ঢাকা, শুক্রবার   ১৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১

সৌদিতে বাংলাদেশী যুবককে গলাকেটে হত্যা

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) সংবাদদতা

প্রকাশিত : ০৩:৫৩ পিএম, ৬ আগস্ট ২০২১ শুক্রবার | আপডেট: ০৪:০৬ পিএম, ৬ আগস্ট ২০২১ শুক্রবার

গাজী জাকির হোসেন

গাজী জাকির হোসেন

সৌদি আরবে নিজ রুমে গাজী জাকির হোসেন নামে (৩২) এক বাংলাদেশি যুবককে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। বুধবার (৪ আগস্ট) স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে রাজধানী রিয়াদের হাইলোজারা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত জাকির হোসেনের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের ধামাউড়া গ্রামে। তিনি হাজী কাঞ্চন গাজীর ছেলে। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ। 

এ বিষয়ে মোবাইলে কথা হয় সৌদি আরবে বসবাসরত নজরুল ইসলাম নামের এক প্রবাসীর সঙ্গে। তিনি জানান, বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজের জন্য শ্রমিক দিতেন জাকির হোসেন। জাকিরের রুমে জাকিরসহ চারজন বাংলাদেশি থাকতেন। ওইদিন ভোর ৫টায় সবাই ডিউটিতে চলে গেলেও জাকির যাননি। বন্ধু রাসেলকে নিয়ে সকাল ১১টায় কোম্পানির এক মালিকের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল তার। কথামতো রাসেল সকাল ৯টা থেকে জাকিরকে বহুবার ফোন দেন, কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি। 

জাকিরের খবর নিতে বাসায় যায় রাসেল। অনেক ডাকাডাকি করলেও তিনি দরজা খোলেননি। পরে দুই-তিন জন বাংলাদেশি প্রবাসীর সহযোগিতায় দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দেখে জাকিরের গলাকাটা রক্তাক্ত মরদেহ। পেটের নাড়িভুঁড়ি বের হয়ে আছে। তখন তারা চিৎকার করতে থাকলে আশপাশের বাংলাদেশিরাও জড়ো হন। পরে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ এসে মরদেহ নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে আশপাশের রুমের কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় সৌদি পুলিশ। 

দেশে অবস্থানরত জাকিরের বড় ভাই দুলাল গাজী জানায়, তাঁদের পরিবারের প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিল জাকির। তাঁর টাকায় সংসার চলত। জাকির বিভিন্ন কোম্পানিতে শ্রমিক দিয়ে ভালো রোজগার করতেন। জাকিরের রোজগারে ঈর্ষান্বিত হয়ে এলাকার লোকজন পরিকল্পিতভাবে জাকিরকে খুন করেছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর ভাইয়ের খুনিদের চিহ্নিত করতে সৌদি আরবে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি। 

জাকির হোসেনের বাবা হাজী কাঞ্চন মিয়াঁ কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, "আমাদের সবশেষ। ছেলেটাকে বিয়ে করাইনি। ১৩ বছর যাবৎ বিদেশ করছে। জাকিরের মা অসুস্থ। কিছুদিনের মধ্যেই মাকে দেখতে আসার কথা ছিল। আমার বাবা এখন লাশ হয়ে দেশে আসবে।" এই বলেই আবার কান্না ভেঙে পড়েন হাজী কাঞ্চন মিয়াঁ।

এনএস//