ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

মাইক্রোবাস চালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

হিলি প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০৭:৫৭ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২১ শনিবার

দিনাজপুরের হিলিতে রোহিঙ্গা বলে সম্বোধন করায় ইলিয়াস হোসেন (৩৪) নামের এক মাইক্রোবাস চালককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।এদিকে তার হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের ফাসির দাবিতে স্থানীয় কার ও মাইক্রোবাস চালক সমবায় সমিতি আগামীকাল সকালে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষনা দিয়েছে। 

গত বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড় সংলগ্ন মাইক্রোবাস স্ট্যান্ডে  মারধরের ঘটনা ঘটে। এসময় কয়েকজন যুবক তাকে মারধর করে গুরুত্বর আহত করে ফেলে রেখে যান। শনিবার সকালে বিরামপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  সে মৃত্যুবরন করেন। নিহত ইলিয়াস হোসেন হিলির পাইকপাড়া গ্রামের মৃত মহসিন আলীর ছেলে। সে হিলি স্থলবন্দর এলাকায় দীর্ঘদিন যাবৎ মাইক্রোবাস চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

ইলিয়াসের সহকর্মীরা জানান, হিলির বৈগ্রাম এলাকার জনৈক আকতারুজ্জামান অবস্থা সম্পুর্ন হওয়ার পরেও নিজে মাঠে ঘাটে কাজ করায় তাকে স্থানীয় লোকজন বিভিন্ন কথা বলে উত্যক্ত করতো বা সেও ওইসব কথা শুনে খুব রেগে যেতো। অন্যদের মতো ইলিয়াস ও তাকে উত্যোক্ত করতো।অন্যান্য দিনের মতো ঈদের পর দিন ইলিয়াস গ্রামের বাড়ি পাইকপাড়া থেকে হিলিতে আসার পথে বৈগ্রামের আক্তারুজ্জামানকে অন্যদের মতো সেও ইয়ারকি করে রোহিঙ্গা বলে পেছন থেকে সম্বোধন করে। এতে আকতারুজ্জামান ক্ষিপ্ত  হয়ে তার সাইকেলকে তাড়া করেন, কিন্তু তাকে ধরতে পারেনি। পরে সে  হিলিতে তার আত্নিয় স্বজনকে তাকে উত্যোক্ত এই ক্ষেপানোর বিষয়টি জানালে কয়েকজন যুবক  মাইক্রোস্ট্যান্ডে গিয়ে ইলিয়াসকে  মারধর করেন ও গলা ধরে তুলে থ্যাকনা দেন। এতে ইলিয়াস হোসেন গুরুত্বর আহত হলে তারা চলে যান। এসময় তার সহকর্মীরা আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে  উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কতর্ব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাহিরে পাঠান।  কিন্তু অর্থাভাবে তাকে বাহিরে না নিতে পারায় পার্শ্ববর্তী বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন, সেখানে আজ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরন করেন।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, নিহত ইলিয়াস হোসেন কি একটি বিষয় নিয়ে একজনের সাথে দুষ্টমি করতো। সেই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কয়েকজন মিলে গতবৃহস্পতিবার মাইক্রোস্টান্ডে গিয়ে তাকে ধরে পা উপরের দিকে মাথা নিচের দিক করে ফেলে দেয়। এতে তার মাথার শেষের দিকে মেরুদন্ডের হার ভেঙ্গে যায়।পরে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। সে সময় কর্তব্যরত চিকিৎসক এটি অপারেশন করলে ভালো হবে মর্মে জানায় তার পরিবারকে। সেজন্য তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন কিন্তু তারা তাকে দিনাজপুর না নিয়ে গিয়ে পার্শ্ববর্তী বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মৃত্যুবরন করেন। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে পাঁচজনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেছে। মামলার এজাহার ভুক্ত আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে, আসামী গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এমরহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আরকে//