নজির সৃষ্টি করেছে ‘জয়বাংলা অক্সিজেন সার্ভিস’ (ভিডিও)
আকবর হোসেন সুমন
প্রকাশিত : ১২:৪১ পিএম, ৬ জুলাই ২০২১ মঙ্গলবার | আপডেট: ১২:৪২ পিএম, ৬ জুলাই ২০২১ মঙ্গলবার
মহামারিকালে মানবসেবায় অনন্য নজির সৃষ্টি করেছে ‘জয়বাংলা অক্সিজেন সার্ভিস’। শ্বাসকষ্টে ভোগা করোনা রোগীরা চব্বিশ ঘণ্টা অক্সিজেন সেবা পাচ্ছেন এই উদ্যোগের আওতায়। একবছরে প্রায় ৮ হাজার মুমূর্ষু রোগী পেয়েছেন এই সেবা। ছাত্রলীগের তিন তরুণ শুরু করলেও ইতিমধ্যে সারাদেশ থেকে অন্তত ১৫০ জন যুক্ত হয়েছেন মহতি এই উদ্যোগে। আওয়ামী যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগও এগিয়ে এসেছে করোনা রোগীদের সেবায়।
‘একটি নতুন ভোরের প্রত্যাশা’ এ শ্লোগান নিয়ে ২০২০ সালের ২৫ জুন যাত্রা শুরু করে ‘জয়বাংলা অক্সিজেন সার্ভিস’। ছাত্রলীগের তিন তরুণ মুমূর্ষু করোনা রোগীকে অক্সিজেন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন বিরামহীন।
সিলিন্ডার ভাড়া করে বিনামূল্যে সেবা দিতে গিয়ে পরিবারসহ করোনা সংক্রমিত হয়েও থেমে যাননি অদম্য এই মানবসেবকরা। ডাক পেয়েই ছুটে গেছেন রোগীর বাসায়। রাজধানী ছাড়িয়ে গেল বছরই জয়বাংলা অক্সিজেন সেবা ছড়িয়ে দিয়েছেন বিভাগীয় শহরগুলোতে।
বিতর্ক এড়াতে অর্থ সাহায্য না নিয়ে শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে অক্সিজেন সিলিন্ডার গ্রহণ ও তা রিফিল করিয়ে নিয়েছেন তারা। এক বছরের পথচলায় নানা অভিজ্ঞতার কথা জানালেন জয়বাংলা অক্সিজেন সার্ভিসের অন্যতম উদ্যোক্তা সাবেক এই ডাকসু নেতা।
জয়বাংলা অক্সিজেন সার্ভিসের উদ্যোক্তা সাদ বিন কবির চৌধুরী বলেন, হসপিটালে গেলে রোগী এমনিতেই পেনিক্ট হয়ে যায়। সেখান থেকে উত্তরণের জন্য আমরা চিন্তা-ভাবনা করি বাসায় কিভাবে এই সেবাটা পৌঁছানো যায়। তখন স্বেচ্ছাসেবক ডাক্তারদের সমন্বয়ে আমরা একটি টিম গঠন করি এবং মানুষের বাসায় বিনামূল্যে এই অক্সিজেন সেবাটা পৌঁছে দেই। আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগ যেমন রয়েছে সমাজের সব শ্রেণী পেশার মানুষের সহযোগিতা এতে রয়েছে। আর একটি বিষয় এই উদ্যোগটার ক্ষেত্রে আমরা আর্থিক লেনদেনকে নিরুৎসাহী করে থাকি। আমরা কোন আর্থিক গ্রহণ করি না, পণ্য বা কোন ইকুপমেন্ট গ্রহণ করি।
পথেই দেখা হয় রোগী সেবায় ছুটে চলা আরেক উদ্যোক্তার সঙ্গে। জরুরি ডাক পেয়ে ছুঁটছেন নাওয়া-খাওয়া বাদ দিয়েই।
উদ্যোক্তা সবুর খান কলিন্স বলেন, আমাদের কাছে কোন ফোন আসে যে, কোন রোগীর জন্য জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সিলিন্ডার দরকার আমরা সেখানেই ছুটে যাই। আমাদের উদ্দেশ্যই হলো এই করোনা মহামারির সময়ে অসহায় মানুষের সঠিক সময়ে অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করা।
মানবতার সেবায় একই পথে পা বাড়িয়েছেন কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের একঝাঁক তরুণ। হাসপাতাল থেকে বাড়ি; বাড়ি থেকে হাসপাতাল। রোগীর প্রয়োজনই তাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
তাদেরিই একজন জানান, আমিসহ আমাদের ১৯ জন ছেলে করোনা পজিটিভ হয়েছে আইসোলেশনে রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে। যতই পরিশ্রম করি না কেন দিন শেষে ওই পরিশ্রমকে পরিশ্রম মনে হয় না।
মহামারি মোকাবেলার এ যুদ্ধে যুক্ত হয়েছে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগও। সংকটাপন্ন রোগীদের বিনামূল্যে অক্সিজেন ও অ্যাম্বুলেন্স সেবা দিতে দেশজুড়ে কাজ শুরু করেছে সংগঠনটি।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে অসহায় মানুষের বন্ধু হিসেবে পাশে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগের আরেক সহযোগী সংগঠন যুবলীগ। রোগীর কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়েই দায়িত্ব শেষ নয়, চিকিৎসার বন্দোবস্ত করছে এই দুর্যোগেও।
করোনা মহামারিকালে অনন্য সব উদ্যোগ নিয়ে মানবতার পাশে দাঁড়িয়েছে আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকেও এমন উদ্যোগের প্রত্যাশা সবার।
ভিডিও-
এএইচ/