কার্যকর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও দীর্ঘজীবনের রহস্য
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:০৮ পিএম, ৮ আগস্ট ২০২১ রবিবার
বিজ্ঞান যখন আজকের মতো ব্যুৎপত্তি লাভ করে নি, অর্থাৎ সেই সুদূর অতীতে কেউ অসুস্থ হলে মনে করা হতো—এটা নিশ্চয়ই তার কোনো অন্যায় বা পাপের ফল অথবা তার গায়ে কোনো মন্দ বাতাস লেগেছে কিংবা হয়তো দেবতার অভিশাপ লেগেছে। কিন্তু বিজ্ঞানের অভাবনীয় অগ্রগতির ফলে এখন অনেক দুরারোগ্য রোগের কারণ আমরা জানতে পারছি। কিন্তু এরপরও অনেক রোগ আছে, যার ব্যাখ্যা বিজ্ঞান এখনো দিতে পারে নি। টাইপ-১ ডায়াবেটিসের কারণ কী? কেন এত ক্যান্সার? অ্যাজমা বা মাইগ্রেনের মূল কারণই-বা কী? এভাবে আরো অনেক রোগ আছে, যার কারণ চিকিৎসাবিজ্ঞান আজও সুনির্দিষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে নি।
শুধু কি তা-ই? প্রায় প্রতিমুহূর্তে আমাদের শরীরে কত ধরনের জীবাণু প্রবেশ করছে, কিন্তু তাই বলে কি আমরা প্রতিদিন অসুস্থ হচ্ছি? আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম আমাদেরকে রোগগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষা করছে। অর্থাৎ আমাদের সুস্থতার মূল শক্তিটি হলো একটি কার্যকর রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
তাই শরীরকে সুস্থ ও রোগমুক্ত রাখতে ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করা জরুরি। এর জন্যে প্রয়োজন সঠিক জীবনদৃষ্টি ও সুস্থ জীবনাচার।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাই আমাদের সুস্থ রাখে
বাইরের ও ভেতরের শত্রু থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্যে প্রতিটি দেশেরই নিজস্ব প্রতিরক্ষা বা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে। আমাদের দেহ-সাম্রাজ্যকে রক্ষা করার জন্যেও স্রষ্টা তেমনি একটি সুসংহত ও কার্যকর নিরাপত্তা ব্যবস্থা দিয়ে মানুষকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আর সেটাই হচ্ছে ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।
রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেমের মূল উপাদানগুলো হলো থাইমাস, লিম্ফনোড, প্লীহা বা স্প্লীন, অস্থিমজ্জা বা বোন ম্যারো, এন্টিবডি, পরিপাকতন্ত্রের পেয়ার্স প্যাচ এবং শ্বেতকণিকা। শ্বেতকণিকাগুলোই সরাসরি প্রতিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিয়ে বিভিন্ন রোগজীবাণুর হাত থেকে আমাদের রক্ষা করছে। যে-সব শ্বেতকণিকা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় অংশ নেয় সেগুলো হলো নিউট্রোফিল, মনোসাইট, ম্যাক্রোফেজ, ন্যাচারাল কিলার সেল, বি-লিম্ফোসাইট ও টি-লিম্ফোসাইট। শরীরে কোনো জীবাণু প্রবেশ করার সাথে সাথে এরা তাকে বিভিন্ন উপায়ে ধ্বংস করার উদ্যোগ নেয়।
লেখাটি ডা. মনিরুজ্জামান ও ডা. আতাউর রহমান এর লেখা এনজিওপ্লাস্টি ও বাইপাস সার্জারি ছাড়াই ‘হৃদরোগ নিরাময় ও প্রতিরোধ’ শীর্ষক বই থেকে নেয়া।
আরকে//