার ৭৯৬ জন গ্র্যাজুয়েট নিবন্ধন করে।এছাড়া, সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ৭৯ জন কৃতি শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীকে ৯৮টি স্বর্ণপদক, ৫৭ জনকে পিএইচডি, ৬ জনকে ডিবিএ এবং ১৪ জনকে এম.ফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
এসএ/