রূপগঞ্জে আগুন: তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৭:৪৩ এএম, ৯ আগস্ট ২০২১ সোমবার | আপডেট: ০৭:৪৫ এএম, ৯ আগস্ট ২০২১ সোমবার
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাশেম ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানী (সেজান জুস) কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জেলা প্রশাসন গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে কারখানার মালিকের অনিয়মসহ সরকারি সংস্থার গাফিলতির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত প্রতিবেদনে ২০টি সুপারিশ করা হয়েছে।
রোববার (৮ আগস্ট) রাত সাড়ে আটটার দিতে জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম বেপারী ৫ আগস্ট রাতে ৪৪ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্ত প্রতিবেদনে কারখানার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গাফিলতির বিষয়টি উল্লেখ্য রয়েছে। কলকারখানা অধিদপ্তরের গাফিলতির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবগত করা হবে।
মোস্তাইন বিল্লাহ বলেন, ওই কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের সদন ছিলো না, বিল্ডিং কোর্ড ছিলো না, ফায়ার সার্ভিসের এনওসি পাওয়া যায়নি। সেই সাথে ফায়ার সেফটি ছিলো না- এসব বিষয়সহ আরও কয়েকটি বিষয়ে কারখানার মালিকের অনিয়ম পাওয়া গেছে তদন্তে।
জেলা প্রশাসক বলেন, প্রতিটি ডিপার্টমেন্ট যদি ঠিকঠাকভাবে মনিটরিং করতো, তাহলে সেখানে শিশু শ্রম থাকতো না, বিল্ডিং কোর্ডের অসঙ্গতি থাকতো না, ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা পর্যাপ্ত থাকতো। তাদের মনিটরিংয়ের কমতি আছে। যেহেতু তারা অন্য মিনিস্ট্রিতে কাজ করে, সেহেতু আমরা এই বিষয়গুলো আমরা কনসার্ন মিনিস্ট্রিকে বলবো। আমরা এগুলো কেবিনেট, লেবার মিনিস্ট্রি এবং কনসার্ন মিনিস্ট্রিতে পাঠাবো। তারা এগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।
তিনি আরও জানান, তদন্ত প্রতিবেদনে ২০টি সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের প্রথম সুপারিশে বলা হয়েছে যে, সেখানে শিশু শ্রম ছিলো। শিশু শ্রম যাতে এ ধরনের কারখানাগুলোতে বন্ধ করা হয়। দ্বিতীয়ত, যারা মারা গেছে তাদের শ্রম আইন অনুসারে তাদেরকে ২ লাখ টাকা এবং যারা আহত হয়েছে তাদের আড়াই লাভ টাকা করে যেন মালিক পক্ষ থেকে প্রদান করা হয়। বিল্ডিং কোড মানা, অগ্নি নিবার্পন যন্ত্র আরও বেশি রাখা এবং প্রশিক্ষিত অগ্নিনিবার্পন দল কারখানায় রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।
ডিসি বলেন, নীচ তলার সেন্ট্রাল রুমে শর্ট সার্কিটের মাধ্যমে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই রূপগঞ্জের হাসেম ফুডস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ জনের মৃত্যু হয়। ইতিমধ্যে ৪৫ জনের লাশ পরিচয় শনাক্ত করার পর নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ১০ জুলাই কারখানা মালিক আবুল হাসেম, তাঁর চার ছেলেসহ আটজনের বিরুদ্ধে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই দিনই আবুল হাসেম, তাঁর চার ছেলেসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সম্প্রতি হাসেম ও তাঁর চার ছেলে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গত ১৫ জুলাই মামলার তদন্তভার সিআইডির কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এএইচ/