রাজশাহীতে অবিক্রিত ৪৪ হাজার গরু, ক্ষতির মুখে খামারিরা
রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:৩৮ পিএম, ২৫ জুলাই ২০২১ রবিবার
খামারে গরু নিয়ে নাটোরের এক খামারি
এবারের কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে রাজশাহী জেলায় ৩ লাখ ৮২ হাজার পশু পালন করেছিল খামারি ও সাধারণ কৃষকেরা। যার মধ্যে কোরবানী হয়েছে প্রায় ৩ লাখ ৯ হাজারটি। ফলে অবিক্রিত থেকে গেছে প্রায় ৭৩ হাজার পশু। যাতে রীতিমত আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছে এসব খামারিরা।
এবার অবশ্য ভারতীয় পশু আমদানি করা হয়নি। স্থানীয়ভাবেই চাহিদার চেয়ে বেশি পশু পালন করা হয়েছে এই জেলায়। রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহীতে এবার কোরবানীর জন্য গরু পালন হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ৬৬৬টি। তার মধ্যে কোরবানী হয়েছে ৬২ হাজার ৮৫৪টি। অবিক্রিত থেকে গেছে ৪৩ হাজার ৮১২টি গরু।
জেলায় মহিষ কোরবানী দেয়ার প্রচলন কম হলেও এবারের ঈদকে সামনে রেখে পালন হয় ২ হাজার ৯৫৬টি মহিষ। এর মধ্যে কোরবানী হয়েছে মাত্র ৩১৫টি মহিষ। তবে ছাগল বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে অনেকটাই। রাজশাহীতে প্রস্তুত থাকা প্রায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ছাগলের মধ্যে কোরবানী হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার। এছাড়া ভেড়া পালা হয়েছিল প্রায় ৩৫ হাজার। যার মধ্যে কোরবানী হয়েছে প্রায় ২০ হাজার ৬৬৩টি।
এদিকে, এবারো বিক্রি হয়নি পুঠিয়ার ৩০ মণ ওজনের ‘শান্ত বাবু’। পুঠিয়ার কান্দ্রা গ্রামের আলিমুদ্দিন গত তিন বছর ধরে পেলে-পুষে বড় করেছেন সাদা-কালো মিশ্রণের ফিজিয়ান জাতের এই ষাঁড়টি। খামারির প্রত্যাশা ছিল, এবার ১৬ লাখের অধিক হলেই শান্তবাবুকে বিক্রি করবেন। কিন্তু তা আর হয়নি।
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার আহান অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম জানান, স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতে না পেরে ৩০টি গরু ঢাকায় নিয়েছিলেন তিনি। সেখানে বিক্রি হয়েছে ১৯টি, যেগুলোর দাম তিন লাখের নিচে। আর যে ১১টি গরুর দাম তিন লাখের ওপরে ছিল, সেগুলো বিক্রি হয়নি। তাই অবিক্রিত গরুগুলো নিয়ে নিজ খামারেই ফেরত আসেন তিনি।
রাজশাহী নগরের খড়খড়ি এলাকার ওয়াফি অ্যাগ্রো ফার্মের স্বত্বাধিকারী আনোয়ার হোসেন জানান, ৫৩টি গরুর মধ্যে মাত্র ১৫টি বিক্রি করতে পেরেছেন তিনি। বড় গরুগুলোই বিক্রি করা যায়নি। তাঁর মতে, করোনা পরিস্থিতির কারণেই বড় গরুর ক্রেতা পাওয়া যায়নি।
রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইসমাইল হক বলেন, মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে কে কতটা পশু পালন করবে, এটা নির্ধারণ করে দেওয়া যায় না। তাই যে যাঁর মতো করে পশু পালন করেন।
তিনি বলেন, আমরা সরকারকে ধারণা দিয়েছি যে, স্থানীয়ভাবে পালন করা পশুতেই কোরবানীর চাহিদা মেটানো যাবে। তাই বাইরে থেকে পশু আমদানি করার প্রয়োজন পড়বে না। যে কারণে বাইরে থেকে কোনও পশু আমদানি করা হয়নি। তারপরও অবিক্রিত থেকে গেছে অনেক পশু। যাতে আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছেন খামারিরা।
এনএস//