হিলিতে তিন দিনের ব্যবধানে পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ৩ টাকা
হিলি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৪:৪৪ পিএম, ৬ আগস্ট ২০২১ শুক্রবার
লোকশানের আশংকায় পেয়াজের আমদানি কমিয়ে দেওয়ায় দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে কমেছে পেয়াজের আমদানি। এতে করে দেশের বাজারে পণ্যটির চাহীদার তুলনায় সরবরাহ কমায় বেশ কিছুদিন কমতির দিকে থাকার পরে আবারো মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে পেয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ২/৩টাকা। এদিকে পেয়াজের দাম বাড়তি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা পাইকাররা।
হিলি স্থলবন্দর সুত্রে জানা গেছে, বন্দর দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই ইন্দোর ও নাসিক জাতের পেয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পুর্বে খানিকটা বাড়তি পেয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে আমদানির পরিমান কিছুটা কমেছে। বন্দরে আমদানিকৃত ইন্দোর জাতের পেয়াজ পাইকারীতে বিক্রি হচ্ছে ২৮টাকা কেজি দরে যা তিন দিন আগেও বিক্রি হয়েছিল ২৫টাকা কেজি দরে। আর নাসিক জাতের পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৩টাকা কেজি দরে যা তিন দিন আগে বিক্রি হয়েছিল ৩১টাকা কেজি দরে।
হিলি স্থলবন্দরে পেয়াজ কিনতে আসা ইয়াকুব আলী বলেন, হিলি স্থলবন্দর থেকে পেয়াজ কিনে দেশের বিভিন্ন মোকামে তা সরবরাহ করে থাকি। কিন্তু পেয়াজের দাম বেশ কিছুদিন ধরে একই রকম থাকার পর আবারো বাড়তে শুরু করেছে এতে করে পেয়াজ কিনতে ভয় হচ্ছে। দুদিন আগে যে দাম পেয়াজ ক্রয় করে মোকামে পাঠিয়েছি এখন আবার বন্দরে পেয়াজ কিনতে এসে দেখি পেয়াজের দাম কেজি প্রতি ২/৩টাকা করে বাড়ছে। এখন আমরা যে দামে মোকামে বিক্রি করেছি এখন সেই দামে বন্দরে কিনতে হচ্ছে যার কারনে কি দামে কিনবো আর কিদামে বিক্রি করবো যার কারনে পেয়াজ কিনতে ভয় পাচ্ছে। বাড়তি দামে পেয়াজ ক্রয় করে পাঠালে আর দাম যদি কমে যায় তাহলে তো পুজি হারিয়ে যাবে তাই দামটা যদি স্থিতিশীল থাকে তাহলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে।
হিলি স্থলবন্দরের পেয়াজ ব্যবসায়ী রবিউল ইসলাম বলেন, প্রতিবছর কোরবানীর ঈদে দেশের বাজারে পেয়াজের বাড়তি চাহীদাকে ঘিরে দাম বাড়তির দিকে থাকে। কিন্তু এবারে বন্দর দিয়ে চাহীদার তুলনায় বাড়তি পেয়াজ আমদানি হওয়ার ফলে দাম অনেকটাই স্থিতিশীল ছিলো ও কম ছিলো। ঈদের পরেও বন্দর দিয়ে ২৫/৩০ট্রাক পেয়াজ আমদানি অব্যাহত থাকায় পেয়াজের সেই কম দাম অব্যাহত ছিল। তবে পেয়াজের মান খারাপ হওয়ায় ও দেশে চলমান লকডাউনের কারনে বেচাকেনা খারাপ হওয়ার কারনে পেয়াজের চাহীদা কমার কারনে পেয়াজের দাম কমে ২৫টাকায় নেমে এসেছিল। এতে করে পেয়াজ আমদানি করে লোকশান হওয়ায় বন্দর দিয়ে পেয়াজের আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন আমদানিকারকরা। এতে করে আগে বন্দর দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ ট্রাক পেয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা কমে ১০ থেকে ১৫ট্রাক করে পেয়াজ আমদানি হচ্ছে। যার কারনে দেশের বাজারে পণ্যটির সরবরাহ কমায় দাম কিছুটা বাড়তির দিকে রয়েছে। তবে আমদানি স্বাভাবিক হলে দাম কমে আসবে বলেও জানান তিনি। আসলে পেয়াজ কাচামাল এর দাম নির্ভর করে আমদানির উপর আমদানি কম হলে দাম বাড়বে আর আমদানি বাড়লে দাম কমবে এটাই স্বাভাবিক।
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, বন্দর দিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই পেয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। তবে পেয়াজের আমদানি উঠানামা করছে কখনো বাড়ছে আবার কখনো কমছে। গত সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন ২৫/৩০ট্রাক করে পেয়াজ আমদানি হলেও বর্তমানে তা কমে ১০/১৫ট্রাক করে পেয়াজ আমদানি হচ্ছে। বন্দর দিয়ে বুধবার যেখানে ২৪ট্রাকে ৭০২টন পেয়াজ আমদানি হয়েছিল বৃহস্পতিবার তা কমে ১০ট্রাকে ২৭৮টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে। এভাবে গত ৬দিনে বন্দর দিয়ে ১৩১টি ট্রাকে ৩ হাজার ৭৪১টন পেয়াজ আমদানি হয়েছে। আর পেয়াজ যেহেতু কাচামাল এটি আমদানি হওয়ার সাথে সাথে কাস্টমসের পরিক্ষন শুল্কায়ন, আরোপিত শুল্কআদায় শেষে বন্দরের কার্যক্রম দ্রুত সম্পুর্ন করে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সিএন্ডএফ এজেন্ট এর নিকট বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
আরকে//