ক্যারিবীয় ঝড় রুখে টি-টোয়েন্টি সিরিজও জিতল প্রোটিয়ারা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৩৪ এএম, ৪ জুলাই ২০২১ রবিবার
কুইন্টন ডি কক (ডানে) ও এইডেন মার্করাম।
ক্রিস গেইল, কাইরন পোলার্ড, আন্দ্রে রাসেল, এভিন লুইস, ডোয়াইন ব্রাভো এবং নিকোলাস পুরান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের সেরা বিজ্ঞাপন বলতে গেলে এরাই। অথচ ঘরের মাঠে এমন তারকা সমৃদ্ধ শক্তিধর দল নিয়েও দক্ষিণ আফ্রিকার ছুড়ে দেয়া ১৬৮ রানের উপযুক্ত জবাব দিতে পারল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বরং সমতায় থাকা পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ক্যারিবীরা হেরে গেল ৩-২ ব্যবধানেই।
শনিবার বাংলাদেশ সময় মধ্যরাতে (৪ জুলাই) পঞ্চম ও শেষ ম্যাচে বড় সংগ্রহের আভাস দিয়েও নির্ধারিত ওভারে ৪ উইকেটে ১৬৮ রান তোলে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাব দিতে নেমে লুইসের ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরির পরও দেড়শ ছুঁতে পারেনি উইন্ডিজ। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৪৩ রান তুলতে সক্ষম হয় স্বয়াগতিকরা। যার ফলে ২৪ রানের জয়ে সিরিজ বগলদাবা করে সফরকারী প্রোটিয়ারা।
টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াকু সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন কুইন্টন ডি কক ও এইডেন মার্করাম। এই দুজনের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে দেড়শ ছাড়ায় প্রোটিয়ারা। সাজঘরে ফেরার আগে দুজনই পেয়েছেন অর্ধশতকের দেখা। ৪২ বলে চারটি চার ও দুই ছক্কায় ৬০ রানে আউট হন ডি কক। আর ৪৮ বলে তিন চার ও চার ছক্কায় ৭০ রান করেন মার্করাম।
দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ আরও বাড়তে পারতো। কিন্তু শেষ দিকে মন্থর গতির ব্যাটিং করেন ডেভিড মিলার ও উইয়ান মুলডার। প্রথমজন ১৬ বলে ১৮ এবং দ্বিতীয়জন ৯ বলে ৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তবে এর থেকেও প্রস্তর যুগের ব্যাটিং করেছেন কাইরন পোলার্ড, শিমরন হেটমেয়ার, গেইল এবং পুরান। তাদের ব্যাটিং দেখে বোঝার উপায় ছিল না ম্যাচটা টি-টোয়েন্টি সংস্করণের!
গ্রেনাডায় অলিখিত ফাইনালে তারকাদের অমন ব্যাটিংই ভুগিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। যা ক্যারিবীয়দের ছিটকে দিয়েছে ম্যাচ এবং সিরিজ থেকে। হেটমেয়ার ৩১ বলে ৩৩, পোলার্ড ১৫ বলে ১৩, গেইল ৯ বলে ১১ এবং পুরান ১৪ বলে ২০ রানে আউট হন। অথচ ম্যাচে সহজ জয়ের পথ তৈরি করে দিয়ে গিয়েছিলেন ওপেনার লুইস। বিফলে গেল তার দুর্দান্ত হাফসেঞ্চুরি।
লেন্ডল সিমন্স মাত্র ৩ রান করে লিন্ডের শিকার হলেও লুইস ঝড়ে সাত ওভারেই ৬৫ রান তুলে ফেলে উইন্ডিজ। এসময় উইকেট খুইয়ে ফেরেন গেইল। এরপরেই লাগে মড়ক। লুঙ্গি এনগিডির বলে মার্করামের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লুইস। ফেরার আগে ৩৪ বলে পাঁচটি চার ও তিন ছক্কায় ৫২ রান করেন এই মারকুটে। এরপর পোলার্ডদের কাণ্ডজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের মাসুল দিয়েছে ক্যারিবীয়রা।
১৩তম ও ১৮তম ওভারে দুটি করে ছক্কা মেরে লড়াইয়ে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন পুরান। তবে সেটা ওই আভাস পর্যন্তই। বরং আস্কিং রেটের চাপে নিয়মিত বিরতি দিয়ে উইকেট খুইয়েছে ক্যারিবীয়রা। একটা পর্যায়ে অল আউট হওয়ার আশঙ্কায় পড়েছিল স্বাগতিকরা। তাবরাইজ শামসি ও রাবাদাদের দারুণ নৈপুণ্যে কঠিন হয়ে যাওয়া ম্যাচটা সহজেই জিতে নেয় প্রোটিয়ারা।
এর আগে ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে পাত্তাই পায়নি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টেস্টে হোয়াইটওয়াশ হওয়ার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দেয় ক্যারিবীয়রা। কিন্তু কুড়ি ওভারের ক্রিকেট সংস্করণের সিরিজটিতে দারুণ শুরুর পরও শেষটায় সুন্দর সমাপ্তি টানতে পারল না উইন্ডিজ।
তাইতো দুটো সিরিজের ট্রফি নিয়েই দেশে ফিরছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সঙ্গে আছে ম্যাচ সেরা (মার্করাম) ও সিরিজ সেরার (তাবরাইজ শামসি) পুরষ্কারও।
এনএস//