ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

ফকির আলমগীর আর নেই

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:২৫ এএম, ২৪ জুলাই ২০২১ শনিবার | আপডেট: ০৭:২৮ এএম, ২৪ জুলাই ২০২১ শনিবার

একুশে পদকপ্রাপ্ত জনপ্রিয় গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর আর নেই। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার (২৩ জুলাই) রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। 

তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলেসহ অংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। 

মাশুক আলমগীর রাজীব জানান, শুক্রবার রাত ১০টার দিকে কোভিড ইউনিটে ভেন্টিলেশনে থাকা অবস্থায় তার বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়। পরে রাত ১০টা ৫৮ মিনিটে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এর আগে, গত ১৫ জুলাই থেকে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ফকির আলমগীরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৯ জুলাই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। করোনাভাইরাসের দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও গত ১৪ জুলাই এই সংগীত শিল্পীর করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। পরে শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকলে পরদিন তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।

তার ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল। হাসপাতালে ভর্তির পর তাকে দুই ব্যাগ প্লাজমা দেয়া হয়েছিল।

ফকির আলমগীর ১৯৫০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মো. হাচেন উদ্দিন ফকির, মা বেগম হাবিবুন্নেসা।

ষাটের দশক থেকে গণসংগীতের সঙ্গে যুক্ত ফকির আলমগীর ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠী ও গণশিল্পী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানে শামিল হন। পরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি যোগ দেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর করা ফকির আলমগীর গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করেন। ‘মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান’, ‘গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান’, ‘আমার কথা’, ‘যারা আছেন হৃদয়পটে’সহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে তার। ‘আবহমান বাংলার লোকসংগীত’ নামে গতবছর একটি বইও লিখেছেন তিনি।

সংগীতের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য এ পর্যন্ত পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় ‘একুশে পদক’, ‘শেরেবাংলা পদক’, ‘ভাসানী পদক’, ‘সিকোয়েন্স অ্যাওয়ার্ড অব অনার’, ‘তর্কবাগীশ স্বর্ণপদক’, ‘জসীমউদ্‌দীন স্বর্ণপদক’, ‘কান্তকবি পদক’, ‘গণনাট্য পুরস্কার’, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক মহাসম্মাননা’, ‘ত্রিপুরা সংস্কৃতি সমন্বয় পুরস্কার’, ‘ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড যুক্তরাষ্ট্র’, ‘জনসংযোগ সমিতি বিশেষ সম্মাননা’, ‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড বিশেষ সম্মাননা’ ও ‘বাংলা একাডেমি সম্মানসূচক ফেলোশিপ’। 


ফকির আলমগীরের উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে রয়েছে ‘ও সখিনা গেছোস কিনা ভুইলা আমারে’, ‘নাম তার ছিল জন হেনরি’। গণসংগীত ও দেশীয় পপসংগীতে তার রয়েছে ব্যাপক অবদান। তিনি ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।

এএইচ/