তালেবানের হাতে ‘নিষ্ঠুরভাবে খুন’ হয়েছেন ফটোসাংবাদিক দানিশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:২৫ পিএম, ১ আগস্ট ২০২১ রবিবার
ভারতীয় ফটোসাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন নি তালেবানরা তাকে ‘নির্মমভাবে হত্যা’ করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ বিষয়ক সাময়িকি ওয়াশিংটন এক্সামিনারের এক প্রতিবেদনে সম্প্রতি এ তথ্য প্রকাশ হয়েছে।
রয়টার্সে কর্মরত সিদ্দিকি গত ১৬ জুলাই পাকিস্তান সীমান্তের সঙ্গে লাগোয়া কান্দাহার জেলার স্পিন বলডাক অঞ্চলে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী ও তালেবানদের মধ্যকার সংঘর্ষের ছবি সংগ্রহের সময় নিহত হন। মৃত্যুর দুইদিন পর তাকে নয়াদিল্লির মিলিয়া ইসলামিয়া কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছে। ২০১৮ সালে পুলিৎজার পুরস্কার জয়ী রয়টার্সের দলটিতে তিনিও ছিলেন।
ওয়াশিংটন এক্সামিনারে প্রকাশিত প্রতিবেদনটির লেখক যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উপদেষ্টা মাইকেল রুবিন বলেন, ‘সিদ্দিকির মৃত্যুর কারণ এখন পরিস্কার। তিনি সাধারন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন নি। তালেবানদের হাতে তিনি নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন।’
উল্লেখ্য, রুবিন বর্তমানে মার্কিন গবেষণা সংস্থা আমেরিকান এন্টারপ্রাইজ ইনস্টিটিউটের (এইআই) একজন আবাসিক গবেষক এবং ইরান, তুরস্ক এবং মধ্যপ্রাচ্যের সীমান্ত বিষয়ক বিশেষজ্ঞ। তালেবানদের হাতে ধরা পড়ার সময় সিদ্দিকি জীবিত ছিলেন।
ওয়াশিংটন এক্সামিনারের প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তান কর্তৃপক্ষের তথ্যানুযায়ি সংঘর্ষের সংবাদ জোগাড়ের জন্য আফগান ন্যাশনাল আর্মির সঙ্গে সিদ্দিকি স্পিন বলডাক অঞ্চলে গিয়েছিলেন। প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, ‘যখন তারা কাস্টমস পোস্টের এক মাইলের এক-তৃতীয়াংশে পৌঁছে গেল তখন একটি তালেবান হামলায় তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। কমান্ডারসহ বেশ কয়েকজন সিদ্দিকির থেকে পৃথক হয়ে যায়। সিদ্দিকির সঙ্গে তখনও তিনজন আফগান সেনা ছিলো।’
প্রতিবেদনটিতে আরো দাবি করা হয়, হামলার সময় ছুরিকাঘাতে সিদ্দিকি আহত হন। আর এ কারণে সিদ্দিক ও তার দল একটি মসজিদে আশ্রয় নেন এবং সেখানেই প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহন করেন। সাংবাদিক মসজিদে আশ্রয় নিয়েছেন এমন কথা ছড়িয়ে পড়ার পর তালেবানরা সেখানেও আক্রমন করে। স্থানীয় অনুসন্ধান অনুযায়ি, সিদ্দিকির উপস্থিতির কারণেই তালেবানরা মসজিদটিতে হামলা করেছিলো।’
প্রতিবেদনটির লেখক রুবিন দাবি করেন, তালেবনরা যখন সিদ্দিকিকে আটক করেন তখন তিনি জীবিত ছিলেন। এরপর তালেবানরা সিদ্দিকির পরিচয় শনাক্ত করেন এবং তাকে হত্যা করেন। আফগান ন্যাশনাল টিমের কমান্ডার ও সিদ্দিকির দলের বাকিরা তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিহত হন।
প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়, ‘যখন একটি বহুল প্রচারিত ছবিতে সিদ্দিকিকে শনাক্ত করা হয় সেসময় আমি অন্যান্য সূত্র থেকে আসা বেশ কিছু ছবি ও ভিডিও পর্যালোচনা করে দেখি। সেখানে দেখা যায় তালেবানরা সিদ্দিকির মাথায় আঘাত করেছে এবং বুলেট দিয়ে তার শরীরকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলেছে।’
প্রতিবেদনটিতে রুবিন জানতে চান, ‘সাংবাদিকদের কাছে মূল প্রশ্ন হচ্ছে পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয় কেন সিদ্দিকির মৃত্যুকে শুধুমাত্র একটি মর্মান্তিক দূর্ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করেছে।’
গত ১৭ জুলাই দেয়া এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়, সাংবাদিকের মৃত্যুতে তারা ‘গভীরভাবে শোক’ প্রকাশ করছে এবং তারা আফগানিস্তানের চলমান সংঘর্ষের সমাপ্তি দাবি করেন। সূত্র: দ্য প্রিন্ট
এসি