ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

জীবন-অভ্যাস পরিবর্তনই প্রকৃত সমাধান

একুশে টেলিভিশন  

প্রকাশিত : ০৭:৩৪ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২১ বুধবার | আপডেট: ০৭:৪৪ পিএম, ১৪ জুলাই ২০২১ বুধবার

একবছর ধরে চলল গবেষণা। এ পুরো সময় ধরে দুই গ্রুপের রোগীদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হলো। একবছর পর দুদলের সব রোগীকে পরীক্ষা করা হলো—কোন গ্রুপে কেমন অগ্রগতি হয়েছে। পাওয়া গেল অভূতপূর্ব ফলাফল। দেখা গেল, ডা. অরনিশের কর্মসূচি অনুসরণ করেছিলেন যারা, তাদের ধমনীতে ব্লকেজের পরিমাণ তো বাড়েই নি; বরং কমেছে। এবং হৃৎপিন্ডের চারপাশে ছোট ছোট পরিপূরক রক্তনালিগুলো সচল হয়ে উঠেছে, যা ‘ন্যাচারাল বাইপাস’ নামে পরিচিত। ধমনীতে রক্ত চলাচল সন্তোষজনকভাবে বেড়েছে। সেইসাথে রোগীরা মুক্তি পেয়েছেন কষ্টকর বুকব্যথা থেকে। ফলে তাদের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কাও কমে এসেছে।

অপরদিকে কন্ট্রোল গ্রুপের ২০ জনের প্রায় সবারই ধমনীতে ব্লকেজের পরিমাণ বেড়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি তো হলোই না; বরং কারো কারো অবস্থার বেশ অবনতি ঘটল।

জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে করোনারি হৃদরোগ থেকে মুক্তির এ যুগান্তকারী সাফল্যের কথা বিশ্ববাসী প্রথম জানতে পারে ১৯৮৮ সালে। সে বছরই জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন গবেষণাটি সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশ করে।

অবশ্য এ ধরনের গবেষণা তখন একেবারে নতুনও নয়। এর আগে একেকজন চিকিৎসক আলাদা আলাদাভাবে একেকটি বিষয় নিয়ে এ-সংক্রান্ত গবেষণা-কার্যক্রম পরিচালনা করেছিলেন, যেমন : ডা. হার্বার্ট বেনসন গবেষণা চালিয়েছিলেন মেডিটেশনের প্রভাব নিয়ে, ডা. র‌্যাল্ফ পাফেনবার্গার কাজ করেছিলেন ব্যায়াম নিয়ে, ডা. ফ্র্যাঙ্ক সাক্স দেখতে চেয়েছিলেন খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের প্রভাব। প্রথমত, এসব গবেষণার কোনোটিই সমন্বিত ও পূর্ণাঙ্গ ছিল না। দ্বিতীয়ত, সেগুলো ছিল উচ্চ রক্তচাপ ও অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের রোগীদের নিয়ে। হৃদরোগীদের নিয়ে কোনোটিই নয়।

ডা. অরনিশই হৃদরোগ নিরাময়ে এ ধরনের পূর্ণাঙ্গ গবেষণার সূত্রপাত করেন। তিনি হৃদরোগীদের সমন্বিত জীবনাচার পরিবর্তনে উৎসাহী করে তোলেন। যেমন : নিয়মিত মেডিটেশন, সুস্থ খাদ্যাভ্যাস, ইয়োগা, হাঁটা, গ্রুপ-সাপোর্ট ও কাউন্সেলিং। ফলে উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের গ্লুকোজ ও কোলেস্টেরলের মাত্রা তো নিয়ন্ত্রণে এলোই, সাথে করোনারি ব্লকেজের পরিমাণও কমতে শুরু করল।

লেখাটি ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. আতাউর রহমান এর লেখা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি ছাড়াই ‘হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া হয়েছে। 

আরকে//