ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

কঠোর লকডাউনেও সক্রিয় কোয়ান্টামের দাফন সেবা

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ১০:০৯ পিএম, ১ জুলাই ২০২১ বৃহস্পতিবার

সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউনের মধ্যেও করোনায় মৃতদেহ দাফন বা সৎকারে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সক্রিয় রয়েছে দেশের অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের দাফন কার্যক্রম। ধর্মবর্ণনির্বিশেষে শেষ বিদায় জানাতে দিনে বা রাতে ২৪ ঘণ্টা কাজ করে যাচ্ছেন কোয়ান্টামের হাজারো স্বেচ্ছাসেবী। লকডাউনের মধ্যেও রাজধানীসহ সারাদেশেই চলছে নিরলস মানবিক এ সেবা কার্যক্রম। 

২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত প্রায় চার হাজার মরদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের কর্মীরা। এর মধ্যে মুসলিম ৩৪২৮ জন, সনাতন ৪৮৭জন, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া ২২ জন এবং সমাধি করা হয়েছে ৩৪ জনের।

রাজধানীর কাকরাইলে কোয়ান্টাম দাফন কার্যক্রমের দায়িত্বশীল খন্দকার সজিবুল ইসলাম জানান, গতকাল ১ জুলাই সারাদেশে সর্বাত্মক লকডাউনের প্রথমদিনে রাত পর্যন্ত ঢাকাতে আমরা ২০ জন মরদেহের শেষ বিদায়ে পাশে থাকতে পেরেছি। 

গত বছর ২০২০ সালের এপ্রিলে করোনার শুরু থেকেই করোনা বা করোনা উপসর্গে মৃত ব্যক্তিদের শেষকৃত্যে অংশ নিচ্ছে কোয়ান্টাম। স্বপরিকল্পনা, স্বঅর্থায়ন আর স্বেচ্ছাসেবকদের স্বেচ্ছাশ্রমে চলছে এ দাফন সেবা। কোয়ান্টাম দাফন সেবা কার্যক্রমে ঢাকার দাফন ক্যাম্পে অংশ নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন দাফনকর্মীরা। বাসা থেকে এসেও অংশ নিচ্ছেন অনেকেই। সব মিলিয়ে ঢাকাতে দাফন সেবায় জড়িত রয়েছেন দুই শতাধিক স্বেচ্ছাসেবক। এসব স্বেচ্ছাকর্মীদের কেউ শিক্ষার্থী, কেউ শিক্ষক, কেউ সাংবাদিক, কেউ ব্যবসায়ী কেউ আবার আইনজীবী। নানান পেশার নানান বয়সী স্বেচ্ছাসেবকদের তালিকায় রয়েছেন আলাদা নারী স্বেচ্ছাসেবক দল। মুসলিম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্যে রয়েছে আলাদা ব্যবস্থা। 

মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে এগিয়ে আসে প্রতিষ্ঠানটির এই স্বেচ্ছাসেবক দল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ ধর্মীয় রীতি মেনে চলছে কোয়ান্টামের এ সেবা। হাসপাতাল ছাড়াও কাকরাইলে নিজস্ব গোসলখানায় ভাইরাসমুক্ত করে যথাযথভাবে শেষ সজ্জায় সাজিয়ে প্রয়োজনে কবরস্থান বা সমাধি পর্যন্ত চলছে কোয়ান্টামের এ সেবা। তবে গত বছরের চিত্রের তুলনায় এবছরের চিত্র অতটা অমানবিক নয়। গত বছর আপনজনদের দাফন বা সৎকারে এগিয়ে না আসা, লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়া ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। এ বছর আপনজনদের অনেকেই পাশে থাকছেন। অংশ নিচ্ছেন জানাজায়। নিজেরাই দায়িত্ব নিচ্ছেন দাফনের।

প্রসঙ্গত, কোয়ান্টামের বহুমুখী সেবার মধ্যে ২০০৪ সালে রাজশাহীতে দাফন সেবা কার্যক্রম চালু হয়। ২০২০ সাল থেকে এপর্যন্ত করোনাকালে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন করোনায় মৃতদের শেষকৃত্যে মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছে। এখনো কঠোর এই লকডাউনের মধ্যেও ফোন পাওয়া মাত্রই কর্মীরা ছুটে যাচ্ছেন হাসপাতাল, বাসা, গোরস্থান কিংবা শশ্মানে। মানবিক মূল্যবোধ থেকেই দেশের যেকোনো দুর্যোগে সাধ্যমতো সেবা দিতে প্রস্তুত কোয়ান্টাম কর্মীরা।

আরকে//