আঙিনায় ফলবাগান করেই লাখপতি কৃষক
নড়াইল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১০:৫২ এএম, ১৮ জুলাই ২০২১ রবিবার
নিজ বাগানের ফল হাতে কৃষক বাবুল হোসেন
বাড়ির আঙিনায় মিশ্র ফলবাগান করে লাখপতি হয়েছেন নড়াইলের এক কৃষক। পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন নার্সারি ও সবজি ক্ষেত। মিশ্র এই ফলবাগানে রয়েছে হরেক রকম ফলমূল। কোনও প্রকার কীটনাশক ছাড়া জৈব সার ও বালাইনাশক ব্যবহার করে বিভিন্ন জাতের ফল এবং শাক-সবজি বাজারজাত করছেন তিনি।
বলছিলাম নড়াইলের কালিয়া পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দনগর এলাকার কৃষক বাবুল হোসেন (৪৮)-এর কথা। বাগানের খরচ বাদে বছরে তিনি আয় করেন লক্ষাধিক টাকা। বসত বাড়ির আঙিনাসহ পাশের এক একর জমিতে ব্যতিক্রমী এই বাগানটি ২০১০ সালে গড়ে তোলেন বাবুল হোসেন। তার এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগে অনুপ্রাণিত এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাবুল হোসেনের মিশ্র ফল বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে বিভিন্ন জাতের মাল্টা, কমলা লেবু, আনারস, ড্রাগন, ডালিম, আম, পেয়ারা, আমড়া, কলা, পেঁপেসহ হরেক রকম দেশি-বিদেশি ফল। সেইসঙ্গে বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজিসহ রয়েছে নার্সারি ক্ষেত। এছাড়া রয়েছে দুর্লভ ট্যাং ও স্ট্রবেরি ফলের চাষাবাদ।
ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগের বিষয়ে কৃষক বাবুল হোসেন জানান, প্রথমদিকে বসতবাড়ির আঙিনায় ৬০ শতক জমিতে নার্সারির আবাদ শুরু করেন তিনি। সাফল্যের ধারাবাহিকতায় দুই বছর পর ২০১০ সালে নার্সারির মধ্যেই শুরু করেন মিশ্র ফলবাগান। এদিকে প্রায় আট মাস আগে আরও ৪০ শতক জমিতে আরেকটি মিশ্র ফলবাগান শুরু করেন তিনি। মোট এক একর জমিতে ১৩০ প্রজাতির ফলজ ও নার্সারির চারা রয়েছে এখানে। বাগান পরিচর্যায় তাকে সহযোগিতা করেন স্ত্রী ও দুই সন্তান। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে নার্সারিসহ মিশ্র ফলবাগানের পরিধি আরও বাড়াবেন বলে জানিয়েছেন বাবুল হোসেন।
এদিকে, বাবুল হোসেনের ব্যতিক্রমী এ ফলবাগান দেখে অনুপ্রাণিত এলাকাবাসী। কালিয়া উপজেলার খাশিয়াল ইউনিয়নের শুড়িগাতী গ্রামের খাইরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বাবুল হোসেনের ব্যতিক্রমী বাগানে হরেক রকম ফল রয়েছে। পাশাপাশি নার্সারিও রয়েছে। তার বাগান দেখে অনেক ভালো লেগেছে। আমাদের বসতবাড়ির আশেপাশে এমন একটি বাগান করার শখ হয়েছে।
কালিয়া পৌরসভার মেয়র ওয়াহিদুজ্জামান হীরা বলেন, পৌর এলাকায় বাবুল হোসেনের ব্যতিক্রমী ফলবাগান ও নার্সারি মুগ্ধ করেছে সবাইকে। পতিত জমি বা বসতবাড়ির আশেপাশে যাদের বাগান করার সুযোগ রয়েছে, তাদের উচিত এ ধরণের মিশ্র ফলবাগান গড়ে তোলা। তাহলে পারিবারিকভাবে যেমন দেশি-বিদেশি ফলের চাহিদা পূরণ হবে, তেমনি আর্থিকভাবে লাভবান হবেন তারা।
কালিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুবীর কুমার বিশ্বাস বলেন, বসতবাড়ির আঙিনায় বাবুল হোসেনের মিশ্র ফলবাগানটি যেমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ, তেমনি তাকে এনে দিয়েছে আর্থিক স্বচ্ছলতা। ব্যতিক্রমী এই বাগান দেখে অনুপ্রাণিত অন্যরাও। তার বাগানের পরিধি ও সমৃদ্ধি অর্জনে আমাদের সুদৃষ্টি রয়েছে।
এনএস//