বিএইচবিএফসি
লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় বেড়েছে ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:১৩ এএম, ১ জুলাই ২০২১ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০১:৪৬ পিএম, ২ জুলাই ২০২১ শুক্রবার
সদ্যসমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে মোট ৫৫০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুরি ও ৫০০ কোটি টাকার ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশন (বিএইচবিএফসি)। এর বিপরীতে অর্থবছর শেষে মঞ্জুরি ও বিরতণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৬১৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা ও ৫১৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সেই হিসাবে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণ হয়েছে যথাক্রমে ১১২ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ ও ১০২ দশমিক ৭৭ শতাংশ।
বিএইচবিএফসি সারা দেশে ৬১টি শাখা, ১৪টি রিজিওনাল ও ১০টি জোনাল অফিসের মাধ্যমে গৃহ নির্মাণ, ফ্ল্যাট ও হাউজিং ইকুইপমেন্ট কেনার বিরপীতে সরল সুদে ঋণ দিয়ে থাকে। এর মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নতুন করে জিরো ইকুইটি গৃহ নির্মাণ ঋণ চালু করে করপোরেশন। এটিসহ মোট ১১টি ঋণ প্রডাক্টের অনুকূলে গেল অর্থবছরের ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণের এ লক্ষ্য নির্ধারণ করে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ঋণ মঞ্জুরি ও ঋণ বিতরণের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৪৫৫ কোটি ৩১ লাখ টাকা ও ৪২১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছরে ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণের পরিমাণ বেড়েছে যথাক্রমে ১৬০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা ও ৯১ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এছাড়া ২০২০-২১ অর্থবছরে শ্রেণীকৃত ও অশ্রেণীকৃত খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় যথাক্রমে ১৪৩ কোটি ৩০ লাখ ও ৪৭৭ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আদায় হয়েছে যথাক্রমে ৪০ কোটি ও ৫০৯ কোটি টাকা।
এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ঋণ আদায়ের পরিমাণ ছিল ৪৮৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। যেখানে সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে আদায় হয়েছে ৫৪৯ কোটি টাকা। সেই হিসাবে ঋণ আদায়ের পরিমাণ বেড়েছে ৬৪ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, সরকারি পর্যায়ে গৃহঋণ প্রদানকারী একমাত্র আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিএইচবিএফসি ২০২০-২১ অর্থবছরে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ-যাবত্কালের সর্বোচ্চ ব্যবসায়িক সাফল্য অর্জন করেছে। সদ্যসমাপ্ত এ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি অর্জন নির্দেশক অধিকাংশ সূচকে বিগত যেকোনো বছর অপেক্ষা বেশি সাফল্য অর্জনে সক্ষম হয়েছে। ঋণ মঞ্জুরি, ঋণ বিতরণ, শ্রেণীকৃত ও সাধারণ খেলাপিসহ সামগ্রিক ঋণ আদায়, মামলা নিষ্পত্তি ও অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি এবং ঋণের সমুদয় পাওনা পরিশোধকারী গ্রহীতাদের বন্ধকীকৃত দলিলপত্র ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রে বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা থেকে অধিক অর্জন সম্ভব হয়েছে করপোরেশন।
বছরজুড়ে করোনা মহামারীজনিত বিরূপ আর্থসামাজিক অবস্থার মধ্যেও অধিকাংশ সূচকে লক্ষ্যমাত্রার অতিরিক্ত অর্জন প্রতিষ্ঠানটির সারা দেশের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অদম্য আন্তরিক পরিশ্রমের ফসল বলে উল্লেখ করেছেন বিএইচবিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম। এ অর্জনের জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে তিনি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ঋণ মঞ্জুরি, ঋণ বিতরণ ও ঋণ আদায়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের এ অর্জন বিএইচবিএফসির জন্য এ-যাবত্কালের সর্বোচ্চ। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বলছেন, অর্থবছরের শেষ চার মাসে বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সুদৃঢ় নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনার ফলে প্রায় প্রতিটি সূচকে লক্ষ্যমাত্রার অধিক অর্জন সম্ভব হয়েছে। খেলাপি গ্রাহকদের বিরুদ্ধে আদালতে পরিচালিত মামলা নিষ্পত্তি এবং সরকারি বাণিজ্যিক অডিট আপত্তি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রেও সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে সফলতা আগের অর্থবছর অপেক্ষা বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০টি বাণিজ্যিক অডিট আপত্তি নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছিল, যেখানে গত অর্থবছরে নিষ্পত্তি হয়েছে ৪২টি।
করোনাজনিত অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আদালতের কার্যক্রম সীমিত থাকার মধ্যেও আগের বছর অপেক্ষা গত অর্থবছরে মামলা নিষ্পত্তিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৩৪ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ। করপোরেশনের ঋণের সমুদয় পাওনা পরিশোধকারী গ্রাহকদের ঋণের দায়মুক্তি সনদসহ তাদের বন্ধকীকৃত দলিলপত্র ফেরত দেয়ার সংখ্যাও এ অর্থবছরে বেড়েছে।
অন্যদিকে করপোরেশনের করোনাকালীন খরচ সংকোচনের বিপরীতে সার্বিক আদায় ও আয় বেশি হয়েছে। এজন্য ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানটি করপূর্ব নিট মুনাফা (সাময়িক) ১৭৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এসএ/